বঙ্গন্ধুকে নিয়ে রচিত কাব্যগ্রন্থ কিউবিট, লিখেছেন- রিসাস
এ মহাবিশ্বের বয়স পনের বিলিয়ন বছর, যা একটি ক্ষুদ্র মানুষকে তৈরি করতে প্রকৃতি খরচ করেছে!
অসীম মহাকাশের কাছে মানুষ একটি পরমাণুও নয়,
কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের অন্য কোনো সোলার সিষ্টেম থেকে পৃথিবীর দিকে তাকালে মনে হবে যেনো এটি একটি শূন্যস্থান...
অথচ এই ক্ষুদ্র মানুষের জন্যে প্রকৃতি অপচয় করেছে আটাশ গিগাপার্সের বা আটানব্বই মিলিয়ন লাইট ইয়ার্স আয়তনের মহাজাগত!
তবুও ১৯৭১ খ্রিষ্ঠাব্দে আমাদের দেশের মানুষের জন্যে পৃথিবীর অতি-ক্ষুদ্রতম একটি মানচিত্রে এক পিকোমিটারও স্থান হচ্ছিলোনা।
পঁচিশ এ মার্চ অন্ধকার রাত্রিতে মানবতার শত্রু, পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীরা এদেশের নিরীহ মানুষের উপর ঢেলে দিয়েছিলো হিংসা আর ক্রোধের বিষাক্ত ফুয়েল।
যে মানুষকে তৈরি করতে প্রকৃতি পনের বিলিয়ন বছর সময় অপচয় করেছিলো!
যার জন্যে অগণিত গ্রহ-নক্ষত্র আর ছায়াপথের অপচয়!
যার অস্তিত্বের সাথে সমস্ত মহাবিশ্ব জড়িত!
সে মানুষকে তারা অকাতরে হত্যা করেছিলো!!
পিষ্ট করেছিলো নিস্পাপ শিশুদের ইটের দেয়ালে!
এ শুধু মানবতার অবমাননা নয়!এ শুধু মানবতার অবক্ষয় নয়!
এ স্বয়ং ঈশ্বরের বিরূদ্ধে, পরম সত্যের অবমাননা!
মহাবিশ্ব কার?
এ মহাবিশ্বটি আমার
নয়,
আমি শুধু জন্মের পর
এটিকে দেখতে পেয়েছি,
আমি যখন ছিলাম না
তখন এটি অন্য কারো ছিলো, তার আগে অন্য কারো,
সবাই জানে এটি অন্য
কারো জগত, এটি তাদের জগত নয়,
কিন্তু তবুও সবাই
এটিকে নিজের মনে করছে, এ মহাবিশ্বটা আমার মনে করার মাঝেই সীমিত,
বাস্তবে এটি আমার
নয়।'
একটা সময় ছিলো যখন মানুষ ছিলোনা, তখন এ গ্রহটি ডায়নোসরের ছিলো, এটি দখল করে ছিলো ট্রায়াসিক যুগের সরিয়ান অথবা কনোডররা,
একটা সময় ছিলো যখন মানুষ ছিলোনা, তখন এ গ্রহটি ডায়নোসরের ছিলো, এটি দখল করে ছিলো ট্রায়াসিক যুগের সরিয়ান অথবা কনোডররা,
গ্যালাক্সিটি তখন
হয়তোবা এলিয়েনদের দখলে ছিলো, যখন আমরা ছিলাম না,
তাদের পূর্বে হয়তোবা মহাবিশ্বটি অন্য কারো ছিলো!
সবাই জানে এটি অন্য
কারো মহাবিশ্ব!
কিন্তু তবুও তারা
এটিকে নিজের মনে করছে, নক্ষত্রগুলি আমাদের মনে করার মাঝেই সীমিত...
যখন বিশ্বজগতে কোনো
প্রাণী ছিলোনা, কোনো উদ্ভিত ছিলোনা এমনকি কোনো এলিয়েন ছিলোনা, তখন মহাবিশ্বটি গ্রহ
নক্ষত্রের ছিলো, নক্ষত্রগুলি ছিলো পার্টিকেলের!
যখন কোনোকিছুই
ছিলোনা, মহাবিশ্বে একটি পার্টিকেলও ছিলোনা তখন এটি অজানার ছিলো, এটি অসীমের ছিলো,
এটি অজ্ঞাত রাশির ছিলো!
আজো কী আমি তোমাকে
দখল করে রাখতে পেরেছি?
আমার পর তোমাকে অন্য
কেউ দখল করবে, তারপর অন্য কেউ, তুমি অন্য কারো ভালোবাসা, কিন্তু আমি মনে করি তুমি
আমার, তুমি আমার মনে করার মাঝেই সীমাবদ্ধ!
তুমি কার?
অজানার?
তুমি কী অচেনার?
তুমি কী অসীমের ?
কেউই কী তোমাকে দখল
করে রাখতে পারবে অনন্তকাল, না তুমি ?
এ দেশ কার?সতের কোটি
মানুষ কার?
কে হিন্দু?কে
মুসলিম?
কে বোদ্ধ?কে
খ্রিষ্টান!
কেউই তো এ
মহাবিশ্বের কেউ নয়, এরা কেউই তো এ গ্রহটিকে অধিকার করতে পারেনি, আমরা অনন্তলোকের,
আমরা অসীমের, আমরা অজানা অন্ধকারের!
শুধু পথ চলছো, মস্তিষ্কে কিছু বিক্ষিপ্ত তরঙ্গ, অল্পকিছু
চিন্তা, সে চিন্তার সীমা থেকে বের হয়ে একবারও দেখবেনা, কী ঘটছে তোমার চলার পথে?
