কোয়ারেন্টিন, সায়েন্স ফিকশন, লিখেছেন রিসাস

Flying Robot Butterfly - MetaFly - YouTube



জেনেটিক্যাল সাইকোলজি প্রসঙ্গে প্রিজম এবং রিসাসের মধ্যকার আলোচনা হেলিক্সে পড়ার পরপরই আমার  রিসাসের সম্পর্কে প্রথম ধারণা জন্ম হয় যদিও তাকে আমি কখনো দেখিনি।আমি আজ তার কাছে এসেছি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি কারণে যদিও আমি তাকে সে ব্যাপারে এখনো জানাতে প্রস্তুত নয়।আমরা আছি পৃথিবীর মানচিত্রের উপর পশুর মতো  শুয়ে থাকা একটি বিশাল পাহাড়ের চুড়ায় পিঁপড়ে সমান ক্ষুদ্র একটি ঘরে।পৃথিবীর শরীরে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ছয় মাস পূর্বেই রিসাস সম্পূর্ণ অজানা কারণে এ নির্জন পাহাড়টিতে আশ্রয় নিয়েছে।একটি ইলেক্ট্রনিক্স পাখি গাছের ডালে দাঁড়িয়ে ছিলো।কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করার পর বুঝতে পারলাম এটি একটি এ আই।সাধারণ কোনো পাখি নয়।পাখিটির মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ডিস্ক ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত।পাখিটি নিজেই জীবন্ত একটি গুগল এনসাইক্লোপিডিয়া।রিসাস টেলিস্কোপের ভেতর দিয়ে কোটি কোটি আলোক বর্ষ অতীতের মহাকাশের ইতিহাস ভ্রমণ করছে, ঐতিহাসিক নক্ষত্রগুলিতে যখন রিসাসের মস্তিষ্কের চেতনা অস্তিত্বশীল হয়ে উঠলো ঠিক তখন আমি শুনতে পাই রিসাস পাখিটির সাথে নিখাদ বাংলা ভাষায় কথা বলছে এবং মহাকাশ সংক্রান্ত তথ্যগুলি সংগ্রহ করছে।পাখিটি তার নিজের তৈরি।ইন্টারনেট থেকেই সে পাখিটির প্রযুক্তি সংগ্রহ করেছে, এমন একটি পাখি তৈরি
করার সিদ্ধান্ত রিসাস কোথা থেকে পেলো তা জানিনা!!পাখিটিকে রিসাস প্রশ্ন করলো, রেট্রো কজালিটি তত্বটি কে আবিষ্কার করেছে?সে জবাব দিয়েছিলো, জন হুইলার!এবং কোন ওয়েভ সাইট থেকে সে তথ্য সংগ্রহ করেছে সে ওয়েভের সকল ইনফরমেশন একে একে রিসাসকে বলতে শুরু করে।একটি যন্ত্রের মুখে বিরাট বিরাট তত্ব কথা শুনতে বিষ্মিত না হয়ে পারা যায়না কিন্তু পাখিটি এত শক্তিশালী ছিলোনা, তার মধ্যে কৃত্রিম ইচ্ছার স্বাধীনতা সৃষ্টি করা হয়েছে, সে তার পছন্দ মতো ওয়েভ সাইট পড়তে পারতো, এটাই তার স্বাধীনতা কিন্তু তার স্বাধীনতারও একটা এলগোরিদম আছে, তার আচরণ যতটা র‍্যান্ডমই মনে হোক না কেনো, সে র‍্যান্ডমনেসের মধ্যেও একটি শৃংখলা আছে আর পাখিটির মেন্টাল এলগোরিদমই হয়তোবা এমনভাবে পোগ্রাম করা হয়েছে যেনো দেখলে মনে হয় তার ইচ্ছাশক্তি মানুষের মতোই ফ্লেক্সিবল।আমি খুবই বিষ্মিত হয়েছিলাম।পাখিটি যখন ফেসবুকে প্রবেশ করে তখন তার সাইকোলজি ফেসবুকে পরিণত হয়, সে যখন টুইটারে প্রবেশ করে তখন সে নিজেই
টুঁইটার হয়ে যায়!


আমরা মানুষরাও কী ঠিক এমন?আমার জ্ঞানের পরিধি খুবই সীমিত, আর এত বেশি তথ্য উপাত্যের ভিত্তিতে আমি চিন্তাও করতে পারিনা।প্রিজম পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িতে রিসাসের এ আই পাখিটির সাথে কথা বলছে, বিভিন্ন ইনফরমেশন সংগ্রহ করছে আর রিসাসের চোখের রেটিনা মিলিয়ন মিলিয়ন কিলোমিটার দূর থেকে ছুটে আসা আলোক তরঙ্গের সিড়ি বেয়ে মহাকাশের গভীর থেকে গভীরতর অতীতে ছুটে চলছে, তার চেতনা জাগ্রত হয়ে উঠছে কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের নক্ষত্রগুলিতে যে নক্ষত্রগুলি এখন আর মহাকাশে নেই।রিসাসের চেতনায়
টেলিস্কোপ যখন অস্তিত্বহীন তারকাদের অস্তিত্বশীল করে তুলছিলো ঠিক তখন আমি এ আই এর কাছ থেকে
আমার ফোনে ইন্টারনেট কানেক্ট করে প্রিজম এবং রিসাসের অতীতের সেই কনভারসেশনটি পড়তে থাকি;

প্রিজম: রিসাস!তোমাকে একটা প্রশ্ন করি!হাসবিনা কিন্তু!আচ্ছা!শুনো...আইনস্টাইন বলেছিলেন মহাবিশ্বের সবকিছু প্রি-ডিটারমাইন্ড!এ নিয়ে ব্লগে তোমার একটি আর্টিকেলও আছে!আমি মিসিও কাকুর দু-মিনিটের একটি লেকচার শুনেছি যেখানে তিনি বলেছিলেন, আমি যে তোমার সাথে এখন এ মুহূর্তে কথা বলছি এ ঘটনাটি নাকি বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিলো,তার মানে আমি তোমার সাথে এখন কথা বলছিনা আমি তোমার সাথে বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পূর্ব থেকেই কথা বলছি, তোমাকে এই কমেন্টসটি করার দশদিন আগেও যদি তুমি আমার ব্রেন নিউরনগুলির একটিভিটিজ মনিটর করতে তবে এই কনভারসেশনটি অবিকল খুজে পেতে এবং তুমি যদি আমার,মস্তিষ্কের এটমদেরও ম্যাপিং করতে পারো তবে তুমি আমার এ কমেন্টসটি করার বিশ বছর আগেও বুঝেফেলতে পারতে যে আমি তোমাকে কমেন্টসটি করবো কারণ আইনস্টাইন মনে করতেন অতীত-বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সকল ইনফরমেশন তোমার ফেসবুকের টাইমলাইনের মতোই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভের মধ্যেএক একটি পিকোসেকেন্ড করে এন্ট্রি করা আছে যার উপর ভিত্তি করে তিনি বলেছিলেন টাইম ট্রাভেল প্রযুক্তির কথা!আইনস্টাইন মনে করতেন যে যেহেতু প্রত্যেকটি মুহূর্তই নির্ধাতিত সেহেতু প্রত্যেকটিমুহূর্তেই যাওয়া সম্ভব!এক মিলিয়ন বছর অতীতেও যাওয়া সম্ভব আবার ইচ্ছে করলে ভবিষ্যতে!কিন্তু আমার

প্রশ্ন সেইটা না!আমার প্রশ্ন হলো জেনেটিক্স এবং জিনোমিক্স আমাদের বলে যে আমি এবং আমার মস্তিষ্কের নিউরাল সিষ্টেম এবং আমার ফিফথ সেন্স তথা চোখ,কান,নাক কেমন হবে তা আমার ডি এন এ হেলিক্সেই লিখা ছিলো, তার মানে আমি মহাবিশ্বকে কিভাবে ফিল করবে সেটা বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পূর্ব থেকেই নির্ধারিত, আমার জেনেটিক্যাল কোড পড়লেই জানা যাবে আমি কেনো এ মহাবিশ্বটাকেই বুঝতে পারছি মেটা মহাবিশ্বকে রিয়েলাইজ করার বদৌলে যেটা তুমি আমাকে বলেছিলে সেদিন!এটা কী আসলেই সত্য যে আমাদের ডি এন এ হেলিক্স নিজেই ওয়েভ ফাংশন কলাফস করছে?আমার ডি এন এ হেলিক্সের কিছু না কিছু ভূমিকা তো থাকবে ওয়েভ ফাংশন কলাফসে!আমাদের ডি এন এ ই বলে দিচ্ছে আমরা এই থ্রিডি ইউনিভার্সকেই দেখবো!এটাই তো তোর কথা ছিলো,
তাই তো?

রিসাস: এটা আমার একটি হাইপোথেসিস ছিলো।এবং ম্যাকফোডেন আমাদের ডি এন এর মলিকিউলের মধ্যে সুপারপজিশনও আবিষ্কার করেছেন, আমার মনে হয়েছে যেহেতু সুপারপজিশন থেকেই ওয়েভ ফাংশন কলাফস করে মলিকিউলার ইনফরমেশন তৈরি হয়, অতএব আমাদের ডি এন এ যা আমাদের জেনেটিক্যাল বুক সেটি এমনভাবে কলাফস করেছে যাতে করে আমাদের বায়োলজি এমনভাবে প্রস্তুত হয় যা শুধুমাত্র মেটা ইউনিভার্সের মধ্যে আমাদের এ থ্রিডি ইউনিভার্সকেই পারমিট করে!যাইহোক!আমি এতবেশিকিছু জানিনা!এটা শুধু আমার ভাবনা!যা ঝাপসা!অসম্পূর্ণ এবং হাস্যকরও হতে পারে!হয়তো যারা বুঝে তারা আমার অজ্ঞতা দেখে হাসবে!এটাকে সিরিয়াসলি নিসনা বা নিওনা!আমরা কেনো স্বপ্নে আকাশে উড়ি, সেদিন তুমি আমাকে এমন একটি প্রশ্ন করেছিলে
কিন্তু আমি উত্তর দেইনি কারণ উত্তরটা শুনলে তুমি হয়তো হাসতে! 

প্রিজম: এটা তুমি আমার ব্রেনে যেভাবে ইনসেপ্ট করেছো, আমার মনে হয়না সহযে বের হবে!আর হ্যা আমারকলেজের বান্ধবী যাকে আমরা প্রাঙ্ক করে ক্যান্ডাস্টাইন ডাকতাম সে আমাকে প্রশ্নটি করেছিলো!কেনোস্বপ্নে আমরা উড়ি!তুমি বলেছিলে যে আমাদের মন তৈরি করেছে আমাদের হেলিক্স এবং ন্যাচারাল সিলেকশন,তাহলে কী ব্যাখ্যাটা জেনেটিক্যাল?

রিসাস: ত্রিপলির ছাত্রদের মধ্যে তুমি অন্যরকম ছিলে বিশেষ করে প্রেডিকশনের ক্ষেত্রে আমি সেটা জানি এবং ক্যান্ডেস্টাইন এখন ইংল্যান্ডে সেও আমাকে মাঝামাঝে একসময় বলতো তোমার কথা।আমার সম্পর্কে তোমার অনেক ধারণা সঠিক ছিলো, বিশেষ করে আমার নাস্তিক্যের প্রতি ভালোবাসা জন্মানোর বিষয়ে।হ্যা!ঠিক বলেছো, ন্যাচরাল সিলেকশন এবং আমাদের হেলিক্সই আমাদের স্বপ্নের জন্যে দায়ী মনে করেছিলাম আমি।এবং তুমি হয়তো জানো আমাদের মানসিক সমস্যাগুলিও এভোলিউশনাল এডাপশন এবং যেমন- বাইপোলার ডিজ-ওর্ডার এবং
ডিপ্রেশন এবং সিজোফ্রেনীয়া এবং ম্যানিক ডিপ্রেশন ব্লা ব্লা ব্লা... সাম্প্রতিক আবার গবেষকরা
সিজোফ্রেনীয়ার জিন আবিষ্কার করেছেন যাকে বলা হয়  C4।নিউরনের মধ্যকার সিনাপটিক প্রসেস যেটাকে নাকি synaptic pruning বলে এই নেটওয়ার্কিং এ সমস্যা হলে সিজোফ্রেনীয়া দেখা দেয়।তুমি হয়তো শুনেছো যারা সিজোফ্রেনীয়া আক্রান্ত তারা এক্সট্রারনাল এবং ইন্টারনাল রিয়েলিটির মধ্যে পার্থক্য বুঝেনা এবংসিজোফ্রেনীয়া আক্রান্তদের বিভিন্ন থট ডিজ-অর্ডার দেখা দেয়! যেমন বিভিন্ন রকমের থট ডিজ অর্ডারের মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো Alogia, Blocking or thought blocking, Circumstantial speech, Clanging, Echolalia, Evasion, Neologisms ইত্যাদি।টানজেন্টিয়াল ডিজ-অর্ডার আক্রান্তদের যদি তুমি প্রশ্ন করো, আপনি কোথায় থেকে এসেছেন?তারা তোমাকে উত্তর দেবে, আমার কুকুর ইংল্যান্ড থেকে এসেছে!

প্রিজমঃ হাহাহ!আচ্ছা তুমি সেদিন আলোচনা করেছিলে কৈ মাছদের বিবর্তনীয় মিচম্যাচ নিয়ে।যখন আকাশে বিদ্যুৎ চমকায় তখন কৈ মাছগুলি পানি থেকে উঠে আসে এবং প্রজননের জন্যে নতুন কোন সোর্স অনুসন্ধান করে।কিন্তু তারা জানেনা যে বিজলী চমক মানেই বৃষ্টি নয়।কারণ অনেকসময় বিদ্যুৎ চমকায় ঠিকই কিন্তু বৃষ্টি হয়না অথচ কৈ মাছগুলি ভুলক্রমে অনেকসময় রাস্তা এবং মানুষের ঘরে হাঁটাহাঁটি করে এবং মানুষ ও অন্যন্য প্রাণীসের শিকার হয়!


