মস্তিষ্কের মৃত্যুর পরেও কী মানব মস্তিষ্কের কোন অংশ কী জীবিত থাকবে? কোয়ান্টাম সুইসাইড আর অমরত্বের ধারণা এবং ম্যাক্স ট্যাগ মার্কের মাল্টি ইউনিভার্স টেস্টিং নিয়ে প্রিজম এবং রিসাসের আলোচনা!
প্রিজমঃ তোমাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম মেটা ইউনিভার্স থিওরিটি প্রমাণিত কী না ?যেমন- কোয়ান্টাম ম্যানি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশন।এটা কী আসলেই প্রমাণ হয়েছে এখনো?আবার বায়োলজিস্ট বেরিং এর মতো কিছু জীব বিজ্ঞানী বলছে পরকালের অস্তিত্বের বায়োলজিক্যাল ভিত্তির কথা।তিনি মনে করছেন, পরকাল সাংস্কৃতিক বা সামাজিক সত্য যে শুধু তাই নয় এর রয়েছে একটি নিউরোলজিক্যাল ভিত্তি।ইউনিভার্সিটি অব আরাকানসের সাইকোলজিস্টরা বলছেন পরকালে বিশ্বাস কালচারাল বিলিভ থেকে অনেক বেশি কিছু।বিশ্বের প্রায় সকল সংস্কৃতিতেই পরকালের বিশ্বাস প্রচলিত, ফিজিক্সের সুত্র গুলি যেমন পৃথিবীর সকল স্থানে একরকম ঠিক তেমনি আস্তিক,নাস্তিক এবং মুক্তমনা সকলের মাঝেই সাব-কনসাসলি পরকালের প্রতি এক ধরনের বিশ্বাস কাজ করে!আমেরিকার প্রায় ৮২ পার্সেন্ট মানুষ বিশ্বাস করে যে মৃত্যুর পর কোনো না কোনো ভাবে মানুষের চেতনা থেকে যাবে![ University of Arkansas,READING THE MINDS OF THE DEAD: AFTERLIFE BELIEFS MAY HAVE SOCIAL, BIOLOGICAL BASIS।]
যাইহোক!রিসাস!তুমি নিশ্চয় শুনেছো, ‘The Journal of Cognition and Culture’এর সাইকোলজির এসিস্টেন্ট প্রফেসরের কথা, জেসি বেরিং, যার কথা কিছুক্ষণ পূর্বেই বলেছি।যিনি পরকালে বিশ্বসের উপর একটি গবেষণা চালিয়েছেন। ‘’Belief In Afterlife May Have Biological Basis’’ শিরোনামে। জুলিয়া এসেন্টি একটি চমৎকার আর্টিকেল প্রকাশ করেছেন এ নিয়ে। তুমি চাইলে একবার পড়ে নিতে পারো!তো তিনি বলেছিলেন,Even individuals who claim to believe that all consciousness ceases at death were inclined to say that certain psychological states persist।জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুয়ায়ুন আহাম্মদও এমনটা মনে করতেন বলে আমার মনে হয়!যার মানে হলো, এমনকি যারা বিশ্বাস করে যে মৃত্যুর পরে কোনো চেতনার অস্তিত্বই থাকবেনা তারাও মনে করে কিছু না কিছু সাইকোলজিক্যাল স্টেট মৃত্যুর পরেও থেকে যাবে।এর থেকে কী বুঝা যাচ্ছে?আমাদের মস্তিষ্কের, নিউরাল ফাংশন এমন ভাবেই বিবর্তিত হয়েছে যে জন্যে আমরা চেতনাহীন জীবনের কথা চিন্তা করতে পারিনা বা চিন্তা করতে আমাদের কষ্ট হয়।কারণ চিন্তার সৃষ্টি হচ্ছে,চেতনা থেকে, আর তাই অবশ্যই কোনো চিন্তার পক্ষে চেতনাহীন জগতের কথা চিন্তা করা সম্ভব নয়, তাই নয় কী?জেসি বেরিং এ থেকে ডিসিশনে এসেছিলেন যে, পরকালে বিশ্বাস প্রাকৃতিক এবং সার্বজনীন একটি ব্যাপার, এটি বায়োলজিক্যাল এবং তিনি এর নাম রেখেছেন ‘’ Simulation Constraint Hypothesis of Death Representation’’।জেসি বেরিং বলেছেন, “It comes down to the fact that we’re unable to imagine the absence of certain psychological states,”।তিনি আরো বলেছেন, মানুষ বিশ্বাস করে মৃত্যুর পর তারা আর খেতে পারবেনা,পড়তে পারবেনা, তাদের ব্রেন কাজ করা বন্ধ করে দেবে কিন্তু তারা এটা কিছুতেই চিন্তা করতে পারছেনা যে ব্রেন স্টপ হয়ে গেলে চিন্তাও স্টপ হয়ে যাবে!এর মানে কী ব্যাপারটা এরকম হয়ে গেলো না যে, চিন্তার পক্ষে কখনো চিন্তার অস্তিত্বহীনতাকে চিন্তা করা সম্ভব নয়??এটা কী আমাদের একেবারে, নিউরোলজিক্যাল লিমিট নয়??বিবর্তন কী নিজেই আমাদের পরকালে বিশ্বাস করতে ফোর্স করছে না তো? এটা আমার সংশয়, আমাকে ধার্মিক বলে মর্জাদা হানি করিওনা ? যাইহোক, আমি আর বিস্তারিত যাচ্ছিনা, তবে এটা সত্য জেসি বেরিং মনে করতেন না যে, পরকালে বিশ্বাস আমাদের মধ্যে জেনেটিক্যালি ফিক্স করা হয়েছে বরং তিনি মনে করতেন এটি এভোলিউশনালি আমাদের মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ধারার মধ্যে প্রবেশ করেছে এবং এ জন্যেই আস্তিক,নাস্তিক এবং মুক্তমনা সকলের মাঝেই পরকালের বিশ্বাস কমন!আমার প্রশ্ন হচ্ছে তোমার কাছে, কোয়ান্টাম ম্যানিওয়ার্ল্ড ইন্ট্রারপ্রিটেশনের সাথে পরকালের এ এভোলিউশনারী সাইকোলজির কী কোনো কানেকশন থাকতে পারে?আমাকে ক্ষমা করবে, আমি আসলে প্রশ্নটা তোমাকে এভাবে করতে চাইনি...