একটি ট্রেন অথবা স্পেসশিপ যেমন প্রচন্ডগতিতে তার লক্ষ্যের
দিকে ছুটে যায়,
তুমিও নির্দিষ্ট কিছু চিন্তাকে উদ্দেশ্য করে ছুটে যাও, শুধু
গতি, অথচ একবারও দেখলেনা গাছের ভীড়, পাখিদের কোলাহল, একটি সেকেন্ড ক্ষয় করে
দাঁড়াচ্ছনা , একবারও চোখ তুলে তাকাওনা তুমি গভীর অন্ধকারেও, রাতের মহাকাশে!
কত কিছুই তুমি অন্তরাল করো, কত কিছু তুমি অন্ধকারে রেখে
দাও, উপেক্ষা আর
অবহেলায়!
মাঝেমাঝে মনে হয়, তুমি নিজেই মহাকাশ কখন কোন নক্ষত্রের উদয়
হয় অথবা অস্ত যায়, সংবাদ নেয়ার সময় হয়না তোমার!
সম্পূর্ণ মহাবিশ্বকে ফেলে তুমি ক্ষুদ্রকিছু চিন্তা নিয়ে
চলো!
অতি-নগন্য!
তোমার মস্তিষ্কের ভেতরে তুমি আছো, তোমার দশ বিলিয়ন সেলে
তুমি পথ চলো, তোমার দেহের পরমাণুর কক্ষপথের তুমি নিউক্লিয়াস, তুমিই ইলেক্ট্রন হয়ে
নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হও অথচ পৃথক করে তুমি কোনোকিছুই জানতে পারোনা!
তোমার দেহে প্রকৃতির ফান্ডামেন্টাল ফোর্সগুলি ইন্টারেক্ট
করে!
তোমার দেহের প্রতিটি পার্টিকেলে তুমি পরিবহণ করছো জগতের
সুত্রগুলো!
অথচ কোনোকিছুই তুমি পৃথক করতে পারোনা!
তোমার চেতনা তোমাকে এ কোনোকিছুই পৃথক করতে দেয়না!
সে সকল কিছুর মাঝে তোমাকে একাকার দেখে!
তার কাছে সবকিছু তোমাতে বর্তমান!
বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করে দেখলেই তবে তুমি আলাদা!
তোমার ধর্ম কী তুমি বুঝতে পেরেছো?
তুমিই এ বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা, তুমিই বঙ্গবন্ধুর নিরপেক্ষ
চেতনা আর হ্যা তুমিই মহাবিশ্ব!
বঙ্গবন্ধু এখানে নেই!
আমি যখন মহাকাশের দিকে তাকাই তখন মিলিয়ন মিলিয়ন বছর অতীতের
নক্ষত্রগুলির দিকেই তাকিয়ে থাকি যাদের এ মুহূর্তে কোনো অস্তিত্বই নেই!
এ মুহূর্তে আমার মস্তিষ্কেই তারা অস্তিত্বশীল!
এ মুহূর্তটি একান্ত আমার!
কোয়াড্রিলিয়ন নক্ষত্রের মহাকাশ থেকে আলোক তরঙ্গ ছুটে এসে শত
কোটি বিলিয়ন বছর অতীত নিয়ে ঢুকে পড়ে আমার খুলির ভেতর!
আমার অসীম মহাকাশের উপলব্দি কত আলোকবর্ষ অতীতের?
কোয়েসার থেকে আলোক তরঙ্গ গ্যালাক্সির বক্রতায় আটকে গিয়ে
আবর্তিত হতে থাকে, অপচয় হয় মিলিয়ন মিলিয়ন বছর!
ঠিক ঐ মুহূর্তেই ভার্সিটি ক্যাম্পাসে আমি নিজেকে আবিষ্কার
করি!
আমি ভাবনার জগতের তন্দ্রা ভেঙে জেগে উঠি বাস্তবতায়!
এই যে এই ছেলেটাই নাস্তিক; ভীড়ের মধ্যে অনেকে হৈ হুল্লোড়
করে!
কী হচ্ছে এখানে!আমি কোনোকিছুই বুঝিনা!
তারপর আকষ্মিক কলার চেপে ধরে একদল বিভ্রান্ত ছেলে আমার মাথা
আর শরীরে জখম করে চলে যায়!
চতুর্দিক থেকে, শুধু একটা শব্দই ভেসে উঠে, নাস্তিক,
ইউনিভার্সিটিতে নাস্তিকের অনুপ্রবেশ!
পৃথিবীর অনেককিছুরই অর্থ আমি পরিস্কার না!
আমি শুধু একদিন বলেছিলাম, প্যারালাল ইউনিভার্সগুলিতে মাল্টি
ট্রিলিয়ন জিশু আর মোহাম্মদ আছে, তারাও নিজেকে মনে করে ঈশ্বরের এম্বাসেডর অথবা
ঈশ্বরপুত্র!
আমি শুধু সৌন্দর্যটাই প্রকাশ করেছিলাম!
আমার ক্লান্ত স্নায়ুতন্ত্র,
উত্তপ্ত মস্তিষ্ক, এক ফোটা জল চায়!
পায়না!
আমার মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালসেশন হিসেবে একটি
অসীম মহাবিশ্ব ফুটে উঠেছে প্রতিটি নিউরনে, আমি সেই নিউরাল সিগনালে অজস্র কোটি গ্রহ
আর তারকায় ঘুরে বেড়াই!