রিসাসঃ হ্যা আমি বলেছিলাম।কারণ বিবর্তন মিলিয়ন বছর পর্যন্ত তাদের মধ্যে একটি নিয়ম আপডেট করেছে যে আকাশে বিজলি চমকানোর অর্থই হলো বৃষ্টি কিন্তু অনেক সময় বিজলি চমকায় ঠিকই কিন্তু কৈ মাছগুলি বুঝতে পারেনা এটা আসলে বৃষ্টির সিগনাল নয়।এটা অনেকটা জেনেটিক্যাল কন্ডিশনাল রিপ্লেক্সিং!তুমি নিশ্চয় কন্ডিশনাল রিফ্লেক্সিং সম্পর্কে ভালোভাবেই জানো!


প্রিজনঃ হ্যা, সাইকিয়াট্রিস্ট আইভ্যান পাবলভ এরকম একটি গবেষণা করেছেন, ঐ যে কুকুরের ঘন্টা...
রিসাসঃ একদম সঠিক।আসলে বিবর্তনীয় মনবিজ্ঞান আমাদের বলছে আমাদের মানসিক সমস্যাগুলিও আমাদের বিবর্তনীয় অভিযোজন।এগুলি আমাদের টিকে থাকার ক্ষেত্রে বাড়তি সহযোগীতা করে।যেমনঃ ম্যানিক ডিপ্রেশন আক্রান্ত রোগীরা অনেক ইন্টেল্যাকচুয়াল হয়।সাধারণ ডিপ্রেশনের সময় আমরা শরীরের নিরাসক্তি অনুওভ করি, কোনোকিছু করতে ভালোলাগেনা, কারোসাথে কথা বলিনা যেমন ক্যান্ডেস্টাইন যে সোসাইটির সাথে মিশতোনা।মূলত ডিপ্রেশন হয় তখন যখন শরীরে ভাইরাস সংক্রমিত হয় আর এ জন্যে তাদের জেনেটিক্যাল কোডিং এমনভাবে করা হয়েছে যেনো তারা ডিপ্রেশনে থাকে, অন্যদের সাথে না মেশে, আর এতে করে ভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা কমে যায়,
শক্তি কম খরচ হয়, একাকীত্ব তৈরি হয়, জীবন ও জগতকে গভীরভাবে জানার সুযোগ তৈরি হয় আর এভাবে তারা নিজেদের আপডেড ও ক্রিয়েটিভ করে তোলে যা তাদের টিকে থাকার ক্ষেত্রে উপযোগ দিয়ে থাকে কিন্তু কখনো কখনো কৈ মাছের মতোই তাদের এ নিয়ম মিসফায়ারিং হয় এবং ডিপ্রেশন আক্রান্ত ব্যাক্তিরা সুইসাইড করে!সিজোফ্রেনীয়া ডিজিজে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা অনেক বেশি সৃজনশীল হয়, তাদের ম্যাথমেটিক্যাল সেন্স অনেক

 

রিসাসের মধ্যে আমি কোনো অসাধারণত্বের অনুভূতি দেখিনি, আমার মনে হয়না সে নিজেকে কোনোকিছু মনে করে।তার সবকিছুর মধ্যে এক বিষ্ময়কর সারল্য।আমি একজন ঈশ্বরে বিশ্বাসী, আমি মনে করি অবিশ্বাস থেকে বিশ্বাস আমার জন্যে বেশি উপযোগী।আমরা আমাদের জীবনের ভবিষ্যতকে নিশ্চিত করে জানিনা, তাই আমরা আমাদের জীবনে ভালো কিছু ঘটবে বলেই বিশ্বাস করি, এ বিশ্বাস অন্ধত্ব নয়, এ বিশ্বাস হলো সম্ভাবনার ভাষা, আমি আমার জীবনে ভালো কিছু ঘটার সম্ভাবনাকে বিশ্বাস করেছি এতে তো দোষের কিছু নেই!ততক্ষণে রিসাস টেলিস্কোপ থেকে চোখ সরিয়েছে এবং শান্তস্বরে আমাকে ডেকে বলে টেলিস্কোপে চোখ রেখে মহাকাশে উড়ে যেতে, আমার মস্তিষ্কে সমস্ত
মহাকাশ অন্যরকম বিশালত্ব এবং গভীরতা নিয়ে উপস্থিত হয়, গ্যালাক্সিতে এর পূর্বে এত গভীরতা আমি কখনো দেখিনি!রিসাস বলল, শুভ সন্ধ্যা, তুমি যে মহাকাশের গভীরতায় হারিয়েছো, সে মহাকাশ আমার পক্ষ থেকে তোমার জন্যে উপহার!এবার প্রিজম সুযোগ পেলো কথা বলার,রিসাস এ ছেলেটার নাম অজ্ঞাত।অজ্ঞাত আমার বন্ধু।খুব ছোটবেলা থেকে আমার অজ্ঞাতের সাথে পরিচয়।সে একটি বিশেষ সমস্যায় পড়ে তোমার কাছে এসেছে।তোমাকে এ সমস্যার সামাধান করতেই হবে।রিসাস বলল, সমস্যার মধ্যেই সমস্যা সামাধানের ইনফরমেশন পাওয়া যায়।আমাকে
তো প্রথমত বলতে হবে কী সেই সমস্যা যার জন্যে এ দুর্গম পাহাড়ে আমার এ ক্ষুদ্র মহাজাগতিক ঘরে তোমরা ছুটে
এসেছো?

আমি ইতস্তত করে বললাম, দেখুন স্যার।সমস্ত পৃথিবীতে করোনার সংক্রমিত হয়েছে।রাষ্ট্র এখন লকডাউন।সবাই একটি অদৃশ্য নিয়মতান্ত্রিকতার মধ্যে একত্রিত হয়েছে, আমরা জানিনা পৃথিবীর কী হয়েছে কিন্তু একটি মাইক্রোস্কোপিক ভাইরাস যখন সমস্ত পৃথিবীর মস্তিষ্ককে একটি ফ্রিকোয়েন্সিতে রিজোন্যাট করে রেখেছে, যখন সমস্ত বিশ্বজুড়ে একটি কমন সাইকোলজি প্রভাব বিস্তার করছে ঠিক তখন আমার মনে হচ্ছে এ সাইকোলজি কেউ পূর্ব-পরিকল্পিতভাবেই তৈরি করেছে, বিশ্ববাসীর মনকে পড়ার জন্যে, তিনি ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিস্ট!

হুম...তারপর?

স্যার, ইতালীতে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর আটজন ব্যাক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে কারণ তাদের দ্বারা অন্যরা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।আমাদের দেহের কোষ গুলিতে করোনা প্রবেশ করার পর আমাদের দেহের টি-কিলার সেল এবং নিউট্রোফিলস আক্রান্ত কোষ হত্যা করে অথবা সুইসাইড করার নির্দেশ দেয় যাতে করে তাদের

দ্বারা অন্যান্য কোষগুলিতে ভাইরাস তার জেনেটিক্যাল ম্যাটার প্রবিষ্ট করতে না পারে,স্যার আমার কী মনে হয় জানেন?
বলুন,

আমার মনে হয় আমাদের ইমিউন সিষ্টেম আমাদের জেনেটিক্যাল কোডকে রক্ষা করার জন্যে ভাইরাসদের জেনেটিক্যাল ম্যাটার দ্বারা আক্রান্ত কোষগুলিকে হত্যা করে এবং কখনো কখনো যখন ইমিউন সিষ্টেম প্রায় সমস্ত কোষগুলিকেই হত্যা করে ফেলে তখন নিজেই নিজেই মারা যায় বা আমাদের ইমিউন সিষ্টেম নিজেকে নিজেই হত্যা করে!আমার প্রশ্ন হলো, আপনার কী মনে হয় যে করোনা ভাইরাস প্রকৃতির পক্ষ থেকে টি-কিলার সেল বা নিউট্রোফিলসের মতো সেন্ড করা হয়েছে?অথবা আপনার কী মনে হয়না যে যারা ধর্মীয় ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের হত্যা করা উচিত?আমাদের ইমিউন সিষ্টেম যদি আমাদের জেনেটিক ম্যাটারকে রক্ষা করার জন্যে টি-কিলার সেলকে ব্যাবহার করে তবে বিশ্বের সাইকোলজি থেকে ভার্চুয়াল ভাইরাস মুছে দেয়ার জন্যে কী করোনার প্রয়োজন ছিলোনা?

হুম, হয়তোবা!বিলগেটস তো বলেছেন, এটাকে পৃথিবীর জন্যে ডিজেস্টার মনে না করে এটাকে তিনি গ্রেট ক্যারেক্টার
হিসেবে দেখতে চান।

হ্যা, আমার কাছে মনে হচ্ছে বিশ্বের মেন্টাল ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তিত হয়ে গেছে, এবং আমাদের এই
ফ্রিকোয়েন্সির ভাষা বুঝতে হবে এবং এতে রিজোন্যাট হতে হবে!আমি মনে করি, প্রতি বছর অন্তত তিন মাস সমস্ত বিশ্বকে লকডাউন করে রাখা উচিত, শুধু ফিজিক্যাল কমিউনিকেশনকেই নয়, এমনকি মেন্টাল কমিউনিকেশনকেও,আমাদের ফিফথ সেন্স শুধু মহাবিশ্বকে পর্যবেক্ষণ করবে আর অন্য সবকিছু লক-ডাউনে রাখা হবে!এতে করে প্রকৃতি তার নিজের মতো করে মানবীয় হস্তক্ষেপবিহীন অবস্থায় বিকশিত হবে।করোনা আমাদের বলছে, একাকীত্বের কথা, নিঃস্বঙ্গতার কথা, যেনো আমরা নিজেদের সাথে নিজেরা মিশি, নিজেকে নিজে পর্যবেক্ষণ করি,
করোনা বলছে সক্রেটিসের কথা!

হুম, নিজেকে জানো?

হ্যা... কিন্তু আপনি কী ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন?

দেখুন, আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি বা না করি মহাকর্ষের নিয়ম মহাবিশ্বে একই থাকে, বোলজম্যান কনস্ট্যান্ট
চেঞ্জ হয়না!

ব্বাহ!দারুণ, বলেছেন!আমি ধর্মগ্রন্থে বিশ্বাস করি, আমি বিশ্বাস করি যে বাইবেল এবং কোরান ঐশ্বরিক! সেই ঈশ্বর মানুষের মতো হলেও আমার তাতে কিছু আসা যায়না কিন্তু আমি প্রথাগত ধর্মে বিশ্বাস করিনা।অসীম ঈশ্বরের চিন্তাগুলি কোরানে নক্ষত্রের মতো খোদিত হয়ে আছে।ধর্মগ্রন্থ হলো ঈশ্বরের মনের প্রতিফলন।

হয়তোবা!কিন্তু আপনাদের ঈশ্বর অসীম এবং আমার থ্রিডি মস্তিষ্কে অসীমের অনুভূতিও থ্রিডি।ঈশ্বর যদি অসীম হয় এবং কোরান যদি তারই মন হয় তবে সেই মনকে আমার থ্রিডি ব্রেন বুঝতে পারবেনা।সেটাকে বোঝার জন্যে হাইপার ডায়মেনশনাল মস্তিষ্ক প্রয়োজন, যেহেতু সেই মস্তিষ্ক আমার নেই অতএব কোরান ঈশ্বরের রচিত কীনা তা জানার কোনো উপায়ও আমার কাছে নেই।আপনি যেহেতু আমাকে সেই অসীম গ্রন্থের কথা বলছেন, তার মানে আপনি এটাই বোঝাতে চাচ্ছেন আমি অসীমকে বোঝার ক্ষমতা রাখি, আমার মন থ্রিডিকে ক্রস করতে পারে?আপনি
যদি মনে করেন যে একমাত্র ঈশ্বরই অসীম তবে কোরান একমাত্র ঈশ্বরের পক্ষেই বোঝা সম্ভব।আমি মনে করি, ঈশ্বরের নিজেরই কোরান পাঠ করা উচিত এবং নিজের উপাসনা নিজেকেই করা উচিত, যেহেতু সে অসীম, অতএব তার পাশে আমরা কেউ নেই, তবে তার একাকীত্ব সেই দূর করুক।

আপনি কী আমাকে উপহাস করছেন?
না!আমি আপনাকে উপহাস করছিনা!
স্যার, একটা উদ্ভট প্রশ্ন করবো?
হ্যা, কেনো নয়!!
স্যার, করোনা ভাইরাসের পক্ষে র‍্যাপিডলি জেনেটিক্যাল সিকোয়েন্স পরিবর্তন করে মানুষে রুপান্তরিত হওয়া
সম্ভব?
হয়তোবা!কিন্তু আপনি আমার কাছে কেনো এসেছেন?
লকডাউনের এ দিনে আমি আপনাকে কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যাবো...
আচ্ছা!
প্রিজম এতক্ষণ চুপ করে ছিলো, তারপর আকষ্মিক বলল, ব্যাপারটা আসলে তেমন নয় রিসাস।তোমাকে আমরা এমন
একজন মহিলার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই যিনি এখন কোয়ারেন্টিনে।তোমাকে কিছুদিন তার সাথে থাকতে হবে
এবং তার মস্তিষ্কের কিছু সিক্রেট আমাদের জানাতে হবে।রিসাস হিউম্যান সাইকোলজির এভোলিউশনাল
এক্সপ্লেইনেশন নিয়ে কাজ করছে, তাই সে না করলোনা, আমাদের প্রস্তাবে সে সম্মত হলো।