রিসাসঃতোমার প্রশ্নের মাঝে আমার অজ্ঞনতার প্রতি সহানুভূতি ছিলো, আর তাই আমি তোমার সাথে কিছু কথা বলার সাহস সঞ্চয় করতে পারছি।প্রিজম!আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটি ব্যাপার আছে আর সেটা হলো তারা প্রশ্ন করে ঠিকই কিন্তু সে প্রশ্নের মধ্যে বিনয় বা সহানুভূতি থাকেনা।আমি এমন অনেক প্রশ্নের সম্মুখ্যীন হয়েছি যে প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে হয়েছে আমাকে অসম্মানবোধ আর চাপের মধ্যে থেকে!যাইহোক রিডার ডাইজেস্ট ওয়েভসাইটে টিমথি আর্ডেন ‘’Does answer to life after death lie in quantum physics’’ শিরোনামে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেছেন যেখানে এওয়ার্ড প্রাপ্ত রাইটার এবং একইসাথে একসময়কার একজন সফল বিজ্ঞানী ভাদিন বেবেনকোর সাম্প্রতিক সায়েন্স ফিকশন নিয়ে অনবদ্য একটি আলোচনা করা হয়েছে।যারা সায়েন্স ফিকশন ভালোবাসেন তারা অবশ্যই ভাদিমের নাম খুব ভালোভাবে জানবেন।আর্থার সি ক্লার্ক এবং আইস্যাক অসিমভের পর বেবেঙ্কোরই সাইন্স ফিকশনের জগতে বর্তমানে সবচেয়ে প্রভাবশালী লেখকদের একজন!সাম্প্রতিক তিনি যে নোবেলটি লিখেছেন তার নাম ‘’The Place of Quarantine’’ এবং হয়তোবা কিছুদিন পর তোমরা তার আরো একটি উপন্যাস পাবে ‘’Cogito Man’’।দ্যা প্লেস অব কোয়ারেন্টিনে ভাদিম বিবেঙ্কো বলেছিলেন, মানব চেতনা মানুষের মাথার খুলির ভেতরে সীমাবদ্ধ থাকার সম্ভাবনা হয়তোবা নেই, এটি আমাদের মস্তিষ্কের বাহিরেও লোকেট করতে পারে এমনকি মহাবিশ্বেরও বাহিরে, এটি এতটাই সীমাহীন যে একে ফিজিক্সের সুত্র দিয়ে এক্সপ্লেইন করাও সম্ভব নয়!তুমি জানো, সায়েন্স ফিকশনে আমরা আমাদের বৈজ্ঞানিক চিন্তার সম্ভাবনাগুলি প্রকাশ করি যা তিনিও করেছেন, কিন্তু এটি নতুন নয় কারণ ইতমধ্যে দিপক চোপড়া,রবার্ট লাঞ্জা,হিউ এভারেট,শ্রডিঙ্গার,ম্যাক্স প্লাঙ্ক মানব চেতনার উপর কাজ করেছেন এবং সাম্প্রতিক রোজার পেনরোজও বলছেন যে, মানুষের মস্তিষ্কে কোয়ান্টাম সুপারপজিশন কাজ করার সম্ভাবনা আছে এবং বিজ্ঞানী স্টাফও বলছেন মানুষের সাইন্যাপ্স এতটাই সুক্ষ্ম যেখানে কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স সক্রিয় হয়ে উঠে আবার একইসাথে রোজার পেনরোজ আবারও বলেছেন, মানুষের চেতনাকে আমাদের প্রচলিত ফিজিক্সের সুত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছেনা কিন্তু তার মানে এই নয় যে একে ফিজিক্সের সুত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবেনা,তিনি মনে করতেন, আরো উচ্চমাত্রিক কোনো ফিজিক্স মানব চেতনার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে!তার এ ধারণাটিকে যারা সমালোচনা করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন বিজ্ঞানী লরেন্স ক্রাউস যিনি মাল্টি ইউনিভার্স তত্বের একজন জোরদার সমালোচক এবং যিনি একসময় বারাক ওভামাকে তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় পরামর্শক হিসেবে ছিলেন, তিনি বিবর্তনবাদের একজন অন্যতম সমর্থক এবং স্ট্রিং তত্বের গোরতর বিরোধী। তুমি আমাকে প্রশ্ন করেছো যে পরকালের অস্তিত্বের সাথে মানুষের মস্তিষ্কের বায়োলজিক্যাল রিলেশন আছে কী না!আর আমি সে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্যেই তোমাকে বিখ্যাত সায়েন্স ফিকশন রাইটার ভাদিম বিবেঙ্কোর জগতে নিয়ে এসেছি।যেহেতু আমি একেবারেই অজ্ঞ এবং নির্বোধ তাই তোমাকে আমি সেসব মানুষদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি যাদের কাছে তুমি তোমার প্রশ্নের উত্তর পেতে পারো।আমি যদি আমার নিজস্ব বক্তব্য প্রকাশ করি তবে সেক্ষেত্রে আমাকে গাণিতিক প্রমাণ দেখাতে হবে!এবং তুমি জানো যে আমি গণিতের উপর কোনো পড়াশুনা করিনি এবং আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই বললেই চলে,আমি মহাবিশ্বকে বুঝার চেষ্টা করছি এবং অন্যরা যাতে আগ্রহী হয় সে জন্যে তাদের মোটিভেট করছি এবং তবুও অনেক সময় আমার পড়াশুনা নিয়ে সভ্যরা প্রশ্ন তুলছেন,যদিও আমি সামান্য একজন বিজ্ঞানের সমর্থক মাত্র, আমার সীমাবদ্ধতার জন্যে আমি লজ্জিত।