আর ওরা, আমাকে অমুসলিম বলে!
ওরা বলে আমি কোনোদিন নামাজ পড়িনা!
আমি নিয়ম মানিনা, মোহাম্মদকে শ্রেষ্ঠ নবী মানিনা!
আমি কীভাবে বুঝাই ওদের, আমি বিষ্মিত এ মহাবিশ্বের বিশালতায়,
আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি সীমাহীন রহস্যে!
আমি টাইম প্যারাডক্স নিয়ে ভাবতে গিয়ে যখন মেটাভার্সের দেখা
পাই তখন ইউনিভার্সিটির শিক্ষকমন্ডলীর মাঝে কথা হয় এই ছেলে নাস্তিক মোটেও সুবিধার
নয়!
তিনদিন মা হসপিটালে ছিলো!
অর্থের অভাব!
উন্নত চিকিৎসা করতে পারিনি বলে দুঃখ্য ভারাক্রান্ত মনে,
নির্জনে,
নিজের দিকে তাকিয়ে ক্যাফেটারিয়ায় বসে থাকি!
ওরা তখনও নাস্তিক বলে আমার বুঝেনি হৃদয়, অজস্র তামাশা, আর
উপদ্রবে
ভরিয়ে দিতে চায় আমার মস্তিষ্ক,
যে মস্তিষ্ক অতি-পরমাণবিক স্তরে
হাইসেনের অনিশ্চয়তায়,
শূন্যতার মাঝে তার অস্তিত্বের দেখা পায়!
ভাষা শহীদ অথবা বঙ্গবন্ধু এদেশের মনে কারো স্থান নেই!
ওরা বর্তমানেও পড়ে থাকে পনেরশত বছর পূর্বেই!
মাত্রাতীত
পরমাণুকে তুমি অতি-ক্ষুদ্র একটি কক্ষে বন্দী করে রাখতে
পারবে?
দূর্বল, শক্তিহীন !
কতইনা সহয একুরিয়ামের ভেতর অতি-ক্ষুদ্রকে বেঁধে রাখা!
নাহ!তুমি পারবেনা, তুমি ক্ষুদ্র একটি ইলেক্ট্রনকে বেঁধে রাখতে
পারো, তার মাঝে ক্রিয়াশীল অনিশ্চয়তাকে
না!তুমি পারবেনা তার সম্ভাবনাকে একটি ক্ষুদ্র প্যাকেটে সীমাবদ্ধ করতে!
হাইসেনের অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়ে পার্টিকেলগুলি যেমন অনন্ত
কোটি শতাব্দী আর স্থানে একইসাথে একইসময় ঘুরে বেড়ায়!
ঠিক তেমনি আমিও!
কে বলেছে আমি মুসলিম অথবা খ্রিষ্টান !
আমার ভেতরের প্রকৃতি স্থান-কাল ফুটো করে আমাকে বিস্ফোরিত
করেছে অসীমে!
আর তুমি, তুমি ক্ষুদ্র একটি সংস্কৃতির কারাগারে আমাকে বন্দী
করতে পেরে
মহা আনন্দে মেতে উঠো!
আমি বাংলার নই, অথবা নয় এ সৌরজগতের, আমি কারো নই, আমি নেই
কোনোকিছুর মাঝে, আমার আপেক্ষিক উপস্থিতি এবং অনুপুস্থিতি দ্বারা তোমরা আমায়
সঙ্গায়িত করো?
তুমি কী একটি আনসারটেইন ইলেক্ট্রনকে খ্রিষ্ঠান বলতে চাচ্ছো?
কত হাস্যকর তোমার চিন্তা!
আমরা বঙ্গবন্ধুর সন্তানগণ জাতির জনককে কোনো সময়ের সীমানায়
পরিমাপ করিনা, কোনো স্থানে অথবা কোনো বস্তুর মাঝে সেই অনির্নেয় সম্ভাবনাকে আমরা
সীমাবদ্ধ জানিনা!
আমরা শুধু জাতির মাঝে সে মহাশূন্যতার বিস্তার করি!
আমরা শুধু অস্তিত্বের সীমা ভুলে অসীমের সুর তুলি!
অসম্ভাব্যতা
স্ক্রেপ ইয়ার্ড,
যেখানে পরিত্যাক্ত লোহালক্কড় পড়ে থাকে সেখান থেকে প্রচন্ড ঘূর্ণিজড়ে
আকষ্মিক একটি আস্ত বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ তৈরির সম্ভাবনা আছে?
তারা বলে, ঈশ্বর ব্যাতীত মহাবিশ্বের অস্তিত্বও ঠিক এমনই
অসম্ভব
ঠিক যেমনি অসম্ভব স্ক্র্যাপইয়ার্ড থেকে এমনি এমনি একটি আস্ত
একটি উড়োজাহাজ তৈরি
হয়ে উড়তে থাকা!
ঈশ্বর তো তবে বোয়িং ৭৪৭ থেকেও বড় অসম্ভাব্যতা যিনি এমনি
এমনিই তৈরি হয়ে গেছেন!
আমার কাছে অসম্ভাব্যতা শব্দটি বড্ড আপেক্ষিক!
যুক্তিবাদী মস্তিষ্ক আমার শ্রডিঙ্গারের বাক্সে থাকে!
আমি জানি অসীমকে যুক্তির সীমায় সীমাবদ্ধ করা যায়না!
কিন্তু তবু আমি মহাবিশ্বের ত্রিমাত্রিক সীমারেখাকে
যোক্তিকভাবেই অতিক্রম করতে পারিনা!