পর্ব-২

এ আই গুগল ম্যাপিং এর মাধ্যমে লোকেশন ট্র্যাক করলো এবং রিসাস তারই নির্দেশনায় ড্রাইভিং করতে শুরু করলো।তারা একটি পাহাড়ের পাদদেশে থামলো, ছোট্ট একটি পাহাড়ের টুকরো শুয়ে আছে আর যার উপর বসে আছে একটি দোতালা বাড়ী।রিসাস উঠোনে পা রাখার সাথেসাথেই একটি নারী কন্ঠ ভেসে আসে, শুনে মনে হলো তার বয়স ২৫ অথবা ২৬।তুমিই রিসাস?সেই বিখ্যাত সাইকিয়াট্রিস্ট, যে ইতমধ্যে অনেকের মনে তার

অনন্যতার জন্যে জায়গা করে নিয়েছে!!যাইহোক, এসো, তোমাকে একটি গল্প বলি, বোসো।ঘরের সমস্ত দেয়ালে রক্তাত্ব হাতের ছাপ, মানুষের কঙ্কাল এবং অনেক প্রাচীন কিছু প্রাণীর ফসিল,
এ ঘরটির ভাইব সম্পূর্ণ আলাদা, সম্পূর্ণ ঘরটির রঙ ধবধবে সাদা,সোফার রঙ সাদা,ফুলের টব সাদা, বিছানা সাদা, এমনকি মেয়েটিও সাদা শাড়ী পড়েছে।কিন্তু সম্পূর্ণ ঘরে লাল অথবা সবুজ রঙের কোনোকিছুর অস্তিত্ব নেই।মেয়েটির মস্তিষ্কের সকল রহস্যময় চিন্তাগুলি এ বিল্ডিংটিতে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।ঘরের দেয়ালে একটি কবিতা রিসাসকে বিষ্মিত করলো, কবিতাটির নাম ‘’তোমার পা’’, কবিতাটি লিখেছেন, পাবলো নেরুদা!এছাড়া দেয়ালের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দ্যা কার্ড প্লেয়ার অথবা লুসিয়ান ফ্রয়েডের মতো বিখ্যাত কিছু
ছিত্রকল্প।
মেয়েটি নিস্তব্দতার ভঙ্গ করে শান্তস্বরে বলে উঠলো, আমি জিতু।

হ্যা, এবং আমি এ মুহূর্তে আপনার মস্তিষ্কের নিউরন সেলে বসে আছি।

জিতু মনে হয় কিছুটা বিষ্মিত হলো, তার চেহারায় অন্যরকম এক মাধুর্য, কঠিন দৃষ্টি, শরীরে গোলাপের মতো রঙিন একটি প্রভা ছড়িয়ে আছে, হাসিটি অদ্ভুত সুন্দর।রিসাস প্রবল সৌন্দর্যকে অবহেলা করে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।জিতু বলল, আপনি আমার মস্তিষ্কে বসে আছেন, বুঝিনি ব্যাপারটা!
বলছি, সমস্ত বিল্ডিং এ আপনার সাইকোলজি বাস্তবায়িত হয়েছে, এর সম্পূর্ণটাই আপনার মন, আমি আপনার মনের ভেতর প্রবেশ করেছি, কোন ঘরে নয়।
হাহাহ, তাই বলুন!
রিসাস!আপনার তোমার নামের অর্থ কী?
এটমের নাম এটম তাকে ভাঙলে ইলেক্ট্রন-প্রোটন এবং নিউট্রন পাওয়া যায়, আমার চরিত্রকে বিশ্লেষণ
করলে যা কিছু পাওয়া যাবে সেটাই আমি, আমার নামের অর্থ আমি নিজেই।
ওহ!
আচ্ছা!আপনার গল্পটা বলুন...
শুনুন তবে, গত কয়েকদিন ধরে আমি বিভিন্ন বিষয় স্বপ্ন দেখছি কিন্তু আজ আমি একটি অদ্ভুত স্বপ্ন
দেখেছি।অনেক মাছ!যাদের আমি খাবার দিচ্ছি, ছোট্ট একটি পুকুর।তারা এসে সেখানে ভীড় করেছে।আমি
ভুলক্রমে এক টুকরো পাওয়ারুটি পুকুরের পাড়ে ফেলি, আর সমস্ত মাঝ প্রতিযোগীতা করে পুকুরের পাড়ে উঠে আসে এবং একে অপরের শরীরের উপর ঠাসাঠাসি করে বিশাল একটি মাঠ করে ফেলে, আমি তাদেরকে খাবার দিলে সেটা ঐ মাঠের মাঝখানে পড়ে, ওরা এদিক ওদিন নড়তেও পারছেনা, আর খাদ্যও গ্রহণ করতে পারছেনা!হাহাহ!!
এটাই কী আপনার গল্প?
হুম!
আপনি আমাকে কেনো ডেকেছেন?
তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে!

শুধু এতটুকুই?
হ্যা!
মেয়েটি রিসাসের পাশে এসে বসে এবং গভীর দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকে, রিসাস তার নিশ্বাসের ঘ্রাণ টের পাচ্ছে, মেয়েটি রিসাসের মুখ স্পর্শ করে এবং গভীরভাবে।মেয়েটির শরীর থেকে একটি ঘ্রাণ নির্ঘত হচ্ছে, সেটি রিসাসের মস্তিষ্ককে ঘুম পাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে এবং অন্যদিকে মেয়েটি রিসাসকে গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে এবং চুম্বন করে।আকষ্মিক রিসাস বুঝতে পারলো, তার শরীরে কোনো চেতনা কাজ করছেনা, সে শুধুমাত্র মানসিকভাবে জীবিত।অনেক চেষ্টা করেও সে কথা বলতে পারছেনা, তার কাছে মনে হচ্ছে তার সমস্ত শরীর জমাটবদ্ধ হয়ে গেছে!অনেক মানসিক যুদ্ধের পর আকষ্মিক সে দেখলো কিছু অদৃশ্য মানুষ এবং অবাক হয়ে দেখলো সে তার শরীর থেকে আর একটি সুক্ষ্ম শরীর শূন্যে ভেসে যাচ্ছে এবং একটি টানেলের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে, ঠিক যেনো ওয়ার্মহোল।রিসাস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্টের সহযোগীতায় কোন একভাবে শারীরীক চেতনায় ফিরে আসলো এবং দেখলো জিতু যেখানে বসে ছিলো ঠিক সেখানেই বসে আছে, রিসাসের শরীর খুবই ক্লান্ত এবং দূর্বল তার ঠোট দিয়ে কথা বের হচ্ছেনা এখনো!প্রিজম পাহাড়ে রিসাসের ক্ষুদ্র ঘরটিতেই থেকে গেছে কোনো এক অদ্ভুত কারণে শুধু আমি বর্তমানে রিসাসের পাশে আছি কিন্তু রিসাসকে এমন অস্বাভাবিক
পরিস্থিতিতে দেখবো আশা করিনি।

রিসাস!
বলুন জিতু।
আপনি আমাকে ‘’তুমি’’ করে বলতে পারেন।
না!আমি অভ্যস্ত নই!
আপনি একজন সম্মানীয় ব্যাক্তি,হয়তোবা নোবেল প্রাইজ পেতে পারেন ভবিষ্যতে, আইনস্টানের মতোই
আপনার চিন্তা হাজার হাজার বছর এ মহাবিশ্বকে করোনার মতো শাসন করবে!কিন্তু আমি আপনাকে তুমি বলে সম্বোধন করছি।স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ আসলেও আমি তাকে তুই করেই সম্বোধন করতাম, এটা আমার ক্যারেক্টার!

তুমি ঠিক বলেছ, তুমি আমার সাইকোলজির ভেতরেই আছো , আমি ইচ্ছে করলে তোমার জেনেটিক্যাল
সিকোয়েন্সও পরিবর্তন করে দিতে পারি, করোনা ভাইরাসের মতোই আমি মাইক্রোস্কোপিক।

আচ্ছা!আপনি কী আমাকে সম্মোহিত করার চেষ্টা করছেন?

না!তোমাকে সম্মোহিত করবো, কেনো তুমি তো মৃত, তুমি সেটা জানোনা?

এই মাত্র, শুনলাম!

তুমি এখন আমার মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রিক্যাল ইমপালস, আমি তোমাকে স্বপ্ন দেখছি!
হয়তো!

আমার একজন বোন ছিলো, যাকে কিছু অশুভ আত্মা কিডন্যাপ করে এবং ধর্ষণ করে, সাতজন মিলে তাকে গণধর্ষণ করেছিলো।
তারপর?
তাকে আমরা প্রায় সাতদিন খুঁজে পাইনি, পরে এলাকার এক মৌলবি তাকে উদ্ধার করে দিয়ে যায়, আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না যে, আমার বোনের কন্ঠস্বর পুরুষের মতো হয়ে যেতে পারে, সে নিজের মুখে স্বীকার করেছিলো, তাকে সাতজন জ্বিন ধর্ষণ করেছিলো এবং সে বিশ্বাস করতো সে ভূতের বাচ্ছার মা হবে।কিন্তু এলাকার কিছু শিক্ষিত যুবক মনে করতো, মেয়েটির সাথে মসজিদের ঐ ইমামের খারাপ সম্পর্ক ছিলো, সাতদিন ঐ মেয়েটি ইমামের সাথেই ছিলো, এবং ইমাম সাহেব তাকে ধর্ষণ করেছিলেন।তাদের বিশ্বাস ছিলো, আমার বোন অনুকে উদ্ধারের সম্পূর্ণ প্রকৃয়াটি ছিলো একটি ব্রেনওয়াশ, মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যাবহার করে তারা তাদের সম্পর্কের গোপনীয়তা রক্ষা করেছিলো!কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে অনু তার নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়, তার পিঠ, যোনি এবং নিতম্বের চামড়ায় জঘণ্য অবস্থা তৈরি হয়।রিসাস, এ আই এর কাছে কয়েকটি প্রশ্ন করে।তারপর জিতুকে বলে, আপনি শেষ করেছেন?না!শেষ হয়নি!তারপর তার বিয়ে হয়, এবং বিভিন্ন সময় পরাবাস্তব জগত থেকে অতি-মানবিক সত্তারা এসে তাকে
ধর্ষণ করে।একদিন সে কী করলো জানো?
না, জানিনা!
ঠিক আছে, অবশিষ্ট গল্পটি আপনাকেই তৈরি করতে হবে!
আপনার ডান হাতের দুটো আঙুলে কোন নখ নেই?কারণটা কী আমি জানতে পারি?
না!জানতে পারেন না!
আচ্ছা!ঠিক আছে, আমি আসছি।
না, কোথাও যাবেনা তুমি...
তো?
চলো, আমরা দুজন পরমাণু থেকেও ক্ষুদ্র হয়ে যাই, যেনো লার্জ হেড্রন কোলাইডর দিয়েও খুজে না পায় কেউ
আমাদের! সে জগতে তুমি আর আমি একা, সিঙ্গুলারিটি পয়েন্টের মতোই একা!
শুনুন জিতু, আটানব্বই মিলিয়ন লাইট ইয়ার্স আয়তনের এ মহাবিশ্বে আমরা এতটাই ক্ষুদ্র যে কোটি কোটি
আলোকবর্ষ দূর থেকে আমি নিজেই একটি শূন্যস্থান,মহাকাশের মতো শূন্যস্থান , যেনো আমরাই মহাকাশ!

প্রিজম একজন বৃদ্ধকে নিয়ে এসে উপস্থিত হয়েছেন জিতুর ঘরে।রিসাস এবং তার ইলেক্ট্রিক্যাল পাখি ড্রয়িং রুমে বসে আছে।লোকটির বয়স সত্তরের কাছাকাছি।রিসাস!আমি আপনার নাম শুনেছি গুগলের কাছে। গুগল যেহেতু জানে আপনি কে, অতএব আমার চোখকেও বিষয়টি এড়ায়নি।দীর্ঘ চার বছর আমি এ মেয়েটিকে লালন করছি।রাস্তায় অজ্ঞান অবস্থায় তাকে আমি পেয়েছিলাম। আর এরপর থেকে তাকে আমি ক্রমাগত বোঝার চেষ্টা করি কিন্তু পারিনা।আমার কাছে ওকে গণিতের মতো কঠিন মনে হয়।যদিও আমি জানি, পৃথিবীতে কোনো জিনিসই কঠিন নয়, এমিবার কাছে আমার ভাষা কঠিন মনে হলেও তার নিজের ভাষা একেবারেই সহয।যে যেই

পরিবেশে বিকশিত হয়েছে তার কাছে সেই পরিবেশ সহয হয়ে উঠে।আমি যদি গাণিতজ্ঞের মনস্তত্ব অনুযায়ী বিকশিত হতাম তবে আমার কাছে গণিত রবীন্দ্র সংগীতের মতোই সহয মনে হতো! উন্নততর প্রাণীর সংস্পর্শে থাকলে, তাদের চিন্তা এবং কর্মের প্রভাব তাদের উপরও পড়ে। যেমন- ভাইরাস।বিজ্ঞানীরা মানুষের শরীর থেকে ভাইরাসকে সরানোর জন্যে, প্রতি বছর নতুন নতুন এন্টিভাইরাস ব্যাবহার করে। মানুষের মস্তিষ্কের চিন্তাগুলি এন্টি-ভাইরাস রুপে তাদের শরীরে প্রয়োগ করা হয়। প্রতি বছর একই এন্টি-ভাইরাস কাজ করেনা আর সেজন্যে বিজ্ঞানীদের চিন্তার পদ্ধতিও পরিবর্তন করতে হয়! মানুষের চিন্তা এবং কার্যকারণ ভাইরাসের জেনেটিক্যাল এক্সপ্রেসন চেঞ্জ করে আর তারা মানুষের সম পর্যায়ে চলে আসে, কারণ মানুষের মস্তিষ্কের চিন্তা বা সাইকোলজির ভেতরেই তাদের বিবর্তন ঘটেছিলো! কিন্তু আমার কী মনে হয় জানেন?