যাইহোক, ভাদিম রাশিয়ার মস্কো ইনস্টিউট অব ফিজিক্স এন্ড ট্যাকনোলজি থেকে ডক্টারাল ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং সাহিত্যের জগতে ফিরে আসার পূর্বে তিনি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এবং মাইক্রোবায়োলজির উপর কাজ করেছেন এবং সেটাই ছিলো তার ক্যারিয়ার।ভাদিমের থার্ড নোবেল যার নাম কী না ‘’SEMMANT’’ এটি ন্যাশন্যাল ইন্ডি এক্সিলেন্সি এওয়ার্ড অর্জন করেছিলো। তার প্রথম দুটি গ্রন্থ ‘’Black Pelican’’ এবং ‘’A and Simple Soul’’ ন্যাশনাল বেস্ট সেলার এবং বেস্ট বুক এওয়ার্ড পেয়েছিলো।যাইহোক, কোয়ারেন্টিন উপন্যাসটি একজন বিজ্ঞানীকে নিয়ে লিখা যিনি আকষ্মিক একদিন জাগ্রত হওয়ার পর তার যৌক্তিক জগত প্রশ্নবিদ্ধ হলো, তিনি বিচলিত এবং আতঙ্কিত হয়ে উঠলেন, একটি রহস্যজনক স্থানে যার নাম কোয়ারেন্টিন।তিনি খুব শীঘ্রই বিষ্ময়করভাবে জানতে পারলেন তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন!অবশেষে তিনি তার রুমমেট এবং এ আই এর সহযোগীতায় তার পৃথিবীর জীবনকে স্মরণ করতে পারলেন।তিনি আরো স্মরণ করতে পারলেন, পৃথিবীতে থাকাকালীন তিনি কোয়ান্টাম থিওরি অফ দ্য হিউম্যান মাইন্ডের উপর কাজ করেছেন এবং প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন যে কনসাসনেস মৃত্যুর পরেও স্বাধীনভাবে দেহের বাহিরে থাকতে পারে! ভাদিম বোবেঙ্কো তার উপন্যাসে কোয়ান্টাম মডেল অব ব্রেন নামক বাস্তব একটি থিওরি আলোচনা করেছিলেন যে থিওরিটি প্রতিষ্ঠা করার জন্যে বহু বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন হিরোমি উমেজাওয়া, জিওসেপি ভিটিয়েলো, ওয়াল্টার ফ্রিম্যান এবং আরো অনেকেই...। ভাদিমির উপন্যাসের গুরুত্বপূর্ণ আইডিয়াটি ছিলো, আমাদের মস্তিষ্কের মেমরি এবং ইন্টিলিজেন্ট দুটি ম্য্যাকানিজমে তৈরি হতে পারে। এটি শুধুমাত্র আমাদের মস্তিষ্কের নিউরন সেলের সাথেই সম্পৃক্ত নয়, বিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এটা জানা গেছে যে আমাদের স্মরণ এবং চিন্তা নিউরো-কর্টেক্সজুড়ে একইসময় এবং একইসাথে সংঘঠিত হয় যদিও আমাদের নিউরন সেল গুলিকে একে অপরের সাথে কমিউনিকেশন করার জন্যে সময় দেয়া হয়।যা থেকে ধারণা করা যায় কালেক্টিভ কোয়ান্টাম ডায়নামিক্স আমাদের মস্তিষ্কের চেতনা বা মন তৈরির সাথে জড়িত! যদি এটি সত্যি হয় তবে যে এনার্জি থেকে আমাদের মন সৃষ্টি হয় সে শক্তি মৃত্যুর পরেও অস্তিত্বশীল থাকতে পারে বলে ভাদিম মনে করেন!ভাদিম, নন-লোকালিটি এবং মেমরির স্থায়িত্বকে প্রাকৃতিক ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।তিনি বলেন, কোয়ান্টাম মাইক্রোওয়েভের দোদুল্যমানতা সমস্ত মস্তিষ্কে সমানভাবে ডিস্ট্রিবিউট করা থাকে, এবং এ জন্যে মস্তিষ্কের একটি নিউরাল পয়েন্ট থেকে অন্য আর একটি পয়েন্টে ইনফরমেশন ট্রাভেল করতে সময়ের কোনো প্রয়োজন হয়না!প্রত্যেকটি পয়েন্ট দূরত্বকে উপেক্ষা করেই ইনস্ট্যান্টলি ইনফরমেশন পেতে পারে।দ্বিতীয়ত, এ যে কোয়ান্টাম দোদুল্যমানতা এটি সংঘঠিত হতে একেবারে গ্রাউন্ড লেবেল থেকে কোনো শক্তিরও প্রয়োজন হয়না!ভাদিম মস্তিষ্কে যে অংশ মেমরির জন্যে দায়ী সেটিকে একটি Single Whole হিসেবে দেখেছেন!এবং তিনি বলেন, ক্লাসিক্যাল মাইক্রো-ওয়েভের মতো কোয়ান্টাম মাইক্রোওয়েভগুলি মৃত্যুবরণ করেনা, এগুলি মস্তিষ্কে দীর্ঘকাল থেকে যায়!!তবে একটি ব্যাপারে ভাদিম সতর্ক করেছিলেন যদি তার নিজের ভাষায় বলি তবে তিনি বলেছেন,
it’s important to point out that the quantum model of the brain is based on the mathematical formalism of quantum field theory and has nothing to do with popular yet scientifically dubious ‘theories’ of quantum consciousness which rely on quantum entanglement and other her quantum mechanical phenomena. Quantum mechanics and quantum field theory are completely different things, even though they share the word ‘quantum’. Only the latter is able to predict the macroscopic features of our brain as a whole.