আমার পক্ষে একইসাথে পৃথিবীর প্রতিটি নক্ষত্রে আবর্তিত হওয়া
অসম্ভব
অথচ
শ্রডিঙ্গারের বাক্সের পার্টিকেলগুলি অনন্ত কোটি মহাবিশ্বে
একই সময় একসাথে রেসিং করে বেড়ায় !
যেনো তাদের সামনে কোনো ম্যাটারই নেই!
সুপারপজিশনের মেটাভার্স এক সীমাহীন শূন্যতা!
অসম্ভ্যাব্যতার দেয়াল ভেদ করা কত সহয!
যুক্তির সীমারেখা ভেঙে অসীম বারবার মুক্তির অনুভূতি প্রকাশ
করেছে!
ঈশ্বরের অস্তিত্ব ব্যাতীত আমার অস্তিত্ব এতটাই অসম্ভব ঠিক
যতটা অসম্ভব
আমার পক্ষে একইসাথে একই সময় মহাবিশ্বের দুটি স্থানে একসাথে
হাঁটা!
ঈশ্বর ব্যাতীত আমি যেনো আল্টিমেট বোয়িং ৭৪৭!
আহা!
কত হাস্যকর!
আমার দেহের পার্টিকেলগুলি যুক্তির সীমা ভেঙে স্থান-কাল ফুটো করে বিশ্ব থেকে বিশ্বান্তরে
ছুটে যায়!
অসীম অসম্ভবের মাঝে আমি আমাকে সম্ভবপর করে তুলি কোয়ান্টাম
অনিশ্চয়তায়!
অসম্ভাব্যতা থেকেই আমার উদ্ভব!
এবার তোমার পালানোর বেলা!
আমি এগ্রিফার পঞ্চতত্বের এক তত্বে, বিশ্বমানবতার আত্মার মাঝেই ঈশ্বরকে অংকন করি!
আমি ঈশ্বরকে অঙ্কন করি সেই সরল অনুভূতির মাঝে মানুষের
ক্রন্দনে যার অন্তর
ব্যাথিত হয়,
আমি বঙ্গবন্ধু আর ভাষা শহীদের মাঝে ঈশ্বরকে অংকন করি কারণ
আমি অসম্ভব!
আমি ৭ ই মার্চের রেসক্রোস ময়দানে ডায়াসে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরকে চিৎকার করতে শুনেছি!
মহাশূন্যতায় নিমজ্জিত একটি অন্তর!
যিনি সেদিন সমস্ত মহাকাশকে প্রকম্পিত করে মানব মুক্তির
জন্যে চিৎকার করে উঠেছিলো!
আমি সেই সরল শিশুর মাঝে ঈশ্বরকে অংকন করি!
পরিতাপ
এদেশ আপনাকে প্রধানমন্ত্রী মনে করে তারা আপনাকে মানুষ মনে করেনা, তারা মনে করেনা যে আপনিও ব্যাথিত হোন!আপনার একটি হৃদয় আছে, সেই হৃদয় অনুভব করা প্রয়োজন!
এ মহাবিশ্বের কেউই যাকে বুঝেনা, তার চেয়ে একা আর কে হতে পারে?আমি সিঙ্গুলারিটি পয়েন্টের মতো একা একটি নারীকে দেখেছি, আমি অসীম বিধ্বস্ত একটি মাতৃ হৃদয়কে দেখেছি!
আমি পৃথিবীর সকল মানুষকে ভালোবাসতে পারি, তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে পারি!
কিন্তু আপনার প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি এবং ভালোবাসা প্রকাশ করাটা নিষিদ্ধ!
কবিতা নিষিদ্ধ!
কারণ এদেশ আপনাকে পৃথিবীর ৩.৮ বিলিয়ন নারীর মতো সাধারণ চোখে দেখেনা, তারা আপনাকে হয়তো নিষ্কাম ঈশ্বরের পর্যায়ে দেখে অথবা প্যারা-নরমাল বাস্তবতা!
আমি কোনো প্রধানমন্ত্রীকে নই, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে ভালোবাসি, আমি কোনো ঈশ্বরকে নই আমি একটি ব্যাথাকে ভালোবাসি!
দীর্ঘ ছাব্বিশটি
খ্রিষ্ঠাব্দের মৃত্যু হয়েছে আমার!
কেউ দেখেনি!
সকলের অগোচরে এক একটি মুহূর্ত করে অজস্র মৃত্যুকে মহাকালের
নিকট আমি সমর্পন করছি।
কেউ জানলোনা!
এক মিলিয়ন নক্ষত্রের এ ছায়াপথে সর্পিলাকার একটি বাহুতে
হারিয়ে যাওয়া এ গ্রহে
আমি অতি-ক্ষুদ্রতায় লীন।
তার চেয়ে কিছু ক্ষুদ্র চিন্তার পরমাণু মাঝে আমি হেটে চলি
অসীম মহাকাশে, অজস্র ঘটনা ঘটে সম্মুখ্যে পশ্চাত্যে, আমি সম্পূর্ণ উদাসীন।
দিনের আলোয় তারকাদের দিকে তাকালে তাদের শূন্য মহাকাশ মনে
হয়!
আমি পৃথিবীর কোলাহলে
হিংসা আর বিদ্ধেষ তরঙ্গে
অজস্র ঘটার মাঝে জেগে থাকি।
কোটি কোটি খ্রিষ্টাব্দ দূর থেকে দেখলে মনে হয় আমি একটি
শূন্যস্থান, মহাকাশের মতো শূন্যস্থান, যেনো আমিই মহাকাশ!