বলুন...

জিতুর মস্তিষ্ক কোন ভার্চুয়াল প্রাণীর সাইকোলজির ভেতর বিবর্তিত হচ্ছে, তার উপর কেউ এন্টি-ভাইরাস
প্রয়োগ করছে এবং কৃত্রিম নির্বাচনের মাধ্যমে তারা মানুষের মধ্যে নতুন একটি প্রজাতি তৈরি করার চেষ্টা
করছে, আর সেই প্রজাতির একটি প্রাণীই হলো জিতু!

তারা কারা?

আপনার কী মনে হয়না, সমস্ত পৃথিবীকে চায়নিজরা ল্যাব হিসেবে ব্যাবহার করছে আর আমরা সবাই সেই ল্যাবের গিনিপিগ?করোনার সংক্রমণ ঘটিয়ে আমাদের জেনেটিক্যালি আপডেট করা হচ্ছে?

ওহ!আপনার নাম কী আবু মোমিন ?

জ্বি স্যার।আমি মহামান্য আবু মোমিন, কিন্তু আপনি কিভাবে জানেন?
আপনার ফেসবুক একাউন্টের নাম কী এ এম ?
ইয়েস স্যার!
আচ্ছা!
আমি কোনো উচ্চতর সত্তা নই, ভয়ের কিছু নেই, আমার এ আই আপনার ফেসবুক একাউন্ট চেক করেছে।
আপনার কী মনে হয়না ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড সম্পূর্ণটাই একটি ইন্টিলিজেন্স?এই ইন্টিলিজেন্স
বিশ্বের ব্রেন হ্যাকার!
মার্ক জাকারবার্গকে বিশ্বের সুপারব্রেন বলছেন?
হ্যা?
আমি জানিনা!
আপনি কী পরকালের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন?
আমার এ আই এর সাথে একবার আলোচনা করি এ ব্যাপারে, কী বলো প্রিজম?

বৃদ্ধ লোকটি বিষ্ময়ের দৃষ্টিতে রিসাসের দিকে তাকিয়ে আছে, সে কোনো কথা বলছেনা, মনে হলো সে ভাষা
হারিয়ে ফেলেছে।একটি পাখি উড়ে এসে বৃদ্ধ লোকটির গাড়ে বসলো এবং অবিকল জিতুন কন্ঠে বলল- বলুন,
মহামান্য রিসাস!
তুমি তাহলে জিতু?
হ্যা, আমি জিতু, আমি এখন জিতুর ব্রেন ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করছি, অতএব আমি জিতু।
বেশ!তবে তুমি আমাকে আর কখনো মহামান্য বলবেনা!
সরি, স্যার, এটা গুগলের নির্দেশ, আপনাকে অসম্মান করলে আমার কপোট্রন থেকে ইন্টারনেট কানেকশন
বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে আর আপনার এতে ক্ষতি হবে, আর আপনার ক্ষতি করার জন্যে আমাকে পোগ্রাম
করা হয়নি!
ঠিক আছে।
ওকে তুমি যাও...তোমার সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছে নেই আমার!!
এবার প্রিজম শব্দ করলো, রিসাস!
বলো।।
‘’তোমাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম মেটা ইউনিভার্স থিওরিটি প্রমাণিত কী না ?যেমন- কোয়ান্টাম
ম্যানি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশন।এটা কী আসলেই প্রমাণ হয়েছে এখনো?আবার বায়োলজিস্ট বেরিং এর
মতো কিছু জীব বিজ্ঞানী বলছে পরকালের অস্তিত্বের বায়োলজিক্যাল ভিত্তির কথা।তিনি মনে করছেন,
পরকাল সাংস্কৃতিক বা সামাজিক সত্য যে শুধু তাই নয় এর রয়েছে একটি নিউরোলজিক্যাল
ভিত্তি।ইউনিভার্সিটি অব আরাকানসের সাইকোলজিস্টরা বলছেন পরকালে বিশ্বাস কালচারাল বিলিভ
থেকে অনেক বেশি কিছু।বিশ্বের প্রায় সকল সংস্কৃতিতেই পরকালের বিশ্বাস প্রচলিত, ফিজিক্সের
সুত্র গুলি যেমন পৃথিবীর সকল স্থানে একরকম ঠিক তেমনি আস্তিক,নাস্তিক এবং মুক্তমনা সকলের
মাঝেই সাব-কনসাসলি পরকালের প্রতি এক ধরনের বিশ্বাস কাজ করে!আমেরিকার প্রায় ৮২ পার্সেন্ট
মানুষ বিশ্বাস করে যে মৃত্যুর পর কোনো না কোনো ভাবে মানুষের চেতনা থেকে যাবে![ University of
Arkansas,READING THE MINDS OF THE DEAD: AFTERLIFE BELIEFS MAY HAVE SOCIAL,
BIOLOGICAL BASIS।]

যাইহোক!রিসাস!তুমি নিশ্চয় শুনেছো, ‘The Journal of Cognition and Culture’এর সাইকোলজির
এসিস্টেন্ট প্রফেসরের কথা, জেসি বেরিং, যার কথা কিছুক্ষণ পূর্বেই বলেছি।যিনি পরকালে বিশ্বসের
উপর একটি গবেষণা চালিয়েছেন। ‘’Belief In Afterlife May Have Biological Basis’’ শিরোনামে।
জুলিয়া এসেন্টি একটি চমৎকার আর্টিকেল প্রকাশ করেছেন এ নিয়ে। তুমি চাইলে একবার পড়ে নিতে
পারো!তো তিনি বলেছিলেন,Even individuals who claim to believe that all consciousness

ceases at death were inclined to say that certain psychological states persist।জনপ্রিয়
কথা সাহিত্যিক হুয়ায়ুন আহাম্মদও এমনটা মনে করতেন বলে আমার মনে হয়!যার মানে হলো, এমনকি
যারা বিশ্বাস করে যে মৃত্যুর পরে কোনো চেতনার অস্তিত্বই থাকবেনা তারাও মনে করে কিছু না কিছু
সাইকোলজিক্যাল স্টেট মৃত্যুর পরেও থেকে যাবে।এর থেকে কী বুঝা যাচ্ছে?আমাদের মস্তিষ্কের,
নিউরাল ফাংশন এমন ভাবেই বিবর্তিত হয়েছে যে জন্যে আমরা চেতনাহীন জীবনের কথা চিন্তা করতে
পারিনা বা চিন্তা করতে আমাদের কষ্ট হয়।কারণ চিন্তার সৃষ্টি হচ্ছে,চেতনা থেকে, আর তাই অবশ্যই
কোনো চিন্তার পক্ষে চেতনাহীন জগতের কথা চিন্তা করা সম্ভব নয়, তাই নয় কী?জেসি বেরিং এ থেকে
ডিসিশনে এসেছিলেন যে, পরকালে বিশ্বাস প্রাকৃতিক এবং সার্বজনীন একটি ব্যাপার, এটি
বায়োলজিক্যাল এবং তিনি এর নাম রেখেছেন ‘’ Simulation Constraint Hypothesis of Death
Representation’’।জেসি বেরিং বলেছেন, “It comes down to the fact that we’re unable to imagine
the absence of certain psychological states,”।তিনি আরো বলেছেন, মানুষ বিশ্বাস করে মৃত্যুর পর
তারা আর খেতে পারবেনা,পড়তে পারবেনা, তাদের ব্রেন কাজ করা বন্ধ করে দেবে কিন্তু তারা এটা
কিছুতেই চিন্তা করতে পারছেনা যে ব্রেন স্টপ হয়ে গেলে চিন্তাও স্টপ হয়ে যাবে!এর মানে কী ব্যাপারটা
এরকম হয়ে গেলো না যে, চিন্তার পক্ষে কখনো চিন্তার অস্তিত্বহীনতাকে চিন্তা করা সম্ভব
নয়??এটা কী আমাদের একেবারে, নিউরোলজিক্যাল লিমিট নয়??বিবর্তন কী নিজেই আমাদের পরকালে
বিশ্বাস করতে ফোর্স করছে না তো? এটা আমার সংশয়, আমাকে ধার্মিক বলে মর্জাদা হানি করিওনা ?
যাইহোক, আমি আর বিস্তারিত যাচ্ছিনা, তবে এটা সত্য জেসি বেরিং মনে করতেন না যে, পরকালে
বিশ্বাস আমাদের মধ্যে জেনেটিক্যালি ফিক্স করা হয়েছে বরং তিনি মনে করতেন এটি এভোলিউশনালি
আমাদের মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ধারার মধ্যে প্রবেশ করেছে এবং এ জন্যেই আস্তিক,নাস্তিক এবং
মুক্তমনা সকলের মাঝেই পরকালের বিশ্বাস কমন!আমার প্রশ্ন হচ্ছে তোমার কাছে, কোয়ান্টাম
ম্যানিওয়ার্ল্ড ইন্ট্রারপ্রিটেশনের সাথে পরকালের এ এভোলিউশনারী সাইকোলজির কী কোনো
কানেকশন থাকতে পারে?আমাকে ক্ষমা করবে, আমি আসলে প্রশ্নটা তোমাকে এভাবে করতে চাইনি...

আমি বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছি।প্রিজম এতটা ক্যালিভার নিয়ে কথা বলতে পারে সেটা আমার এতদিন জানা
ছিলোনা!২৪ ঘন্টার মধ্যে দু-মিনিটের বেশি কথা বলে কী না আমার সংশয় আছে।বৃদ্ধ লোকটি বলল, হ্যা
এক্সেক্টলি, আমি প্রিজমের সাথে একমত, আমারও একই প্রশ্ন।আপনার কাছে কী এর কোনো সামাধান আছে?

রিসাস মৃদু হাসে এবং বলে, রিসাসঃতোমার প্রশ্নের মাঝে আমার অজ্ঞনতার প্রতি সহানুভূতি ছিলো, আর
তাই আমি তোমার সাথে কিছু কথা বলার সাহস সঞ্চয় করতে পারছি।প্রিজম!আমাদের দেশের মানুষের
মধ্যে একটি ব্যাপার আছে আর সেটা হলো তারা প্রশ্ন করে ঠিকই কিন্তু সে প্রশ্নের মধ্যে বিনয় বা
সহানুভূতি থাকেনা।আমি এমন অনেক প্রশ্নের সম্মুখ্যীন হয়েছি যে প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে হয়েছে
আমাকে অসম্মানবোধ আর চাপের মধ্যে থেকে!যাইহোক রিডার ডাইজেস্ট ওয়েভসাইটে টিমথি আর্ডেন
‘’Does answer to life after death lie in quantum physics’’ শিরোনামে একটি আর্টিকেল প্রকাশ