প্রিজমঃ রিসাস!তার মানে আমরা জানলাম যে আমাদের মস্তিষ্ক একটি সিঙ্গেল হোল এবং আমাদের স্মৃতি এবং চিন্তা একইসাথে এবং একইসময় আমাদের মস্তিষ্কে কাজ করছে যার সাথে কালেক্টিভ কোয়ান্টাম ডায়নামিক্স জড়িত যেটা আমাদের চেতনা তৈরি করে এবং এই কনসেপ্টটি কোয়ান্টাম এন্ট্যাংগেলমেন্ট বা অন্যান্য ব্যাপারগুলির সাথে সম্পর্ক রাখেনা যেগুলির ভিত্তিতে চেতনার মডেল তৈরির জন্যে অনেক বিজ্ঞানী কাজ করছেন!একেবারে বিজ্ঞানের সলিড গ্রাউন্ড থেকেই ভাদিম এক্সপ্লেইন করেছেন যে, আমাদের মস্তিষ্কের কোয়ান্টাম মাইক্রোওয়েভস গুলি মৃত্যুর পরেও থেকে যেতে পারে অথবা অন্যভাবে যদি বলি ক্লাসিক্যাল ওয়েভের মতো এই মাইক্রো-ওয়েভগুলির মৃত্যু হয়না আর এ জন্যেই কোয়ারেন্টিন উপন্যাসের সেই বিজ্ঞানীটি মৃত্যুর পরেও ঠিক আগের মতোই সবকিছু অনুভব করতে পারছিলো, রহস্যময় কোয়ারেন্টিন দীপে, যেহেতু তার মৃত্যু হলেও তার মস্তিষ্কের মেমরির মৃত্যু হয়নি!এটাই তো বলতে চাইছিলে?
রিসাসঃ হ্যা প্রিজম আমি তোমাকে সিদ্ধান্তে উপনিত হতে সাহায্য করছি আমি তোমাকে ব্যাক্তিগত কোনো মতামত দিচ্ছিনা।তুমি আমাকে বলেছিলে যে জেসি বেরিং এর এক্সপেরিমেন্টের কথা, যেখানে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন, আমাদের মস্তিষ্ক আস্তিক বা নাস্তিক যাই হয়, তবুও তারা সাব-কনসাসলি বিশ্বাস করে মৃত্যুর পরে মস্তিষ্কের কিছু না কিছু সাইকোলজিক্যাল স্টেট বেঁচে থাকবে,এমনকি তুমি এটাও জানো নিশ্চয় জেসি বেরিং যখন নাস্তিক এবং সংশয়বাদীদের প্রশ্ন করেছিলেন যে মৃত্যুর পর তাদের চেতনার মৃত্যু হবে কীনা তখন তারা উত্তর দেয়ার জন্যে আস্তিকদের তুলনায় বেশি সময় নিয়েছিলো!এখান থেকে তুমি কী বুঝেছো?
প্রিজমঃ হ্যা এখান থেকে আমি বুঝতে পারছি যে, আমাদের ব্রেন এ ব্যাপারে সময় নিতে সময় নিচ্ছে, আর সময় নেয়ার মানে হলো বায়োলজিক্যালি ব্রেনের কিছু রেস্ট্রিকশন আছে, আর এই রেস্ট্রিকশনের কারণই হয়তো আমাদের মস্তিষ্কের এই কালেক্টিভ কোয়ান্টাম ডায়নামিক্স?যেটাকে আমাদের ব্রেন অস্বীকার করতে পারছেনা?ঠিক বলেছি তো!এটাই তবে সেই পরকালের বায়োলজি?যাইহোক, আমরা এবার মূল আলোচ্য বিষয়ে আসি, আমরা তো বুঝতে পারলাম এতক্ষণের দীর্ঘ আলোচনা থেকে যে কেনো আমাদের মস্তিষ্কে পরকাল সম্পর্কে একপ্রকার বিশ্বাস কাজ করে অথবা কেনো আমাদের চিন্তা চিন্তা করতে পারেনা চিন্তাহীন চেতনার কথা!কিন্তু তুমি আমাকে বলো, যে ফিজিক্স আসলে কী এখনো পরকাল সম্পর্কে কোনোকিছু বলেছে?এই যে অনেকে সাম্প্রদিক ম্যানি ওয়ার্ল্ড থিওরিকে পরকালের অস্তিত্বের সাপেক্ষে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করছে!পরকাল কী কোয়ান্টাম মাইক্রো-ওয়েভ থেকে বেশি কিছু?
রিসাসঃ হ্যা হয়তোবা, বেশি কিছু হতে পারে, কিন্তু আমার সংশয় আছে কারণ আমি এখন বিজ্ঞানী আমি পরকালে অস্তিত্বের প্রমাণকারী নই, তাই এটি কে বেশি কিছু ভাবার কোন তাড়া আমার অন্তত নেই...
প্রিজমঃকিন্তু আমরা তো এর একটি সংযমী মূল্যায়ন করতে পারি?তাই নয় কী?তোমার ভার্চুয়াল ব্যাংস্পেস গ্রন্থে আমি দেখেছিলাম, যে তুমি বলেছিলে, আমাদের মস্তিষ্কের নিউরন সেল গুলি সুপারপজিশনে থাকে আর তখন তারা নির্দিষ্ট কোনো স্পেস-টাইমে লোকেটেড নয়, তাদের লোকেশন ইনফিনিটি আর তাই যখন একজন পর্যবেক্ষক একটি সুপারপজিশনাল পার্টিকেলকে পর্যবেক্ষণ করে তখন সে নিজেও সুপারপজিশনে থাকে!যাক, আমি যাচ্ছিনা সেই সুকঠিন ব্রেন যুদ্ধে!তোমার গ্রন্থ আলোচনা করার মতো শক্তি আমার এখন আপাতত নেই!
আমাকে তুমি বলো, মাল্টি ইউনিভার্স বা ম্যানি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেনশন কী প্রমাণিত?সেটা কে কিভাবে প্রমাণ করা যায়?আর এর সাথে ভাদিমের সায়েন্স ফিকশনের সেই বিজ্ঞানীর কোনো সম্পর্ক আছে কী না?