আর নক্ষত্রগুলি আমার দেহমনে আমাকে নিয়ে অবর্তিত হয়
ব্রহ্মান্ডে!
কতকিছুই তো ভাবি!
বাস্তবতার প্রবল আঘাতে, আপেক্ষিক বিয়োগ ব্যাথা শোক!
আমকে করে তুলে একা, অসহায়!
কত কোটি মানুষের অজ্ঞাতে অতি-ক্ষুদ্র পরিজিবীর জীবন চক্র
সম্পূর্ণ হয়!
মাঝেমাঝে নিজেকে তুচ্ছ, অজ্ঞাত, অজানা,উপেক্ষিত ক্ষুদ্র
একটি কণিকা মনে হয়!
মাঝেমাঝে সেই কণিকাও হারায় চিন্তার অসীমে, আমিও হারিয়ে ফেলি
আমাকে আইনস্টাইনের অজ্ঞতায়!
বাংলার সন্তান ডুবেছে আজ তারতম্যহীন অসাম্প্রদায়িক এক
চেতনায়!
তুমি থাকলে!
পৃথিবীর প্রতিটি তরুণের মতো আমিও চাইতাম আমার
চুল অথবা শব্দের প্রতিটি বিবর্তন তোমার মতো কেউ একজন পর্যবেক্ষণ করুক!
প্রত্যহ সকালে তার পুরাতন অস্তিত্বের ওয়েভ ফাংশন পরিবর্তিত
হয়ে যে নতুন সতেজ সত্তার জন্ম হয়, তাকে দেখে কেউ বিমুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকুক!
তোমার মতো উন্মুক্ত অস্থির আর বিশৃংখল একটি মেয়ের পথ চলার
দৈর্ঘ সসীম হয়ে উঠুক আমার উদাসীনতায়!
কী হবে প্যারালাক্স রচনা করে যদি না তার একটি অক্ষরও তোমার
অন্তরে ঝরে পড়ে!
একটি নীল ফুল হয়ে!
কী হবে পৃথিবীর ৩.৯ বিলিয়ন পুরুষের মাঝে শ্রেষ্ঠতর হয়ে যদি
না আমার চোখের রশ্নি তোমার চোখে খসে !
আমিও চাই আমার
মস্তিষ্কের প্রতিটি অনুভূতির মাঝে কেউ তার
অস্তিত্বকে অনুসন্ধান করক!
পৃথিবীর অজস্র নারীর মাঝে শুধু একটি নারী দেহ আলোকিত হোক
চেতনার মঞ্চে!
কিন্তু কেনো যেনো আমি কখনোই তোমার মনের দরজায় প্রবেশ করতে
পারিনি!
ইতিহাসের শিকড় বিচ্ছিন্ন করে আমি এসে দাঁড়াতে পারিনি কখনো
উলঙ্গ শিশুর মতো সম্মুখে তোমার!
তার উত্তর আমি জানি!
তুমি বলতে আমার মস্তিষ্কে শুধু গ্রহ আর নক্ষত্র ছোটাছুটি
করে, একটুও সময় হয়না ক্ষণিকের তরে তোমাকে ভাববার!
ক্যাম্পাসের সাইকোলজি তুমিই ছিলে!
এমন কোনো ধার্মিক ছাত্র ছিলোনা যারা ঈশ্বরের সম্মুখে
দন্ডায়মান হয়েও তোমার ছবি সম্পূর্ণ সরাতে পেরেছে!
তোমাকে কেন্দ্র করেই তাদের চিন্তাগুলি আবর্তিত হতো!
ঈশ্বরের উপস্থিতি অথবা দোজখের ভয় দূর্বল হয়ে উঠতো তোমার
সুন্দরের কাছে!
একটি নারীর কাছে!
ইউনিভার্সিটির প্রত্যেকটি ছাত্রের নিউরনাল সিগনালে শুধু
একটি নাম প্রবাহিত হতো!
সেটি তুমি!
আমি জানি!
যখন দুজন একসাথে মহিপাল থেকে বিজয় সিংহের দিকে রিক্সায় ছুটে
যেতাম তখন মনে হতো, তোমার ঐ দুটো চোখ ছাড়া পৃথিবীতে কোনো সভ্যতা নেই, নেই দালান
কোঠা, শিল্প নগরী!
আমার দেহের অনুপরমণু গুলি সহসা যেনো কোথাও অদৃশ্য হয়ে যেতো,
তুমি আর আমি ছাড়া যেনো এ পৃথিবীতে কোনো ব্রহ্মান্ডই নেই!
তোমার শব্দের কম্পনের কাছে অজস্র ট্রিলিয়ন নক্ষত্রকে মনে
হতো এক মুঠো ছাই!
যেনো চাইলেই ছায়াপথকে ‘’ফু’’ দিয়ে উড়িয়ে দেয়া যায়!
তোমার মায়া আমি ছেড়ে দিয়েছি,
সমস্ত দেহের প্রতিটি স্নায়ুতন্ত্র থেকে তোমাকে অনু অনু করে
ছেড়ে আসতে হয়েছিলো!
কারণ সবাই বলতো, আমি নাস্তিক!
তাই আমার অস্তিকতাকে নিজ হাতে হত্যা করতে হয়েছিলো!
কারণ তুমিই আমার আস্তিকতা ছিলো, যে বিশ্বাসের কাছে সবকিছু
তুচ্ছ নগন্য হয়ে উঠতো!