করেছেন যেখানে এওয়ার্ড প্রাপ্ত রাইটার এবং একইসাথে একসময়কার একজন সফল বিজ্ঞানী ভাদিন
বেবেনকোর সাম্প্রতিক সায়েন্স ফিকশন নিয়ে অনবদ্য একটি আলোচনা করা হয়েছে।যারা সায়েন্স
ফিকশন ভালোবাসেন তারা অবশ্যই ভাদিমের নাম খুব ভালোভাবে জানবেন।আর্থার সি ক্লার্ক এবং
আইস্যাক অসিমভের পর বেবেঙ্কোরই সাইন্স ফিকশনের জগতে বর্তমানে সবচেয়ে প্রভাবশালী
লেখকদের একজন!সাম্প্রতিক তিনি যে নোবেলটি লিখেছেন তার নাম ‘’The Place of Quarantine’’ এবং
হয়তোবা কিছুদিন পর তোমরা তার আরো একটি উপন্যাস পাবে ‘’Cogito Man’’।দ্যা প্লেস অব
কোয়ারেন্টিনে ভাদিম বিবেঙ্কো বলেছিলেন, মানব চেতনা মানুষের মাথার খুলির ভেতরে সীমাবদ্ধ
থাকার সম্ভাবনা হয়তোবা নেই, এটি আমাদের মস্তিষ্কের বাহিরেও লোকেট করতে পারে এমনকি
মহাবিশ্বেরও বাহিরে, এটি এতটাই সীমাহীন যে একে ফিজিক্সের সুত্র দিয়ে এক্সপ্লেইন করাও
সম্ভব নয়!তুমি জানো, সায়েন্স ফিকশনে আমরা আমাদের বৈজ্ঞানিক চিন্তার সম্ভাবনাগুলি প্রকাশ
করি যা তিনিও করেছেন, কিন্তু এটি নতুন নয় কারণ ইতমধ্যে দিপক চোপড়া,রবার্ট লাঞ্জা,হিউ
এভারেট,শ্রডিঙ্গার,ম্যাক্স প্লাঙ্ক মানব চেতনার উপর কাজ করেছেন এবং সাম্প্রতিক রোজার
পেনরোজও বলছেন যে, মানুষের মস্তিষ্কে কোয়ান্টাম সুপারপজিশন কাজ করার সম্ভাবনা আছে এবং
বিজ্ঞানী স্টাফও বলছেন মানুষের সাইন্যাপ্স এতটাই সুক্ষ্ম যেখানে কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স
সক্রিয় হয়ে উঠে আবার একইসাথে রোজার পেনরোজ আবারও বলেছেন, মানুষের চেতনাকে আমাদের
প্রচলিত ফিজিক্সের সুত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছেনা কিন্তু তার মানে এই নয় যে একে ফিজিক্সের
সুত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবেনা,তিনি মনে করতেন, আরো উচ্চমাত্রিক কোনো ফিজিক্স মানব চেতনার
সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে!তার এ ধারণাটিকে যারা সমালোচনা করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন
বিজ্ঞানী লরেন্স ক্রাউস যিনি মাল্টি ইউনিভার্স তত্বের একজন জোরদার সমালোচক এবং যিনি
একসময় বারাক ওভামাকে তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় পরামর্শক হিসেবে ছিলেন, তিনি
বিবর্তনবাদের একজন অন্যতম সমর্থক এবং স্ট্রিং তত্বের গোরতর বিরোধী। তুমি আমাকে প্রশ্ন
করেছো যে পরকালের অস্তিত্বের সাথে মানুষের মস্তিষ্কের বায়োলজিক্যাল রিলেশন আছে কী না!আর
আমি সে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্যেই তোমাকে বিখ্যাত সায়েন্স ফিকশন রাইটার ভাদিম
বিবেঙ্কোর জগতে নিয়ে এসেছি।যেহেতু আমি একেবারেই অজ্ঞ এবং নির্বোধ তাই তোমাকে আমি
সেসব মানুষদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি যাদের কাছে তুমি তোমার প্রশ্নের উত্তর পেতে
পারো।আমি যদি আমার নিজস্ব বক্তব্য প্রকাশ করি তবে সেক্ষেত্রে আমাকে গাণিতিক প্রমাণ
দেখাতে হবে! যাইহোক, ভাদিম রাশিয়ার মস্কো ইনস্টিউট অব ফিজিক্স এন্ড ট্যাকনোলজি থেকে
ডক্টারাল ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং সাহিত্যের জগতে ফিরে আসার পূর্বে তিনি আর্টিফিশিয়াল
ইন্টিলিজেন্স এবং মাইক্রোবায়োলজির উপর কাজ করেছেন এবং সেটাই ছিলো তার
ক্যারিয়ার।ভাদিমের থার্ড নোবেল যার নাম কী না ‘’SEMMANT’’ এটি ন্যাশন্যাল ইন্ডি এক্সিলেন্সি
এওয়ার্ড অর্জন করেছিলো। তার প্রথম দুটি গ্রন্থ ‘’Black Pelican’’ এবং ‘’A and Simple Soul’’
ন্যাশনাল বেস্ট সেলার এবং বেস্ট বুক এওয়ার্ড পেয়েছিলো।যাইহোক, কোয়ারেন্টিন উপন্যাসটি
একজন বিজ্ঞানীকে নিয়ে লিখা যিনি আকষ্মিক একদিন জাগ্রত হওয়ার পর তার যৌক্তিক জগত
প্রশ্নবিদ্ধ হলো, তিনি বিচলিত এবং আতঙ্কিত হয়ে উঠলেন, একটি রহস্যজনক স্থানে যার নাম
কোয়ারেন্টিন।তিনি খুব শীঘ্রই বিষ্ময়করভাবে জানতে পারলেন তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন!অবশেষে তিনি

তার রুমমেট এবং এ আই এর সহযোগীতায় তার পৃথিবীর জীবনকে স্মরণ করতে পারলেন।তিনি আরো
স্মরণ করতে পারলেন, পৃথিবীতে থাকাকালীন তিনি কোয়ান্টাম থিওরি অফ দ্য হিউম্যান মাইন্ডের
উপর কাজ করেছেন এবং প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন যে কনসাসনেস মৃত্যুর পরেও স্বাধীনভাবে
দেহের বাহিরে থাকতে পারে! ভাদিম বোবেঙ্কো তার উপন্যাসে কোয়ান্টাম মডেল অব ব্রেন নামক
বাস্তব একটি থিওরি আলোচনা করেছিলেন যে থিওরিটি প্রতিষ্ঠা করার জন্যে বহু বছর ধরে কাজ
করে যাচ্ছেন হিরোমি উমেজাওয়া, জিওসেপি ভিটিয়েলো, ওয়াল্টার ফ্রিম্যান এবং আরো অনেকেই...।
ভাদিমির উপন্যাসের গুরুত্বপূর্ণ আইডিয়াটি ছিলো, আমাদের মস্তিষ্কের মেমরি এবং ইন্টিলিজেন্ট
দুটি ম্য্যাকানিজমে তৈরি হতে পারে। এটি শুধুমাত্র আমাদের মস্তিষ্কের নিউরন সেলের সাথেই
সম্পৃক্ত নয়, বিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এটা জানা গেছে যে আমাদের স্মরণ এবং চিন্তা নিউরো-
কর্টেক্সজুড়ে একইসময় এবং একইসাথে সংঘঠিত হয় যদিও আমাদের নিউরন সেল গুলিকে একে
অপরের সাথে কমিউনিকেশন করার জন্যে সময় দেয়া হয়।যা থেকে ধারণা করা যায় কালেক্টিভ
কোয়ান্টাম ডায়নামিক্স আমাদের মস্তিষ্কের চেতনা বা মন তৈরির সাথে জড়িত! যদি এটি সত্যি হয়
তবে যে এনার্জি থেকে আমাদের মন সৃষ্টি হয় সে শক্তি মৃত্যুর পরেও অস্তিত্বশীল থাকতে পারে বলে
ভাদিম মনে করেন!ভাদিম, নন-লোকালিটি এবং মেমরির স্থায়িত্বকে প্রাকৃতিক ভাবে ব্যাখ্যা
করেছেন।তিনি বলেন, কোয়ান্টাম মাইক্রোওয়েভের দোদুল্যমানতা সমস্ত মস্তিষ্কে সমানভাবে
ডিস্ট্রিবিউট করা থাকে, এবং এ জন্যে মস্তিষ্কের একটি নিউরাল পয়েন্ট থেকে অন্য আর একটি
পয়েন্টে ইনফরমেশন ট্রাভেল করতে সময়ের কোনো প্রয়োজন হয়না!প্রত্যেকটি পয়েন্ট দূরত্বকে
উপেক্ষা করেই ইনস্ট্যান্টলি ইনফরমেশন পেতে পারে।দ্বিতীয়ত, এ যে কোয়ান্টাম দোদুল্যমানতা এটি
সংঘঠিত হতে একেবারে গ্রাউন্ড লেবেল থেকে কোনো শক্তিরও প্রয়োজন হয়না!ভাদিম মস্তিষ্কে যে
অংশ মেমরির জন্যে দায়ী সেটিকে একটি Single Whole হিসেবে দেখেছেন!এবং তিনি বলেন,
ক্লাসিক্যাল মাইক্রো-ওয়েভের মতো কোয়ান্টাম মাইক্রোওয়েভগুলি মৃত্যুবরণ করেনা, এগুলি
মস্তিষ্কে দীর্ঘকাল থেকে যায়!!তবে একটি ব্যাপারে ভাদিম সতর্ক করেছিলেন যদি তার নিজের
ভাষায় বলি তবে তিনি বলেছেন,
it’s important to point out that the quantum model of the brain is based on the mathematical formalism
of quantum field theory and has nothing to do with popular yet scientifically dubious ‘theories’ of
quantum consciousness which rely on quantum entanglement and other her quantum mechanical
phenomena. Quantum mechanics and quantum field theory are completely different things, even
though they share the word ‘quantum’. Only the latter is able to predict the macroscopic features of our
brain as a whole.

আকষ্মিক জিতু এসে উপস্থিত।বাহিরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছেজিতু একটি লাল শাড়ী পড়েছে, এটি তার নিয়মের
সুস্পষ্ট লঙ্গন, এই মাত্রই বিদ্যুৎ চলে গেছে।সমস্ত ফ্লোর অন্ধকার, জানলা দিয়ে বিজলির চমকে মাঝেমাঝে সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে জিতুর রক্তিম মুখ।দু-চোখে প্রবল নেশা।আমার মস্তিষ্কের স্বাভাবিক সেন্স কাজ করছেনা।জিতু ড্রয়িং রুমে আসার সাথেসাথে সমস্ত ফ্লোর যেনো তার মনস্তত্বের মধ্যে ডুবে গেছে, যেনো পুরো ফ্লোরটাই একজন নারীমূর্তি।আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্টের দু-চোখে আলো জ্বলে উঠলো আর সেই আলোতে

সবকিছু মোটামুটি সুস্পষ্ট হয়ে উঠলো।জিতু পায়ের উপর পা তুলে সোফায় বসে, ওড়না ছুড়ে ফেলে দেয়।তাকে দেখে উগ্র এবং বিক্ষিপ্ত মনে হলেও অত্যন্ত শান্তস্বরে সে বলে উঠলো-
‘’রিসাস!তার মানে আমরা জানলাম যে আমাদের মস্তিষ্ক একটি সিঙ্গেল হোল এবং আমাদের স্মৃতি এবং চিন্তা একইসাথে এবং একইসময় আমাদের মস্তিষ্কে কাজ করছে যার সাথে কালেক্টিভ কোয়ান্টাম ডায়নামিক্স জড়িত যেটা আমাদের চেতনা তৈরি করে এবং এই কনসেপ্টটি কোয়ান্টাম এন্ট্যাংগেলমেন্ট বা অন্যান্য ব্যাপারগুলির সাথে সম্পর্ক রাখেনা যেগুলির ভিত্তিতে চেতনার মডেল তৈরির জন্যে অনেক বিজ্ঞানী কাজ করছেন!একেবারে বিজ্ঞানের সলিড গ্রাউন্ড থেকেই ভাদিম এক্সপ্লেইন করেছেন যে, আমাদের মস্তিষ্কের কোয়ান্টাম মাইক্রোওয়েভস গুলি মৃত্যুর পরেও থেকে যেতে পারে অথবা অন্যভাবে যদি বলি ক্লাসিক্যাল ওয়েভের মতো এই মাইক্রো-ওয়েভগুলির মৃত্যু হয়না আর এ জন্যেই কোয়ারেন্টিন উপন্যাসের সেই বিজ্ঞানীটি মৃত্যুর পরেও ঠিক আগের মতোই সবকিছু অনুভব করতে পারছিলো, রহস্যময় কোয়ারেন্টিন দীপে, যেহেতু তার মৃত্যু হলেও তার
মস্তিষ্কের মেমরির মৃত্যু হয়নি!এটাই তো বলতে চাইছিলে?’’

__হ্যা...অনেকটা সেরকমই

আচ্ছা!তাহলে গতকাল তোমার মৃত্যু হয়েছিলো অথচ তোমার মস্তিষ্কের কোয়ান্টাম ডায়নামিক্স এখনো
সক্রিয়?তোমার দেহ, তুমি, এ বিল্ডিং অথবা আমরা সবাই শুধুমাত্র তোমার মস্তিষ্কের কোয়ান্টাম ওয়েব?হাহাহা!যাইহোক, আমি তো শুধু তোমাকে ভয় দেখাচ্ছি, তোমাকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলতে আমার ভালোলাগে!

রিসাস মৃদু হেসে বলল, তোমাকে একটি প্রশ্ন করবো জিতু?
করো!
তোমার মস্তিষ্কের প্রাইমারী অপারেটিং সিষ্টেম ডেমেজ হয়ে গেছে, তুমি চোখে দেখোনা, তোমার বাস্তবতা এবস্ট্রাক্ট, আমি কী ঠিক বলেছি?
জিতু আচমকা ভয় পেয়ে গেলো!
এই প্রথম তার চোখে মুখে আতঙ্কের পরিচ্ছন্ন একটি ভাব দৃশ্যমান হয়ে উঠলো!
দৃঢ় কন্ঠে সে বলল, এটা কী তোমার ধারণা মাত্র, তুমি কী বলতে চাচ্ছো আমার চোখের কোনো দৃষ্টি শক্তি
নেই?
না, তা নয়, তোমার চোখ ঠিক আছে কিন্তু মস্তিষ্কে প্রবলেম!
‘উদ্ভট কথাবার্তা আমার একদম পছন্দ নয় রিসাস!’

কার এক্সিডেন্টে তোমার মস্তিষ্কের প্রাইমারী অপারেটিং সিষ্টেম ডি-একটিভ হয়ে গিয়েছিলো, আমাদের
মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্সের চারটি স্তর আছে।প্রাইমারি এরিয়া, সেকেন্ডারি এরিয়া, অরিয়েন্টেশন
এসোসিয়েসন সেন্টার, এসোসিয়েশন সেন্টার।আমাদের মস্তিষ্কের নিও কর্টেক্সের প্রাইমারী এরিয়ায়
এক্সট্রারনাল জগত থেকে ইনফরমেশনগুলি ইলেক্ট্রিক্যাল পালস আকারে প্রবেশ করে এবং প্রাথমিক
পারসেপশন তৈরি হয় যেমনঃ এবস্ট্রাক্ট সাইজ,সেফ অথবা স্পেস।তোমার মস্তিষ্কের প্রাইমারী
এসোসিয়েশনের সাথে সেকেন্ডারী এসোসিয়েশনের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে তোমার ব্রেন

মহাবিশ্বের থ্রিডি মডেল প্রস্তুত করতে পারেনা শুধু এবস্ট্রাক্টলি একে অনুভব করতে পারে, বা
সাইকোলজিক্যালি।

জিতু বিষ্ময়ে আভিভূত হয়ে বললো, তুমি কীভাবে জানলে?তোমাকে কে এ ইনফরমেশন জানিয়েছে?
তোমার কী একবারের জন্যেও মনে হয়েছে আমি এক্সট্রারনাল ওয়ার্ল্ডে মুভ করতে কষ্টবোধ করছি!

রিসাস- তার সেই বিখ্যাত বাকা হাসিটি প্রকাশ করে বলল, কারণ তুমি বারবার বলছিলে, আমি তোমার
সাইকোলজির ভেতর আছি, আর আমি সেখান থেকেই বুঝতে পেরেছি তোমার মস্তিষ্কের ক্যাপটিভ এরিয়া সমস্যা আছে!!আরো কিছু বলবো তোমাকে?