রিসাসঃ জিজিমোডো নামক একটি ওয়েভ সাইট আছে যার স্লোগান হলো ‘’আমরা ফিউচার থেকে এসেছি’’।আমি তোমাকে পরে এ ওয়েভসাইটের লিংক পাঠাবো।২০১২ সালের ৩ রা সেপ্টেম্বর ‘’Alasdair Wilkins’ নামক একজন গবেষক সেই ওয়েভসাইটটিতে Quantum Suicide: How to Prove the Multiverse Exists, in the Most Violent Way Possible শীর্ষক একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেন।
যেখানে দেখানো হয়েছে কিভাবে বিজ্ঞানী ম্যাক্স ট্যাগমার্ক কোয়ান্টাম সুইসাইড থট এক্সপেরিমেন্ট দ্বারা মাল্টি ইউনিভার্সের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন এবং তুমি যদি হিউ-এভারেটের জীবনীগ্রন্থ পড়ো তবে তুমি দেখবে বিজ্ঞানী হিউ-এভারেট তার মৃত্যুর পূর্বে বলে গেছেন, সুপারপজিশনাল মেটা ইউনিভার্স থিওরি দ্বারা তিনি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে তিনি অমর, তার কোনো মৃত্যু নেই!তুমি উইকিপিডিয়ায় হিউ এভারেটের জীবনি অনুসন্ধান করলে এ ব্যাপারে ইনফরমেশন পাবে।কিন্তু যেহেতু তুমি আমাকে প্রশ্ন করেছো মাল্টি ইউনিভার্সের সত্যতার প্রমাণ নিয়ে সেক্ষেত্রে আমি তোমার সাথে কোয়ান্টাম সুইসাইড থট এক্সপেরিমেন্টটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে পারি!যদিও আমি আলোচনায় অদক্ষ এবং অহেতুক জটিলতা সৃষ্টির জন্যে বিখ্যাত, হতে পারে এটা আমার অজ্ঞতারই প্রতিফলন !তাই উৎসাহ অনুভব করছিনা,তুমি যদি চাও তবে ভালো হয় এটাই যে আমরা আজকের মতো আলোচনা এখানেই স্থগিত রাখি...
প্রিজমঃ তোকে আর ভনিতা করতে হবেনা!আজব!আমি কী একবারও বলেছি যে আমি তোমার আলোচনায় ক্র্যাক হয়েছি বা এমন কিছু?তুমি আলোচনা থেকে আজকের জন্যে আর পালাতে পারছোনা বলে দিচ্ছি!আমি তোমাকে এখন আর ছাড়ছিনা!হাহাহ!কী কথারে বাবা!অহেতুক জটিলতা সৃষ্টির জন্যে বিখ্যাত!যাদের পর্যাপ্ত ইনফরমেশন নেই তাদের নিকট তোমার আলোচনা জটিল মনে হলেও আমার কাছে ব্যাপারগুলি আদৌ জটিল মনে হচ্ছেনা!কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি যদি আজ তোমার কাছ থেকে আমি এ প্রশ্নগুলির সলিউশন না পাই তবে আমার কী হবে নিজেকে তো শান্তনাই দিতে পারবোনা!
রিসাসঃ যাইহোক,কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স আমাদের বলছে, অবজেক্টিভ রিয়েলিটির কোনো অস্তিত্ব নেই।আমরা শুধুমাত্র দেখি একটি পার্টিকেলের নির্দিষ্ট একটি অবস্থায় কলাফস হওয়ার সম্ভাবনাকে এবং সম্ভাব্য অন্যান্য রিয়েলিটিগুলিও একই সাথে কোয়ান্টাম মাল্টি ইউনিভার্সে অস্তিত্ব রাখে।এখন প্রশ্ন হলো আমি এটা কিভাবে নিশ্চিত হবো, এমন কোনো এক্সপেরিমেন্ট কী আছে?হ্যা আছে একটি থট এক্সপেরিমেন্ট। এ জন্যে তোমাকে প্রথমে যেটা জানতে হবে সেটা হলো কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিটেশন যেটি ১৯২০ সালে ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ এবং নিলসবোর সহ অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী তৈরি করেছিলেন।আক্ষরিক অর্থে এরা ছিলেন কোয়ান্টাম ফিজিক্সের গড ফাদার!এই ইন্টারপ্রিটেনশনের মূল কথা ছিলো, যে সাব-এটমিক পার্টিকেলগুলি আমাদের ইউনিভার্সকে তৈরি করছে সেগুলিকে চিন্তা করতে হবে ওয়েভ ফাংশন হিসেবে যা ছিলো পার্টিকেলদের লোকেশন এবং ভেলোসিটির প্রবাবিলিস্টিক ইন্টারপ্রিটেশন!শুধুমাত্র পর্যবেক্ষক যখন পর্যবেক্ষণ করবে তখনই এই ওয়েভ ফাংশন কলাফস করবে এবং পার্টিকেলগুলি অনেকগুলি সম্ভ্যাব্য ইতিহাস থেকে একটি ইতিহাসে ফিক্স হবে যেভাবে আমাদের এ ইউনিভার্স তৈরি হলো!
প্রিজমঃ কিন্তু তুমি তো জানো ১৯৫৭ সালে হিউ-এভারেট অন্য আর একটি আইডিয়া দিয়েছিলো?
রিসাসঃ হ্যা ১৯৫৭ সালে হিউ-এভারেটের যে ইন্টারপ্রিটেশন সেটি কোপেন হেগেন ইন্টারপ্রিটেশন থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার রিমুভ করে দিয়েছিলো আর সেটা হলো ‘’ওয়েভ ফাংশন কলাফস’’।ওয়েভ ফাংশন কলাফস না করলে সাব-এটমিক পার্টিকেলদের সকল প্রবাবিলিস্টিক ভ্যালু সুপারপজিশনে থাকে একইসাথে এবং একইসময়!এর মানে হলো, একইসাথে এবং একইসময় সুপারপজিশনে অসীম সংখ্যক প্যারালাল ইউনিভার্স অস্তিত্বশীল!