কিন্তু আমি তোমাকে তুচ্ছ ভাবতে পারিনি, আমি চাইনি আমার
জন্যে তোমার সমাজ জীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠুক!
তেত্রিশ কোটি দেবতার মূর্তি সেদিন আমি ভেঙে এসেছি, অসীম
শূন্যতায়!
তুমি পাশে থাকলে আটলান্টিক ক্ষুদ্র একটি বাষ্প হয়ে যায়,
নক্ষত্রগুলি ধুলিকণা হয়ে যায়, বিশ্বব্রহ্মান্ড তরঙ্গ হয়ে যায়!
তুমি থাকলে আমি ৭ ই
মার্চের বজ্রকন্ঠ হয়ে যাই, তুমি থাকলে ত্রিশ লক্ষ শহীদ হয়ে যায়, তুমি থাকলে আমরা
সবাই বঙ্গবন্ধু হয়ে যাই!
আমি মহাবিশ্বের
কেউ নই
প্রভাতের প্রথম
সূর্যের রশ্নি যখন রেটিনায় এসে পড়ে,
তখনও ক্লান্ত
মস্তিষ্ক সঠিকভাবে পৃথিবীর অকাশটির দিকে
পরিচ্ছন্ন ভাবে চোখ তুলতে পারছিলোনা!
ঘুমের তীব্রতায়
অর্থহীন বৈশ্বিক ঐশ্বর্য!
পাখির কোলাহল
অথবা ফুলের সৌরভের সাথে কোনোকিছুতেই যেনো নিজেকে সমন্বয় করা যাচ্ছেনা!
কী প্রয়োজন
ছিলো এতকিছু যদি আমি পরিচ্ছন্ন না হই, যদি আমি শরীরের বিক্ষিপ্ত তড়িৎ চুম্বকীয়
অভিঘাত সহ্য করি!
যদি সবকিছু এত
অসহ্য লাগে!
অবুঝ মন,
অবাধ্য মস্তিষ্ক কিছুতেই জেগে উঠতে চায়না!
সে ঘুমিয়ে
থাকতে ভালোবাসে!
তারতম্যহীন
একটি অনুভূতির মাঝে পড়ে থাকতেই ভালোবাসে!
আমার ইচ্ছায়
কিছুই হয়না এখানে, পাখিরা আকাশে উড়েনা, গ্রহ নক্ষত্র গুলি মহাকাশে উড়ে মহাকর্ষের
নিয়মে, আমার দেহটি যেটিকে আমি আমার বলে প্রমাণ করি তার প্রতিটি পরমাণু পরমাণিক
ফিজিক্স মেনে চলে, আমি কে, আমার ভূমিকা?
যদি সবকিছু
আমাকে রেখেই ছুটে চলে দিব্যি!
আমি কী আছি?
আমি কী ততটুকু
সত্য এ মুহূর্তে ঠিক যতটুকু সত্য দূর থেকে ভেসে আসা বকুলের গন্ধ, অথবা সমূদ্র স্রোতে
অচেনার অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকা দুটি ব্যাকুল চোখ, তার চেয়ে বেশি কিছু?
আমার সত্যতা
কতটুকু!
আমার অস্তিত্ব
কতটুকু?
যদি আটলান্টিক
তার নিজস্ব প্রবাহে অনন্ত জীবন নিয়ে ছুটে চলে, যদি পাখি গুলি এমনি এমনি গেয়ে উঠে,
ফুল ফোটে, যদি মহাকাশে অসীম স্থান থাকা সত্ত্বেও দুটি হেলিকপ্টারেই সংঘর্ষ হয়, যদি আমাকে ছাড়াই বিবর্তিত হয় মহাকাশ
এক মিলিয়ন নক্ষত্রের আবর্তন নিয়ে!
আমার অস্তিত্ব
কোথায় আমি খুঁজি!
আমি
ইলেক্ট্রিক্যাল প্রবাহে ছুটে চলি মস্তিষ্কের নিউরাল পথে, ছুটে চলি দেহের কোষে কোষে
ব্যাক্টেরিয়ায়, ওরা সবাই আছে, প্রত্যেকের স্থানে, এমনকি পথ চলে যখন আমি ঘুমিয়ে
থাকি তখনও, কোটি কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে, অজস্র জন্ম হয়,জন্ম হয়, অনন্ত
মহাবিশ্বের!
ওরা সবাই আছে,
শুধু আমি নিরব সাক্ষী হয়ে আছি, আমার অনস্তিত্বের, আমার শূন্যতার!
আমার
ইচ্ছাশক্তির কী কোনো মূল্য আছে!
আলো সরে, আলো
আসে, আধার আলোতে অন্তরাল হয়!
আমার চোখের
সম্মুখ্যে এক একটি করে মৃত্যুবরণ করে আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত!
আমার শহরের
ফুটপাতে আমি নিজেই পৌরসভার কুকুরের মতো মৃত্যুবরণ করছি, আমি মৃত্যু বরণ করছি আয়নায়
নিজের চেহারা দেখতে দেখতে, কারণ ঠিক তখন অতীতে চলে গেছে কিছু মুহূর্ত, আমার দাদা
আর দাদুর মতোই, আমার বাল্যকাল পৃথিবীতে ফিরে আসবেনা কখনোই!