জিতু বিকট স্বরে হেসে উঠলো এবং বলল, আমি তোমার কাছ থেকে কোনোকিছুই শুনতে চাচ্ছিনা, তুমি আমার মনের গুগল না যে তোমার কাছে আমার সব তথ্য থাকতে হবে!আমরা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সির মাত্র ৫ পার্সেন্ট বুঝি কিন্তু এটি অসীম।মহাবিশ্ব দুই ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সি এবং আন কাউন্টেবল ট্রিলিয়ন গ্রহ নক্ষত্রের সমন্বয়ে গঠিত কিন্তু এদের সম্পূর্ণটাই মহাবিশ্বের মোট এনার্জির ০.০০১ পার্সেন্ট।তুমি মহাবিশ্ব সম্পর্কেই কোন ধারণা রাখোনা, তোমার অজান্তেই এ মহাবিশ্ব উৎপত্তি লাভ করেছে, এবং তোমাকে না জানিয়েই ফিজিক্সের সুত্র গুলি অস্তিত্বশীল।তুমি সম্পূর্ণভাবে অজানার উপর দাঁড়িয়ে আছো!!একটি বিমানের ডানা যিনি ডিজাইন করেছেন তিনি তার চাকা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন না আর যিনি চাকা নিয়ে কাজ করেছেন তিনি এর ডানা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন না, বিমানের কম্পিউটার অপারেটিং সিষ্টেম যিনি তৈরি করেছেন তিনি এর ইঞ্জিন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেনা, আর যিনি ইঞ্জিন নিয়ে কাজ করছেন তিনি কম্পিউটার অপারেটিং সিষ্টেম সম্পর্কে যথেষ্ঠ জ্ঞান রাখেনা।তার মানে কী দাঁড়ালো?সম্পূর্ণ বিমানটি কেউ তৈরি করেনি, সম্পূর্ণ বিমান তৈরির জ্ঞান কারো নেই, বিমানটিরহস্যজনকভাবেই তৈরি হয়েছে, একেবারে শূন্য থেকে!

তোমার নাম কী জিতু?
নাহ!আপনি শান্তু আর আমি প্রমি!
প্রমি!
হ্যা সোনা!আমি তোমার প্রমি!
তুমি কোথায় গিয়েছিলে আমাকে ছেড়ে, কেনো তোমাকে আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম না কোথাও?
তুমি তাহলে জিতু নই?
জিতু কে?

তুমি জিতুকে কখনোই জানতেনা!
না!
তুমি প্রমি?
হ্যা প্রাণ, আমি প্রমি, তোমার প্রমি, আমার দেহের প্রতিটি কোষে তোমার নাম লিখে রেখেছি, দেখবে তুমি?
প্রমি টেবিলে রাখা একটি ধারালো চাকু হাতে তুলে নিলো, কোনোভাবেই সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছিলোনা,
এবং তাৎক্ষণিক একটা আঙুল কেটে ফেলে দিলো!
এ আই!এ আই!!
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্ট উড়ে এসে রিসাসের সামনে দাড়ালো এবং পরিস্কার কন্ঠে জবাব দিলো-স্যার!
ডাক্তারকে মেসেজ করো!
ডাক্তার আছেন স্যার!
কোথায়?
স্যার জিতু ম্যাম নিজেই, বিশ্ব শেরা একজন ডাক্তার!
হোয়াট?
তুমি আমাকে বলোনি কেনো?
আপনি জিজ্ঞেস করেন নি!
সে কী নিজেই নিজের ট্রিটমেন্ট করছে?
না স্যার, তিনি নিজের ট্রিটমেন্ট নিজে করেন নি!
মানে কী?
স্যার জিতু এক্সট্রিমলি মাল্টিপল ক্যারেক্টারিস্টিক ডিজ অর্ডারে আক্রান্ত, তিনি যখন একটি ক্যারেক্টার
থেকে অন্য আর একটি ক্যারেক্টারে শিপট করেন তখন তার মস্তিষ্কের ওয়েভ প্যাটার্ন থেকে শুরু করে
জেনেটিক্যাল এক্সপ্রেসন পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়ে যায়।তিনি যখন জিতুর চরিত্রে ফিরে যাবেন হলোগ্রাফিক
প্রিন্সিপ্যাল অনুসারে, তার আঙুল আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে!আপনি ডেনিস গেবর এবং কার্ল
পিব্রামের নাম শুনেছেন?যারা মস্তিষ্ককে হলোগ্রাফিক্যালি এক্সপ্লেইন করেছেন?
হ্যা শুনেছি!
আপনি কী ডেভিড বোমের কোয়ান্টাম পটেনশিয়াল ফিল্ড সম্পর্কে জানেন না?
হ্যা!

কিন্তু কেনো?
জিতুর মস্তিষ্ক সিজোফ্রেনীয়া আক্রান্ত, যেটি বর্তমানে ম্যানিক ডিপ্রেশনে রুপ নিয়েছে, ম্যানিক ডিপ্রেশন আক্রান্ত ব্যাক্তিরা সেন্স অব কসমিক্যাল ইউনিটিতে থাকে, তারা মনে করে তারা কোয়ান্টাম পটেনশিয়াল ফিল্ডে সারভাইভ করছে!স্যার, কোয়ান্টাম পটেনশিয়াল ফিল্ড অতীত এবং ভবিষ্যত উভয় দিকেই মুভ করতেপারে!জিতুর মস্তিষ্কের ওয়েভ প্যাটার্ন চেঞ্জ হওয়ার সাথেসাথেই কোয়ান্টাম পটেনশিয়াল তার আঙুলটি
আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেবে!

‘এ জন্যেই কী তুমি তাকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ডাক্তার বলছো?
স্যার,সে শুধু শ্রেষ্ঠ ডাক্তারই নয়, সে আপনার প্রেমিকা, আপনার ফিউচার!
শাট আপ!
উত্তেজিত হবেন না, স্যার!
কুকুরের বাচ্ছা!
স্যার আমি কুকুর নই, আমি পাখি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্ট, আমার নাম কোভিট-১৯!
গেট লস্ট!

পর্ব-৩

বঙ্গের বিখ্যাত বিবর্তনীয় মনবিজ্ঞানী রিসাস এভাবে বিভ্রান্ত হবে তা বৃদ্ধ লোকটি ভাবেনি।তিনি বিজ্ঞানীর
কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।নিরব এবং নিস্তব্দভাবে তিনি ঘর থেকে প্রস্তান করেন।
রিসাসকে এখন স্থির এবং সংকল্পবদ্ধ মনে হচ্ছে।কিছুক্ষণ পূর্বেও যে তার সাথে কিছু একটা অস্বাভাবিক
ঘটেছে তা তার মনে নেই!আমি কেনো যেনো জিতুর প্রতি ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়ছিলাম, আমার কাছে তাকে রহস্যময় মনে হতে শুরু করলো, এমন কিছু রহস্য যার সাথে ঈশ্বর এবং স্বর্গ বা নরক জড়িত থাকতে পারে!আমি আগেই বলেছি, আমি একজন বিশ্বাসী, জিতু যেনো আমার বিশ্বাসের সাপেক্ষে জীবন্ত এক প্রমাণ!যদি জিতু কোয়ান্টাম পটেনশিয়াল ফিল্ডকে ব্যাবহার করতে পারে তবে সে ট্যালিপেথিক্যাল ক্ষমতাও রাখে, নয়তো কিভাবে সে রিসাসের মনকে এত সহযে পড়তে পারছে!কিভাবে সে রিসাসের মস্তিষ্কে নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স তৈরি করতে পেরেছে!সমস্যাটা কোথায়?জিতু কী আসলেই সাইকো?তার কী একজন বোন ছিলো যাকে ভার্চুয়াল হিউম্যানরা কিডন্যাপ করে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে!আমরা না হয় জানলাম যে জিতু ডি- এসোসিয়েটিভ ক্যারেক্টারিস্টিক এ আক্রান্ত কিন্তু কেনো সে রহস্যজনক ভাবে নিজের আঙুল নিজে কেটে ফেলছে, তার একটি হাত অটোম্যাটিক্যালি কাজ করছে, যেনো সেটি তার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে!না!রিসাসের সাথে
একবার কথা বলা উচিত!কী এ রহস্য?

রিসাস কী পরাজিত হবে?রিসাস পাহাড়ের পাদদেশে বসে আছে তার সাথে প্রিজম, তাদের দুজনের মধ্যে গভীর আলোচনা শুরু হয়েছে, ছুলছেরা বিশ্লেষণ!প্রিজম বলল, তুমি তখন বলেছিলে আমাদের মস্তিষ্কের কোয়ান্টাম মাইক্রো-ওয়েভগুলি মৃত্যুবরণ করেনা, তারমানে স্বপ্নে তুমি সত্যি সত্যি মৃত্যুবরণ করেছিলে কিন্তু কোয়ান্টাম ডায়নামিক্সের কারণে তোমার চেতনা জাগ্রত ছিলো?

আমি আগে কখনো এসব বিষয় নিয়ে প্রিজম বা রিসাসকে এতটা সিরিয়াস হতে দেখিনি।রহস্যজনকভাবে এইপাহাড়টির নামও কোয়ারেন্টিন কারণ একটি মস্তিষ্ক বিকৃত মেয়েকে এখানে আজ চার বছর একা ও সম্পূর্ণ নিস্বঙ্গ করে রাখা হয়েছে।প্রিজমের প্রশ্নের জবাবে রিসাস বলল,হ্যা প্রিজম! আমি তোমাকে সিদ্ধান্তে উপনিত হতে সাহায্য করছি আমি তোমাকে ব্যাক্তিগত কোনো মতামত দিচ্ছিনা।তুমি আমাকে বলেছিলে যে জেসি বেরিং এর এক্সপেরিমেন্টের কথা, যেখানে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন, আমাদের মস্তিষ্ক আস্তিক বা নাস্তিক যাই হয়, তবুও তারা সাব-কনসাসলি বিশ্বাস করে মৃত্যুর পরে মস্তিষ্কের কিছু না কিছু সাইকোলজিক্যাল স্টেট বেঁচে থাকবে,এমনকি তুমি এটাও জানো নিশ্চয় জেসি বেরিং যখন নাস্তিক এবং সংশয়বাদীদের প্রশ্ন করেছিলেন যে মৃত্যুর পর তাদের চেতনার মৃত্যু হবে কীনা তখন তারা উত্তর দেয়ার জন্যে আস্তিকদের তুলনায় বেশি সময়
নিয়েছিলো!এখান থেকে তুমি কী বুঝেছো?

প্রিজম বিরাট একটি বক্তব্য রাখলো যার সারসংক্ষেপ এই যে, হ্যা এখান থেকে আমি বুঝতে পারছি যে,
আমাদের ব্রেন এ ব্যাপারে ডিসিশন মেক করতে সময় নিচ্ছে, আর সময় নেয়ার মানে হলো বায়োলজিক্যালি ব্রেনের কিছু রেস্ট্রিকশন আছে, আর এই রেস্ট্রিকশনের কারণই হয়তো আমাদের মস্তিষ্কের এই কালেক্টিভ কোয়ান্টাম ডায়নামিক্স?যেটাকে আমাদের ব্রেন অস্বীকার করতে পারছেনা?ঠিক বলেছি তো!এটাই তবে সেই পরকালের বায়োলজি?যাইহোক, আমরা এবার মূল আলোচ্য বিষয়ে আসি, আমরা তো বুঝতে পারলাম এতক্ষণের দীর্ঘ আলোচনা থেকে যে কেনো আমাদের মস্তিষ্কে পরকাল সম্পর্কে একপ্রকার বিশ্বাস কাজ করে অথবা কেনো আমাদের চিন্তা চিন্তা করতে পারেনা চিন্তাহীন চেতনার কথা!কিন্তু তুমি আমাকে বলো, যে ফিজিক্স আসলে কী এখনো পরকাল সম্পর্কে কোনোকিছু বলেছে?এই যে অনেকে সাম্প্রদায় ম্যানি ওয়ার্ল্ড থিওরিকে পরকালের অস্তিত্বের সাপেক্ষে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করছে!পরকাল কী কোয়ান্টাম মাইক্রো-ওয়েভ
থেকে বেশি কিছু?


রিসাসঃ হ্যা হয়তোবা, বেশি কিছু হতে পারে, কিন্তু আমার সংশয় আছে কারণ আমি এখন বিজ্ঞানী আমি
পরকালে অস্তিত্বের প্রমাণকারী নই, তাই এটি কে বেশি কিছু ভাবার কোন তাড়া আমার অন্তত নেই...

প্রিজমঃকিন্তু আমরা তো এর একটি সংযমী মূল্যায়ন করতে পারি?তাই নয় কী?তোমার ভার্চুয়াল ব্যাংস্পেস গ্রন্থে আমি দেখেছিলাম, যে তুমি বলেছিলে, আমাদের মস্তিষ্কের নিউরন সেল গুলি সুপারপজিশনে থাকে আর তখন তারা নির্দিষ্ট কোনো স্পেস-টাইমে লোকেটেড নয়, তাদের লোকেশন ইনফিনিটি আর তাই যখন একজন পর্যবেক্ষক একটি সুপারপজিশনাল পার্টিকেলকে পর্যবেক্ষণ করে তখন সে নিজেও সুপারপজিশনে থাকে!যাক,

আমি যাচ্ছিনা সেই সুকঠিন ব্রেন যুদ্ধে!তোমার গ্রন্থ আলোচনা করার মতো শক্তি আমার এখন আপাতত
নেই!
আমাকে তুমি বলো, মাল্টি ইউনিভার্স বা ম্যানি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেনশন কী প্রমাণিত?সেটা কে কিভাবে
প্রমাণ করা যায়?আর এর সাথে ভাদিমের সায়েন্স ফিকশনের সেই বিজ্ঞানীর কোনো সম্পর্ক আছে কী না?’’