প্রিজমঃ হলি শেট!কী বলিস?এটা তো একেবারেই বিষ্ময়কর!আমি তো ব্যাপারটা এর আগে ঠিক এভাবে ভেবে দেখিনি!
রিসাসঃ দেখো, সুপারপজিশনে যদি একটি পার্টিক্যাল একইসাথে এবং একইসময় মাল্টি ইউনিভার্সে অস্তিত্বশীল হয়েই থাকে তবে হিউ-এভারেট মনে করতো যে প্রত্যেকটি জগতেই ওয়েভ ফাংশন কলাফস হচ্ছে কিন্তু তার প্রশ্ন ছিলো আমরা কেনো একটি মহাবিশ্বকেই দেখছি?তখন হিউ-এভারেট এর কারণ হিসেবে বলেন কোয়ান্টাম ডিকো-হারেন্টের কথা, বেসিক্যালি পার্টিকেলদের সকল সম্ভাব্য স্টেট সুপারপজিশনে থাকে, কোহারেন্ট অবস্থায়, কিন্তু তাদের সিষ্টেমকে আইসোলেটেড হতে হয়!এবং তিনি মনে করতেন যখন আমরা একটি ক্ষুদ্র ফোটনকেও হিট করি এটি কোহারেন্স ভেঙে ফেলে যার জন্যে আমরা এটাকে ওয়েভ ফাংশন কলাফস হিসেবে দেখছি, অজস্র রিয়েলিটির মধ্যে একটিকে যা পার্টিকেলদের সম্ভাব্য স্টেট বর্ণনা কর।
.
প্রিজমঃ কিন্তু তাহলে লরেন্স ক্রাউসের মতো একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানীও কেনো ম্যানি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশনের বিরুদ্ধে কথা বলছেন?
রিসাসঃ কারণ প্রথমত এটাকে এক্সপেরিমেন্টালি টেস্ট করার কোনো উপায় নেই আর যা ফিলোসফি এবং বিজ্ঞানে অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়।আর দ্বিতীয়ত হলো এ থিওরি একেবারেই পাগলাটে!প্রকৃতপক্ষে যদিও কোয়ান্টাম মাল্টিভার্স অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হয়েছে তবে থট এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে একে প্রমাণ করা যায় যদিও থট এক্সপেরিমেন্টটি আরো পাগলাটে, এবং এটি অসীম ভবিষ্যতেও কখনো করা সম্ভব হবে কীনা কারো জানা নেই, তবে, যদি এই এক্সপেরিমেন্টটি কখনো করা সম্ভব হয় তবে কোয়ান্টাম মাল্টি ইউনিভার্স থিওরি প্রমাণ হবে!
প্রিজমঃঅবশ্যই প্রমাণ করা সম্ভব হবে?কেনো প্রমাণ করা যাবেনা?একদিন না একদিন অবশ্যই আমরা প্রমাণ করতে পারবো!
রিসাসঃহাহাহহাহ,তাই?এত সহয!তোর মাথায় যদি বন্ধুক ঠেকিয়ে তোকে বলা হয় ৫ মিনিটের মধ্যে বন্ধুকের নল দিয়ে একটা বুলেট শাঁ করে বের হবে এবং তোর মাথার খুলি গুড়িয়ে দেবে এবং হয়তোবা ভাগ্য ভালো থাকলে বেচেও যেতে পারো!জীবন এবং মৃত্যুর ৫০ পার্সেন্ট সম্ভাবনার মধ্যে তোকে ফেলে দিয়ে যদি এই এক্সপেরিমেন্টটা করতে হয়, তাহলে তুই রাজী হবি???
প্রিজমঃ আরেহ!তুমি তো দেখছি এবার আমাকে হত্যা করার জন্যে কেনো উঠে পড়ে লেগেছো?কোয়ান্টাম মাল্টি ইউনিভার্স তত্বের প্রমাণ করার জন্যে বললাম আর তুমি তা না করে আমার খুলিতেই বন্ধুক ঠেকিয়ে দিলে!!এটা কেমন হয়ে গেলোনা!!যাইহোক!আমরা তো শুনেছি শ্রডিঙ্গারের কেটস থিওরির কথা যেখানে একটি বেড়ালকে বাক্সের মধ্যে রেখে দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়,যে বাক্সটির মধ্যে রাখা আছে তেজস্ক্রিয় পদার্থ, ৫০ পার্সেন্ট সম্ভাবনা থাকে যে বেড়ালটি হয়তো জীবিত থাকবে অথবা মৃত্যুবরণ করবে। কিন্তু পর্যবেক্ষক যতক্ষণ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করছেনা ততক্ষণ পর্যন্ত বেড়ালটি একইসাথে এবং একইসময় ৫০ পার্সেন্ট জীবিত এনং ৫০ পার্সেন্ট মৃত থাকার পসিবিলিটি রাখে ।বা পর্যবেক্ষকের মস্তিষ্কে বেড়ালটি একইসময় এবং একইসাথে জীবিত এবং মৃত, যেটাকে বলা হয় সুপারপজিশন।কিন্তু তুমি বলছো অন্য কথা তুমি বেড়ালের স্থলে পর্যবেক্ষককেই শ্রডিঙ্গারের বাক্সে লক করে রাখার চেষ্টা করছো!?এর মানে কী, তুমি পর্যবেক্ষককেই সুপারপজিশনে ফেলে দিতে চাইছো? কারণ তুমি আমার মাথায় পিস্তল তাক করে যদি বলো ৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে তবে তো আমি নিজেই সুপারপজিশনে চলে যাবো বা আমি নিজেই তখন কিউবিট হয়ে যাচ্ছি একইসাথে ০ এবং ১।আমি নিজেই একইসাথে জীবিত এবং মৃত!তাহলে বাক্সের দরজাটি খুলবে কে?