আমি মার্বেল
খেলতে খেলতে,সাঁতার কাটতে কাটতে, লাফাতে লাফাতে, হেসে,খেলে নৃত্যে,চুল ছড়িয়ে,
পিকোসোর নবম সিম্পোনিতে অতীতের নক্ষত্রদের
মতো মৃত্যুবরণ করেছি, আমি আত্মহত্যা করেছি মহাকাশে, তোমাদের
দেখতে দেখতে,
আমি আমাকে ভালোবাসতে বাসতে,বুঝে শুনে আমার
মগজের ভেতর তারুণ্যকে কিডন্যাপ করতে
দেখেছি!
আমার অনুভুতির
মাঝে আমাকে আমি অসীম অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দেখেছি!
আমি বুঝেছি এ
বিশ্বব্রহ্মান্ড আমার জন্যে তৈরি হয়নি, আমাকেও কেউ আমার জন্যে তৈরি করেনি, এ
গ্যালাক্সির কেউ আমার নয়, আমি কেউই না!
যেই ‘’কেউ না’’
থেকে কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশন অনন্ত মহাবিশ্বকে বিস্ফোরিত করে চলছে!
আমি বাংলার
ছেলে অথচ হিন্দু নই, আমি মুসলিম নই, আমি বোদ্ধ নই অথবা খ্রিষ্ঠান!
আমি বাংলার
ছেলে আমি বাংলার নই, আমি আর্জেন্টিনা অথবা সুইডেনে নই , আমি ভাষা শহীদ অথবা যোদ্ধা
নই, আমি বঙ্গবন্ধুর বিশ্বমানবতাবাদী চেতনার বিজ্ঞান।
ইতিহাস
প্রায় এক যুগ হলো আমার মস্তিষ্ক থেকে
প্রশ্নগুলি মৃত্যুবরণ করেছে, সে একটি
অন্ধকার সমাধি!
আমার দু-চোখ
আকাশে আকাশে কখন কোথায় ছুটে বেড়ায়, তারা মহাকালে
কী দেখে?
অসঙ্গায়িত
শূন্যতায়!
আমি প্রশ্ন
করিনা!
এখন শুধু আমি
সতর্ক হয়ে উঠি, আমার ভেতর সতর্কবার্তা আসে, আমি নিজের ভেতর গভীর থেকে গভীরভাবে
মনোনিবেশ করি, কিছু বুঝিনা, তবু নিমগ্ন থাকি!
চোখে তন্দ্রা
আর শরীর জুড়ে ক্লান্তি, স্থির হয়ে যেতে চায় রক্তের গতিবেগ!
অসীমকে অতিক্রম
করে আমি একটি ক্ষুদ্র পরমাণুও হতে পারিনা, আমার হওয়ার মতো কিছু নেই , আমি কেনো পড়ে
আছি এখানে আমি জানতে চাইনা আমার প্রশ্ন নেই!
কী পাবো!কী
হারাবো!
জানা আর অজানা!
ঈশ্বর যা জানে
আমিও তাই জানি, অসীম ঈশ্বরের মনে আছি আমি যার মনে পড়ে আছে অসীম বিশ্ব!
ডায়নোসর অথবা
সরিয়ানরা পৃথিবীর ইতিহাস
আমিও!
আমি কোটি কোটি খ্রিষ্ঠাব্দ ধরে প্রবাহমান, আমার
ফসিল পাওয়া যায় বিলুপ্ত প্রাণীদের সাথে,
ড্রাগনের মতো আমি সুদূর অতীত হয়ে
গেছি!
একটি ফসিল!
আমার আমি আমার
মস্তিষ্কের একটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক অভিঘাত,
আমি আমাকে
বুঝতে গিয়ে অতীত হয়েছি কয়েক আলোকবর্ষের !
এখনো ড্রেক
পরিসংখ্যানে অনেককিছু ধরা পড়েনি!
জানি!
ড্রেক
পরিসংখ্যানে একদিন এলিয়েনের অস্তিত্ব ধরা পড়বে সুস্পষ্ট করে,
হাবল টেলিস্কোপে গ্যালাক্সিগুলি মধ্যবর্তী স্পেসের মহাসম্প্রসারণ ধরা পড়েছিলো যেমন!
হাবল টেলিস্কোপে গ্যালাক্সিগুলি মধ্যবর্তী স্পেসের মহাসম্প্রসারণ ধরা পড়েছিলো যেমন!
শুধু বাংলার
একটি ছেলেকে ঈশ্বরের মতো সঙ্গায়িত করা যাবেনা, তাকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা, সে এখন
থাকে ইতিহাসের পাতায়!
স্বপ্নহীন
ঘুমে,
সম্ভাবনা অথবা
শূন্যে
মানবতায়!
সি সি ক্যামেরা!
একটি ছেলে, এলোমেলো চুল, যেনো তারা বিক্ষোভ করছে!
চুলের মাঝে মুক্তির আন্দোলন!
কেমন যেনো আছে-নাই ভাব!
সে কী ভাবে তার মস্তিষ্কে কী চলে!
অনুমান করা যায়না সহযেই!
গণনাতীত তার আচরণ,
নিস্তব্দতায় অসীম
মহাকাশের শূন্যতায় যেনো গ্রহ তারকার সাথে তার বিচরণ!
সংজ্ঞার উদ্ধে থাকে!
তবু ক্যাম্পাসের অজস্র মস্তিষ্ক তাকে গণনা করে বিভিন্ন
নামে, বিভিন্ন ব্যাখ্যায় অতিষ্ট হয়েছে ক্যাম্পসের মনস্তত্ব!
পরীক্ষার হলে সাধারণ একটি কলমের ডগায় রোবটের খুলি পরিধান
করিয়ে সাদা কাগজে লিখে যায় প্রশ্নের উত্তর!