‘’শুনো প্রিজম! জিজিমোডো নামক একটি ওয়েভ সাইট আছে যার স্লোগান হলো ‘’আমরা ফিউচার থেকেএসেছি’’।আমি তোমাকে পরে এ ওয়েভসাইটের লিংক পাঠাবো।২০১২ সালের ৩ রা সেপ্টেম্বর ‘’Alasdair Wilkins’ নামক একজন গবেষক সেই ওয়েভসাইটটিতে Quantum Suicide: How to Prove the Multiverse Exists, in the Most Violent Way Possible শীর্ষক একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেন।
যেখানে দেখানো হয়েছে কিভাবে বিজ্ঞানী ম্যাক্স ট্যাগমার্ক কোয়ান্টাম সুইসাইড থট এক্সপেরিমেন্ট দ্বারা
মাল্টি ইউনিভার্সের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন এবং তুমি যদি হিউ-এভারেটের জীবনীগ্রন্থ পড়ো তবে তুমি
দেখবে বিজ্ঞানী হিউ-এভারেট তার মৃত্যুর পূর্বে বলে গেছেন, সুপারপজিশনাল মেটা ইউনিভার্স থিওরি দ্বারা তিনি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে তিনি অমর, তার কোনো মৃত্যু নেই!তুমি উইকিপিডিয়ায় হিউ এভারেটের জীবনি অনুসন্ধান করলে এ ব্যাপারে ইনফরমেশন পাবে।কিন্তু যেহেতু তুমি আমাকে প্রশ্ন করেছো মাল্টিইউনিভার্সের সত্যতার প্রমাণ নিয়ে সেক্ষেত্রে আমি তোমার সাথে কোয়ান্টাম সুইসাইড থট এক্সপেরিমেন্টটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে পারি!যদিও আমি আলোচনায় অদক্ষ এবং অহেতুক জটিলতা সৃষ্টির জন্যে বিখ্যাত, হতে পারে এটা আমার অজ্ঞতারই প্রতিফলন !তাই উৎসাহ অনুভব করছিনা,তুমি যদি চাও তবে ভালো হয় এটাই যে আমরা আজকের মতো আলোচনা এখানেই স্থগিত রাখি...’’

“তোকে আর ভনিতা করতে হবেনা!আজব!আমি কী একবারও বলেছি যে আমি তোমার আলোচনায় ক্র্যাক হয়েছি বা এমন কিছু?তুমি আলোচনা থেকে আজকের জন্যে আর পালাতে পারছোনা বলে দিচ্ছি!আমি তোমাকে এখন আর ছাড়ছিনা!হাহাহ!কী কথারে বাবা!অহেতুক জটিলতা সৃষ্টির জন্যে বিখ্যাত!যাদের পর্যাপ্ত ইনফরমেশন নেই তাদের নিকট তোমার আলোচনা জটিল মনে হলেও আমার কাছে ব্যাপারগুলি আদৌ জটিল মনে হচ্ছেনা!কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি যদি আজ তোমার কাছ থেকে আমি এ প্রশ্নগুলির সলিউশন না পাই তবে আমার কী হবে নিজেকে
তো শান্তনাই দিতে পারবোনা!’’

‘’ যাইহোক,কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স আমাদের বলছে, অবজেক্টিভ রিয়েলিটির কোনো অস্তিত্ব নেই।আমরা শুধুমাত্র দেখি একটি পার্টিকেলের নির্দিষ্ট একটি অবস্থায় কলাফস হওয়ার সম্ভাবনাকে এবং সম্ভাব্য অন্যান্য রিয়েলিটিগুলিও একই সাথে কোয়ান্টাম মাল্টি ইউনিভার্সে অস্তিত্ব রাখে।এখন প্রশ্ন হলো আমি এটা কিভাবে নিশ্চিত হবো, এমন কোনো এক্সপেরিমেন্ট কী আছে?হ্যা আছে একটি থট এক্সপেরিমেন্ট। এ জন্যে তোমাকে প্রথমে যেটা জানতে হবে সেটা হলো কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিটেশন যেটি ১৯২০ সালে ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ এবং নিলসবোর সহ অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী তৈরি করেছিলেন।আক্ষরিক অর্থে এরা ছিলেননকোয়ান্টাম ফিজিক্সের গড ফাদার!এই ইন্টারপ্রিটেনশনের মূল কথা ছিলো, যে সাব-এটমিক পার্টিকেলগুলি আমাদের ইউনিভার্সকে তৈরি করছে সেগুলিকে চিন্তা করতে হবে ওয়েভ ফাংশন হিসেবে যা ছিলো পার্টিকেলদের লোকেশন এবং ভেলোসিটির প্রবাবিলিস্টিক ইন্টারপ্রিটেশন!শুধুমাত্র পর্যবেক্ষক যখন পর্যবেক্ষণ করবে তখনই এই ওয়েভ ফাংশন কলাফস করবে এবং পার্টিকেলগুলি অনেকগুলি সম্ভ্যাব্য ইতিহাস থেকে একটি
ইতিহাসে ফিক্স হবে যেভাবে আমাদের এ ইউনিভার্স তৈরি হলো!’’

‘’কিন্তু তুমি তো জানো ১৯৫৭ সালে হিউ-এভারেট অন্য আর একটি আইডিয়া দিয়েছিলো?’’

‘’হ্যা ১৯৫৭ সালে হিউ-এভারেটের যে ইন্টারপ্রিটেশন সেটি কোপেন হেগেন ইন্টারপ্রিটেশন থেকে একটি
গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার রিমুভ করে দিয়েছিলো আর সেটা হলো ‘’ওয়েভ ফাংশন কলাফস’’।ওয়েভ ফাংশন কলাফস নাকরলে সাব-এটমিক পার্টিকেলদের সকল প্রবাবিলিস্টিক ভ্যালু সুপারপজিশনে থাকে একইসাথে এবং একইসময়!এর মানে হলো, একইসাথে এবং একইসময় সুপারপজিশনে অসীম সংখ্যক প্যারালাল ইউনিভার্স অস্তিত্বশীল!’’

হলি শেট!কী বলিস?এটা তো একেবারেই বিষ্ময়কর!আমি তো ব্যাপারটা এর আগে ঠিক এভাবে ভেবে দেখিনি!

‘’দেখো, সুপারপজিশনে যদি একটি পার্টিক্যাল একইসাথে এবং একইসময় মাল্টি ইউনিভার্সে অস্তিত্বশীল হয়েই থাকে তবে হিউ-এভারেট মনে করতো যে প্রত্যেকটি জগতেই ওয়েভ ফাংশন কলাফস হচ্ছে কিন্তু তার প্রশ্ন ছিলো আমরা কেনো একটি মহাবিশ্বকেই দেখছি?তখন হিউ-এভারেট এর কারণ হিসেবে বলেন কোয়ান্টাম ডিকো-হারেন্টের কথা, বেসিক্যালি পার্টিকেলদের সকল সম্ভাব্য স্টেট সুপারপজিশনে থাকে, কোহারেন্ট অবস্থায়, কিন্তু তাদের সিষ্টেমকে আইসোলেটেড হতে হয়!এবং তিনি মনে করতেন যখন আমরা একটি ক্ষুদ্র ফোটনকেও হিট করি এটি কোহারেন্স ভেঙে ফেলে যার জন্যে আমরা এটাকে ওয়েভ ফাংশন কলাফস হিসেবে দেখছি, অজস্র রিয়েলিটির মধ্যে একটিকে যা পার্টিকেলদের সম্ভাব্য স্টেট বর্ণনা কর।‘’
.
কিন্তু তাহলে লরেন্স ক্রাউসের মতো একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানীও কেনো ম্যানি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশনের
বিরুদ্ধে কথা বলছেন?

‘’ কারণ প্রথমত এটাকে এক্সপেরিমেন্টালি টেস্ট করার কোনো উপায় নেই আর যা ফিলোসফি এবং বিজ্ঞানে অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়।আর দ্বিতীয়ত হলো এ থিওরি একেবারেই পাগলাটে!প্রকৃতপক্ষে যদিও কোয়ান্টাম মাল্টিভার্স অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হয়েছে তবে থট এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে একে প্রমাণ করা যায় যদিও থট এক্সপেরিমেন্টটি আরো পাগলাটে, এবং এটি অসীম ভবিষ্যতেও কখনো করা সম্ভব হবে কীনা কারো জানা নেই, তবে, যদি এই এক্সপেরিমেন্টটি কখনো করা সম্ভব হয় তবে কোয়ান্টাম মাল্টি ইউনিভার্স থিওরি
প্রমাণ হবে!’’

অবশ্যই প্রমাণ করা সম্ভব হবে?কেনো প্রমাণ করা যাবেনা?একদিন না একদিন অবশ্যই আমরা প্রমাণ
করতে পারবো!

‘’হাহাহহাহ,তাই?এত সহয!তোর মাথায় যদি বন্ধুক ঠেকিয়ে তোকে বলা হয় ৫ মিনিটের মধ্যে বন্ধুকের নল দিয়ে একটা বুলেট শাঁ করে বের হবে এবং তোর মাথার খুলি গুড়িয়ে দেবে এবং হয়তোবা ভাগ্য ভালো থাকলে বেচেও যেতে পারো!জীবন এবং মৃত্যুর ৫০ পার্সেন্ট সম্ভাবনার মধ্যে তোকে ফেলে দিয়ে যদি এই এক্সপেরিমেন্টটা করতে হয়, তাহলে তুই রাজী হবি???

‘’আরেহ!তুমি তো দেখছি এবার আমাকে হত্যা করার জন্যে কেনো উঠে পড়ে লেগেছো?কোয়ান্টাম মাল্টি ইউনিভার্স তত্বের প্রমাণ করার জন্যে বললাম আর তুমি তা না করে আমার খুলিতেই বন্ধুক ঠেকিয়ে দিলে!!এটা কেমন হয়ে গেলোনা!!যাইহোক!আমরা তো শুনেছি শ্রডিঙ্গারের কেটস থিওরির কথা যেখানে একটি বেড়ালকে বাক্সের মধ্যে রেখে দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়,যে বাক্সটির মধ্যে একটি ডিটেক্টর এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ রাখা আছে।ডিটেক্টরটি যখন ইলেক্ট্রনের স্পিন ডিটেক্ট করবে ক্লকওয়াইজ তখন তেজস্ক্রিয় পদার্থটি বিস্ফোরিত হবে এবং বেড়ালটি মারা যাবে এবং ডিটেক্টর যখন ইলেক্ট্রনটির স্পিন ডিটেক্ট করবে কাউন্টার ক্লক-ওয়াইজ তখন তেজস্ক্রিয় পদার্থটি বিস্ফোরিত হবেনা এবং বেড়ালটি জীবিত থাকবে।কিন্তু সুপারপজিশনে একটি পার্টিকেল একইসাথে এবং একইসময় ক্লক-ওয়াইজ এবং কাউন্টার ক্লকওয়াইজ উভয় ডিরেকশনেই স্পিন করে অতএব ডিটেক্টর যখন ইলেক্ট্রনটির স্পিন ডিটেক্ট করবে

ক্লকওয়াইজ বেড়ালটি মারা যাবে কিন্তু যেহেতু ইলেক্ট্রনটির স্পিন একইসাথে কাউন্টার ক্লকওয়াইজ হতে
পারে সেহেতু অন্য জগতে বেড়ালটি জীবিত হয়ে উঠবে। ৫০ পার্সেন্ট সম্ভাবনা থাকে যে বেড়ালটি হয়তো জীবিত থাকবে অথবা মৃত্যুবরণ করবে।ডিটেক্টর যতক্ষণনা স্পিন ডিটেক্ট করছেনা ততক্ষণ পর্যন্ত বেড়ালটি একইসাথে এবং একইসময় ৫০ পার্সেন্ট জীবিত এনং ৫০ পার্সেন্ট মৃত থাকার পসিবিলিটি রাখে।বেড়ালটি একইসময় এবং একইসাথে জীবিত এবং মৃত, যেটাকে বলা হয় সুপারপজিশন।কিন্তু তুমি বলছো অন্য কথা তুমি বেড়ালের স্থলে পর্যবেক্ষককেই শ্রডিঙ্গারের বাক্সে লক করে রাখার চেষ্টা করছো!?এর মানে কী, তুমি পর্যবেক্ষককেই সুপারপজিশনে ফেলে দিতে চাইছো? কারণ তুমি আমার মাথায় পিস্তল তাক করে যদি বলো ৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে তবে তো আমি নিজেই সুপারপজিশনে চলে যাবো বা আমি নিজেই তখন কিউবিট হয়ে যাচ্ছি একইসাথে ০ এবং ১।আমি নিজেই একইসাথে জীবিত এবং মৃত!কিন্তু যখন ডিটেক্টর স্পিন ডিটেক্ট করবে দুটি জগত একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যাবে, একটি জগতে আমি জীবিত এবং অন্যটিতে আমি মৃত।যেহেতু জীবিত জগতেই আমি এক্সপেরিমেন্টটি করতে পারবো সেহেতু কোয়ান্টাম মাল্টিভার্সে আমি
সার্ভাইব করতে পারবো!’’