রিসাসঃহাহাহ!আসলেই তো তাই!বাক্সের দরজাটি খুলবে কে!শুনো , এটা আসলে আমার নিজস্ব কোনো বক্তব্য নয়, এই পাগলাটে ধারণাটির নাম ‘’quantum suicide and immortality’’ এবং তুমি জানো কীনা জানিনা ১৯৮৭ সালে হ্যান্স মরভেক এবং স্বাধীনভাবে একবছর পর ব্রনো মার্সেল এ প্রস্তাবটির উপর কাজ করেছেন এবং যিনি কোয়ান্টাম সুইসাইড এবং ইমোর্টালিটি তত্বের উপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছেন তিনি হলেন এম আই টির ম্যাক্স ট্যাগমার্ক!এই এক্সপেরিমেন্টটির সবচেয়ে কমন ভার্সন হলো, পর্যবেক্ষকে জীবন নাশক কোনো ডিভাইস দিয়ে চ্যাম্বারে রাখা যেমন উচ্চশক্তি সম্পন্ন কোনো রাইফেল তার মাথায় তাক করে রাখা।প্রতি দশ সেকেন্ডে ফোটনের স্পিন ভ্যালু পরিমাপ করা হবে যা নির্ভর করবে মেজারমেন্টের ৫০/৫০ চাঞ্চের উপর এবং একইসাথে এক্সপেরিমেন্টারের ৫০/৫০ চাঞ্চের উপর!!
প্রিজমঃ ওহ মাই গুডনেস!বলিস কী রে!আমি তো এই একই কনসেপ্টটা ‘’ব্যাংস্পেস’’ গ্রন্থের মাইক্রো-সাইকোমাইন্ড নামক অধ্যায়টিতে পড়েছিলাম!
কিন্তু তখন তো আমি এই পাগলাটে ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি!তাহলে আমাকে তুমি এখন বলো শ্রডিঙ্গারের বেড়ালটির তবে কী হবে?
রিসাসঃ এখানে আমরা যা করেছি তা হলো এক্সপেরিমেন্টারের সারভাইভাল বা টিকে থাকাকে কোয়ান্টাম স্টেটের সাথে বেঁধে দিয়েছি।এর মানে হলো সে নিজেই এখন সুপারপজিশনে, একইসাথে জীবিত এবং মৃত যা তুমি কিছুক্ষণ আগেও বলেছিলে।তার ৫০ পার্সেন্ট বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে এবং সেই ৫০ পার্সেন্ট জীবনের মধ্যে তার এক্সপেরিমেন্টটি সম্পন্ন করারও সমান সম্ভাবনা আছে।কোন ব্যাপারই না সে কতটা সময় এক্সপেরিমেন্টটি রিপিট করেছে কিন্তু সে টিকে থাকবে!
প্রিজমঃআমার কিন্তু এবার কোনোকিছুই মস্তিষ্কে কাজ করছেনা!প্লিজ আমাকে আর একটু পরিস্কার কর!না বুঝলে যে আমার প্রচন্ড কষ্ট হবে, আমি বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যাবো!
রিসাসঃ ভেঙে পড়ার প্রয়োজন নেই, আমরা কেউই কোয়ান্টাম ফিজিক্স সম্পূর্ণ ভাবে বুঝিনা।রোজার পেনরোজ বলেছিলেন, Quantum mechanics makes absolutely no sense।আবার যদি রিচার্ড ফাইনম্যানের কথা বলি, তিনিও বলেছেন, I think I can safely say that nobody understands quantum mechanics। রিচার্ড ডকিন্সের মতো একজন কঠিন বিজ্ঞানীও বলেছেন, প্লাঙ্ক লিমিটে এসে হিউম্যান ইনটুইশন আর কাজ করেনা!যাইহোক, কিন্তু আমরা তো এতক্ষণ খুব ভালোভাবেই বুঝে আসছিলাম, তাই না?
প্রিজমঃ হ্যা, এটা শান্তনা নয়, এটাই বাস্তব, মাইক্রোস্কোপিক জগতকে আমাদের ব্রেন বুঝতে পারছেনা যাইহোক আমি হতাশ নই।এরপর কী হলো?পর্যবেক্ষক ৫০ পার্সেন্ট সারভাইভ করছে এবং ৫০ পার্সেন্ট মৃত।তার মানে পর্যবেক্ষকের যে ৫০ ভাগ সারভাইভ করছে সেই ৫০ ভাগই এক্সপেরিমেন্টটি পরবর্তীতে রিপিট করবে!এবং যে ভার্সনটি মৃত সেটি আর জীবনে ব্যাক করবেনা এবং নেক্স এক্সপেরিমেন্টটি করতে পারবেনা, তাইতো?কিন্তু প্রত্যেকটি জীবিত ভার্সনেরই সারভাইভ করার সম্ভাবনা রয়েছে?
রিসাসঃ হ্যা তুমি ঠিক আছো কিন্তু তোমাকে একটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে, যদি সে জীবিত ভার্সনের ৫০ ভাগ বেঁচে থাকার সেই সম্ভবনা আছে এমনকি যদিও সেই সম্ভাবনার পরিমাণ কমতে কমতে keeps 25% বা 12.5%, বা 6.25% অথবা যদি তারও চেয়ে কম হয়!
তাহলে একজন পর্যবেক্ষক একটি মহাবিশ্বে ৫০ বার এক্সপেরিমেন্টটি করার জন্যে টিকে যেতে পারে। তার রয়েছে কোয়াড্রিলিয়নের মধ্যে এক ভাগের চেয়েও কম সম্ভাবনা এমন টিকে থাকার। যা ৫ সিগমা লেভেল থেকে বেশি যা একটি অফিশিয়াল আবিষ্কারের জন্যে প্রয়োজন হয়। এবং ঠিক তখনই একজন পর্যবেক্ষক কোপেনহেগেন ইন্টার-প্রিটেশন এবং ম্যানি-ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশনের মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে!কোয়াড্রিলিয়নের মধ্যে এক ভাগ সম্ভাবনা আছে যে সে কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিটেশনের পক্ষে এবং ১০০ পার্সেন্ট সম্ভাবনা আছে ম্যানিওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশনের পক্ষে!কারণ পর্যবেক্ষকের কিছু ভার্সন অবশ্যই এই সুপারপজিশন দেখবে এবং দেখবে তার অন্যান্য ভার্সন মারা গেছে।এবং ম্যানিওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশন সত্য প্রমাণ হয়েছে আর সেই বিশেষ ভার্সনটি অমরত্বের স্বাদ গ্রহণ করেছে!