অন্য শিক্ষার্থীদের চোখে পড়ে, রোবট!রোবট! একটি ধবনিতে সমস্ত
ক্লাস মুখরিত হয়ে উঠে!
ছেলেটি সেদিকে মন দেয়না, সে থাকে তার আপন জগতে, প্রতিটি
বর্ণমালার মাঝে
শুনে অসীমের বাণী, তা যতো তুচ্ছ হোক!
সে বর্তমান থাকে,
তার সীমানায় সকল কিছুর মাঝে সে বৃহত্তরকে উপলব্দি করে,
তাই কোনোকিছু তার কাছে সাধারণ নয়!
প্রতিটি মুহূর্ত অতিমানবীয় এক অসাধরণত্বে অসীমকালকে একসঙ্গে
করে ধরা পড়ে তার পর্যবেক্ষণে!
মাঝেমাঝে সে জানলার বাহিরে প্রবাহিত শহরে যতদূর চোখ যায়
উজাড় করে
দেয়!
আবার লিখে!
কলমের কাভারটি রোবটের খুলি অথবা অন্যকিছু তা পুরোপুরি
স্পষ্ট ছিলোনা, আর এ অস্পষ্টতা নিয়ে নেতৃত্বস্থানীয় দুটি দলের মধ্যে চিন্তার
সাম্প্রদায়িকতা তৈরি হয়!
ক্যাম্পাস জুড়ে হৈ হুল্লোড়, হট্টগোল, আহত হয় বিশ পঁচিশ,
একজনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক!
মিডিয়া এবং রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে যখন
ক্যাম্পাস পূর্ণ হলো তখন,
রোবটের খুলিটি ছিড়ে, ছেলেটি জন সাধারণের সামনে মুখোশ
উন্মোচন করলো একটি সি সি ক্যামেরার!
হ্যা এটি একটি সি সি ক্যামেরা ছিলো!
বঙ্গবন্ধু, তিনি কী শুধুই একজন মানুষ?
অতি-সাধারণ অথবা অন্যকিছু!
তা বাঙালীর কাছে আজো অপরিস্কার অপরিচ্ছন্ন!
চিন্তার সাম্প্রদায়িকতা দূর করে কেউ দেখেনি রোবটির খুলি
উন্মোচন করে কী ছিলো লিখা তাতে!
অসীমের
সীমা
স্বপ্ন দেখেছি, আমি প্রজাপতি হয়ে একটি নীল ফুলে বসে আছি!
একটি প্রজাপতি আমার মস্তিষ্কের তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ থেকে জন্ম হলো!
আমিও কী তারই স্বপ্ন?
আমি তাকে স্বপ্ন দেখছি আর আমি তারই স্বপ্ন?
ভাবতে, পারিনা, বেশিদূর!
ঘুমের মাঝে কত অচেনা মুখ ভেসে উঠে , অচেনা ভাষা, যে ভাষায়
কখনো কারো সাথে কথা হয়নি, সে ভাষায় ভাব বিনিয়ময় করি, কোটি কোটি খ্রিষ্ঠাব্দ পূর্বে
ফেলা আসা কোনো এক বৈশ্বিক নাগরীকের সাথে!
কে তুমি?
শুধু মুহূর্তের জন্যে,
মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রিক্যাল পালসেশন হয়ে ধরা দিলে, সময়ের
সীমায়?
বাস্তবতার গভীর স্তরে শুনেছি কারণের সম্পর্ক নেই, সে জগত
নন-লোকাল, তাই বুঝি কোটি কোটি খ্রিষ্ঠাব্দ অতীতের তরঙ্গও ভেসে উঠে বর্তমানে?
আমি আলোর গতিকে লঙ্গন করে বহুবিশ্বের সময়ের বিটে
অস্তিত্বশীল হয়ে উঠি!
একটি ক্ষুদ্র মানব দেহে!
কী বিষ্ময় লুকিয়ে আছে!
আমি এক অবারিত রহস্যের সমূদ্রে বিলীন!
এ কবিতার প্রতিটি বর্ণে
বিচরণ করে কার অনুভূতি আমি তাকে খুঁজি!
কে আমি?
আমি মহাকাশে অজানা গ্রহ নক্ষত্র থেকে ছুটে আসা কিছু আনবিক
কণা!
আর প্রকৃতির মোলিক কিছু বলের আন্তঃক্রিয়া!
এক অচেনা অজানা স্থান-কালহীন অজ্ঞাত রাশি আমি!
কোথাও নেই!
কবিতার প্রতিটি বর্ণমালা জেগে উঠে সম্ভবত সেই কাল্পনিক
মহাশূন্যতার মাঝেই!
তবে কেনো রাষ্ট্র, সমাজ?
তবে কেনো আমি বাংলার কথা বলি?
কেনো আমি ভাষা শহীদদের স্মরণে গভীর রাত্রিতে রক্তাত্ব হৃদয়ে
শহীদ মিনারে বিচরণ করি?
আহা!
কেউ বুঝলেনা!
আমার দেহের ৭ অক্টিলিওন পরমাণুর ইলেক্ট্রনের কক্ষপথে ৭
অক্টিলিওন আমি আবর্তিত হয়েও যেমন কোথাও নেই!
বাংলা আমার অস্তিত্বের বিকাশ,
সীমানা এ অসীমের।
গ্রন্থটি ডেডিকেট করা হলো- বাঙলার প্রায় সতেরকোটি গ্রহচারীকে...
Comments
Post a Comment