প্রিজমঃ এটা খুবই বিষ্ময়কর!আমি আসলেই খুবই বিষ্মিত হয়েছি!ম্যাক্স ট্যাগ মার্ক এই সাইকো থট এক্স-পেরিমেন্টটি কিভাবে উদ্ভাবন করলেন!!ডেঞ্জারাস!কিন্তু দূর্ভাগ্য হলো সুপারপজিশনকে যখন পর্যপবেক্ষক দেখবে তখন সে এটাও দেখবে যে অগণিত মহাবিশ্বে সে মৃত!
রিসাসঃ কিন্তু তুমি আরো বিষ্মিত হবে যখন শুনবে এই বৃদ্ধ বিজ্ঞানী তার ওয়েভ সাইটে এখনো বলে বেড়াচ্ছে এ পরীক্ষাটি করা সম্ভব!এটা হলো তার ওয়েভ লিংক (http://space.mit.edu/home/tegmark/quantum.html#immortality)
প্রিজমঃ তোমার সাথে আলোচনা করে মনে হয়েছে যে তুমি সম্পূর্ণ অথেনটিক তথ্যের ভিত্তিতে আমার সাথে আলোচনা করেছো এবং আলোচনাটি অনেক সুগভীর ও একইসাথে কঠিন ছিলো।এত বিশাল একটি দার্শনিক প্রশ্ন যার সামাধান গ্রহের বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ আজো জানেনা তুমি সেগুলিকে জানার চেষ্টা করেছো এবং নিস্বঃন্দেহে তুমি খুব গভীরভাবে বুঝেছো, আর এ বোঝার কারণ হলো তোমার নিজস্ব একটি দর্শন আছে।কিন্তু আমরা আজো এদেশের কিছু কট্টর আস্তিক এমনকি নাস্তিককে বুঝাতে পারিনি দর্শন কতটা গুরুত্বপূর্ণ অথবা দর্শন আসলেই কী!তোমার দার্শনিক সাইকোলজির কারণেই তুমি বিজ্ঞান সম্পর্কে কোন প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা না করেই সম্পূর্ণ নিজের যুক্তি,দর্শন এবং কমনসেন্সকে ব্যাবহার করে ল্যাটেস্ট কোয়ান্টাম ফিজিক্স পর্যন্ত এসেছো এবং একটি গ্রন্থও লিখেছো, যা আসলেই অসাধারণ, অন্তত অন্য কয়েক কোটি রাইটারের চেয়ে!কিন্তু গণি নিয়েও তোমার অধ্যায়নের প্রয়োজন ছিলো,যদিও আমি জানি তোমার বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা!একসাথে অনেকগুলি শাখায় কাজ করছো তুমি বিশেষ করে সে সকল দার্শনিক প্রশ্নের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ নিয়ে যা একজন মানুষের জীবনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত এবং যা মানুষকে কষ্ট দেয়, তুমি তাদের কষ্টটা বুঝেছো, যারা আমাদের মতো।এ জন্যে তোমার প্রতি আমি বা আমাদের অন্যান্য বন্ধুরা কৃতজ্ঞ!যদিও অনেকে এতবেশি কৃতজ্ঞ যে তারা তোমার সাথে এমন সব ব্যাবহার করে যা ছাড়া হয়তো তাদের নিস্তব্দ থাকা ছাড়া কোনো ভাষাই থাকতোনা!
রিসাসঃ ধন্যবাদ, তোমাকে একটি সুন্দর আলোচনার প্রেক্ষাপট তৈরি করার জন্যে।
প্রিজমঃ তার মানে আমরা জানলাম কেনো সার্বজনীনভাবে সবাই পরকালের অস্তিত্বে বিশ্বাস করছে!কারণ আরাকানের সেই বায়োলজিস্ট জেসি বেরিং এর সেই এক্সপেরিমেন্ট আসলেই সত্য ছিলো, পরকালের অস্তিত্বে বিশ্বাসের সাথে আমাদের ব্রেন নিউরোলজিক্যাল ফাংশন জড়িত আছে এবং সে জন্যা আমার বা আমাদের মতো কট্টর সংশয়বাদী বা নাস্তিকরাও মৃত্যুর পরে কিছু সাইকোলজিক্যাল স্টেটের বেঁচে থাকাকেই প্রাধান্য দেয়।এরপর তুমি অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফিজিসিস্ট ভাদিম বেবেঙ্কোর কথা বলেছো, যিনি বিজ্ঞানের সলিড গ্রাউন্ড থেকেই মনে করেন, কোয়ান্টাম মাইক্রোওয়েভ গুলি মৃত্যুর পরেও আমাদের চেতনাকে জীবিত রাখে আর অবশেষে আমরা জানলাম কোয়ান্টাম সুইসাইড এবং কোয়ান্টাম ইমোর্টালিটি যা আসলেই বিষ্ময়কর!অতএব আমরা কোয়ান্টাম মাল্টিভার্স এবং জেসি বেরিং Simulation Constraint Hypothesis of Death Representation এর সম্পর্কের সংযমী একটি মূল্যায়ন করতে পারলাম!এখন প্রশ্ন হলো, তুমি কী পরকালের অস্তিত্বে বিশ্বাস করো?
রিসাসঃ এ ব্যাপারে আমার কাছে আর কোনো উত্তর নেই, আমার যা বলার ছিলো আমি তা বলেছি, কিন্তু আমি ব্যাক্তিগতভাবে কোনোকিছু প্রত্যাশা করিনা, মহাবিশ্বকে জানার জন্যে যদি মৃত্যুর পরও কোন অজ্ঞাত অপশন থাকে তবে মন্দ নয়!কিন্তু আমার কাছে ব্যাপারটা ভূতুড়ে এবং রহস্যময় মনে হয়।
Comments
Post a Comment