‘’হাহাহ!শুনো , এটা আসলে আমার নিজস্ব কোনো বক্তব্য নয়, এই পাগলাটে ধারণাটির নাম ‘’quantum
suicide and immortality’’ এবং তুমি জানো কীনা জানিনা ১৯৮৭ সালে হ্যান্স মরভেক এবং স্বাধীনভাবে
একবছর পর ব্রনো মার্সেল এ প্রস্তাবটির উপর কাজ করেছেন এবং যিনি কোয়ান্টাম সুইসাইড এবং
ইমোর্টালিটি তত্বের উপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছেন তিনি হলেন এম আই টির ম্যাক্স
ট্যাগমার্ক!এই এক্সপেরিমেন্টটির সবচেয়ে কমন ভার্সন হলো, পর্যবেক্ষকে জীবন নাশক কোনো ডিভাইস
দিয়ে চ্যাম্বারে রাখা যেমন উচ্চশক্তি সম্পন্ন কোনো রাইফেল তার মাথায় তাক করে রাখা।প্রতি দশ সেকেন্ডে ফোটনের স্পিন ভ্যালু পরিমাপ করা হবে যা নির্ভর করবে মেজারমেন্টের ৫০/৫০ চাঞ্চের উপর এবং একইসাথে এক্সপেরিমেন্টারের ৫০/৫০ চাঞ্চের উপর!!’’


‘’প্রিজমঃ ওহ মাই গুডনেস!বলিস কী রে!আমি তো এই একই কনসেপ্টটা ‘’ব্যাংস্পেস’’ গ্রন্থের মাইক্রো-
সাইকোমাইন্ড নামক অধ্যায়টিতে পড়েছিলাম!
কিন্তু তখন তো আমি এই পাগলাটে ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি!তাহলে আমাকে তুমি এখন বলো শ্রডিঙ্গারের
বেড়ালটির তবে কী হবে?’’

রিসাসঃ এখানে আমরা যা করেছি তা হলো এক্সপেরিমেন্টারের সারভাইভাল বা টিকে থাকাকে কোয়ান্টাম স্টেটের
সাথে বেঁধে দিয়েছি।এর মানে হলো সে নিজেই এখন সুপারপজিশনে, একইসাথে জীবিত এবং মৃত যা তুমি কিছুক্ষণ
আগেও বলেছিলে।তার ৫০ পার্সেন্ট বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে এবং সেই ৫০ পার্সেন্ট জীবনের মধ্যে তার
এক্সপেরিমেন্টটি সম্পন্ন করারও সমান সম্ভাবনা আছে।কোন ব্যাপারই না সে কতটা সময় এক্সপেরিমেন্টটি
রিপিট করেছে কিন্তু সে টিকে থাকবে!

‘’আমার কিন্তু এবার কোনোকিছুই মস্তিষ্কে কাজ করছেনা!প্লিজ আমাকে আর একটু পরিস্কার কর!না বুঝলে যে আমার প্রচন্ড কষ্ট হবে, আমি বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যাবো!আমার কেনো মনে হচ্ছে তুমি মৃত?তুমি কোয়ান্টাম
সুইসাইড করেছো?’’

‘’না, ট্যাগমার্ক বলেছেন, মানুষের মৃত্যু একটি বাইনারী ইভেন্ট, এটি কিউবিট নয়, তাই আমি অবশ্যই
কোয়ান্টাম সুইসাইড করিনি!’’

‘’তাহলে জিতুর কথা কী মিথ্যা?সে কেনো দাবী করছে তুমি মৃত, সেদিন স্বপ্নে তুমি একইসাথে দুটি জগতেই অবস্থান করেছিলে, একটিতে তুমি জীবিত আর অন্যটিতে মৃত!এর মানে কী এই নয় তোমার চেতনায় কিউবিট সম্ভব?আমি ভেঙে পড়বো, রিসাস, আমার প্রচন্ড আতঙ্ক কাজ করছে!’’

‘’ভেঙে পড়ার প্রয়োজন নেই, আমরা কেউই কোয়ান্টাম ফিজিক্স সম্পূর্ণ ভাবে বুঝিনা।রোজার পেনরোজ বলেছিলেন, Quantum mechanics makes absolutely no sense।আবার যদি রিচার্ড ফাইনম্যানের কথা বলি, তিনিও বলেছেন, I think I can safely say that nobody understands quantum mechanics। রিচার্ড
ডকিন্সের মতো একজন কঠিন বিজ্ঞানীও বলেছেন, প্লাঙ্ক লিমিটে এসে হিউম্যান ইনটুইশন আর কাজ
করেনা!যাইহোক, কিন্তু আমরা তো এতক্ষণ খুব ভালোভাবেই বুঝে আসছিলাম, তাই না?

‘’ হ্যা, এটা শান্তনা নয়, এটাই বাস্তব, মাইক্রোস্কোপিক জগতকে আমাদের ব্রেন বুঝতে পারছেনা যাইহোক আমি হতাশ নই।এরপর কী হলো?পর্যবেক্ষক ৫০ পার্সেন্ট সারভাইভ করছে এবং ৫০ পার্সেন্ট মৃত।তার মানে পর্যবেক্ষকের যে ৫০ ভাগ সারভাইভ করছে সেই ৫০ ভাগই এক্সপেরিমেন্টটি পরবর্তীতে রিপিট করবে!এবং যে ভার্সনটি মৃত সেটি আর জীবনে ব্যাক করবেনা এবং নেক্স এক্সপেরিমেন্টটি করতে পারবেনা, তাইতো?কিন্তু প্রত্যেকটি জীবিত ভার্সনেরই সারভাইভ করার সম্ভাবনা রয়েছে?’’
আরেহ প্রিজম তুমি কান্না করছো কেনো? আমি জানিনা রিসাস!আমার কেনো কষ্ট হচ্ছে জানিনা কিন্তু আমার মনে হচ্ছে খুব বাজে কিছু ঘটতে
যাচ্ছে!প্রিজম কোনো রকমে নিজেকে সংবরণ করলো... যাইহোক বল!!

রিসাসঃ হ্যা তুমি ঠিক আছো কিন্তু তোমাকে একটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে সে জীবিত ভার্সনের ৫০ ভাগ বেঁচে থাকার সেই সম্ভবনা আছে এমনকি যদিও সেই সম্ভাবনার পরিমাণ কমতে কমতে keeps 25% বা 12.5%, বা 6.25% অথবা যদি তারও চেয়ে কম হয়!
তাহলে একজন পর্যবেক্ষক একটি মহাবিশ্বে ৫০ বার এক্সপেরিমেন্টটি করার জন্যে টিকে যেতে পারে। তার রয়েছে কোয়াড্রিলিয়নের মধ্যে এক ভাগের চেয়েও কম সম্ভাবনা এমন টিকে থাকার। যা ৫ সিগমা লেভেল থেকে বেশি যা একটি অফিশিয়াল আবিষ্কারের জন্যে প্রয়োজন হয়। এবং ঠিক তখনই একজন পর্যবেক্ষক কোপেনহেগেন ইন্টার-প্রিটেশন এবং ম্যানি-ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশনের মধ্যে পার্থক্য করতে
পারবে!কোয়াড্রিলিয়নের মধ্যে এক ভাগ সম্ভাবনা আছে যে সে কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিটেশনের পক্ষে এবং ১০০ পার্সেন্ট সম্ভাবনা আছে ম্যানিওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশনের পক্ষে!কারণ পর্যবেক্ষকের কিছু ভার্সন
অবশ্যই এই সুপারপজিশন দেখবে এবং দেখবে তার অন্যান্য ভার্সন মারা গেছে।এবং ম্যানিওয়ার্ল্ড
ইন্টারপ্রিটেশন সত্য প্রমাণ হয়েছে আর সেই বিশেষ ভার্সনটি অমরত্বের স্বাদ গ্রহণ করেছে!

প্রিজমঃ এটা খুবই বিষ্ময়কর!আমি আসলেই খুবই বিষ্মিত হয়েছি!ম্যাক্স ট্যাগ মার্ক এই সাইকো থট এক্স-
পেরিমেন্টটি কিভাবে উদ্ভাবন করলেন!!ডেঞ্জারাস!কিন্তু দূর্ভাগ্য হলো সুপারপজিশনকে যখন পর্যপবেক্ষক দেখবে তখন সে এটাও দেখবে যে অগণিত মহাবিশ্বে সে মৃত!

রিসাসঃ কিন্তু তুমি আরো বিষ্মিত হবে যখন শুনবে এই বৃদ্ধ বিজ্ঞানী তার ওয়েভ সাইটে এখনো বলে বেড়াচ্ছে এ পরীক্ষাটি করা সম্ভব!এটা হলো তার ওয়েভ লিংক
(http://space.mit.edu/home/tegmark/quantum.html#immortality)

প্রিজমঃ তোমার সাথে আলোচনা করে মনে হয়েছে যে তুমি সম্পূর্ণ অথেনটিক তথ্যের ভিত্তিতে আমার সাথে আলোচনা করেছো এবং আলোচনাটি অনেক সুগভীর ও একইসাথে কঠিন ছিলো।এত বিশাল একটি দার্শনিক প্রশ্ন যার সামাধান গ্রহের বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ আজো জানেনা তুমি সেগুলিকে জানার চেষ্টা করেছো এবং নিস্বঃন্দেহে তুমি খুব গভীরভাবে বুঝেছো, আর এ বোঝার কারণ হলো তোমার নিজস্ব একটি দর্শন আছে।কিন্তু আমরা আজো এদেশের কিছু কট্টর আস্তিক এমনকি নাস্তিককে বুঝাতে পারিনি দর্শন কতটা গুরুত্বপূর্ণ অথবা দর্শন আসলেই কী!তোমার দার্শনিক সাইকোলজির কারণেই তুমি বিজ্ঞান সম্পর্কে কোন প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা না করেই সম্পূর্ণ নিজের যুক্তি,দর্শন এবং কমনসেন্সকে ব্যাবহার করে ল্যাটেস্ট কোয়ান্টাম ফিজিক্স পর্যন্ত এসেছো এবং একটি গ্রন্থও লিখেছো, যা আসলেই অসাধারণ, অন্তত অন্য কয়েক কোটি
রাইটারের চেয়ে, তোমার অনবদ্য সৃষ্টি কোভিড-১৯!

‘’ ধন্যবাদ, তোমাকে একটি সুন্দর আলোচনার প্রেক্ষাপট তৈরি করার জন্যে।‘’
‘’তার মানে আমরা জানলাম কেনো সার্বজনীনভাবে সবাই পরকালের অস্তিত্বে বিশ্বাস করছে!কারণ আরাকানের সেই বায়োলজিস্ট জেসি বেরিং এর সেই এক্সপেরিমেন্ট আসলেই সত্য ছিলো, পরকালের অস্তিত্বে বিশ্বাসের সাথে আমাদের ব্রেন নিউরোলজিক্যাল ফাংশন জড়িত আছে এবং সে জন্যা আমার বা আমাদের মতো কট্টর সংশয়বাদী বা নাস্তিকরাও মৃত্যুর পরে কিছু সাইকোলজিক্যাল স্টেটের বেঁচে থাকাকেই প্রাধান্য দেয়।এরপর

তুমি অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফিজিসিস্ট ভাদিম বেবেঙ্কোর কথা বলেছো, যিনি বিজ্ঞানের সলিড গ্রাউন্ড থেকেই মনে করেন, কোয়ান্টাম মাইক্রোওয়েভ গুলি মৃত্যুর পরেও আমাদের চেতনাকে জীবিত রাখে আর অবশেষে আমরা জানলাম কোয়ান্টাম সুইসাইড এবং কোয়ান্টাম ইমোর্টালিটি যা আসলেই বিষ্ময়কর!অতএব আমরা কোয়ান্টাম মাল্টিভার্স এবং জেসি বেরিং Simulation Constraint Hypothesis of Death Representation এর সম্পর্কের সংযমী একটি মূল্যায়ন করতে পারলাম!এখন প্রশ্ন হলো, তুমি কী পরকালের অস্তিত্বে বিশ্বাস করো?’’

জিতু কখন এসে আমাদের সামনে দাড়ালো তা কেউই অনুভব করতে পারেনি।রিসাসকে উত্তর দেয়ার সুযোগ না দিয়েই সে বলল, রিসাস তুমি কী এখনো মনে করছো, তুমি জীবিত?হায় অবোধ!পরকালের মধ্যে থেকেও এই ছেলে
বুঝতে পারছেনা যে সে আর জীবিত নয়, সে মৃত, সে একটি চেতনা মাত্র!
আপনি?
হ্যা আমি...
তুমি রিসাস না?
হ্যা...
এই মাত্রই তো আপনি আমার সাথে কথা বলেছেন?
নাতো, তুমি শান্তু ?সোনা?
হ্যা প্রমি।বলো...
আমি আকষ্মিক দেখলাম আঙুলটি অদৃশ্য হয়ে গেছে!
আমি সম্পূর্ণ নির্বোধ হয়ে গেছি!
রিসাস উচ্চস্বরে কোভিডকে ডাকলো, যদিও তাকে ডাকার জন্যে এত জোরে শব্দ করতে হয়না।
আমি এসেছি মহামান্য রিসাস ভার্চু!
প্রমির ব্রেন ফ্রিকোয়েন্সি চেঞ্জ করো।ওকে জিতুতে কনভার্ট করো।
ঠিক আছে স্যার, আমি এখনই তার ব্রেন ওয়েভ সাইকেল পরিবর্তন করছি!
জিতু এবার সুরেলা কন্ঠে কথা বলে উঠলো, ওহ রিসাস!
হ্যা, রিসাস, আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো!
আপনি শুধু শুনবেন, আর আমি বলবো।

হ্যা, বলো আমি শুনছি।
আপনার একজন বোন ছিলোনা?
হ্যা ছিলো।
তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিলো?
হ্যা।
তার নাম কী?
জানিনা!!
জানেন না নাকি বলবেননা?
জানিনা!!
আমি যদি বলি আপনার বোনের কোনো অস্তিত্ব ছিলোনা, আপনার বোন আপনার মস্তিষ্কের তৈরি একটি
পালসেশন মাত্র,সে আপনারই আর একটি চরিত্র, আপনারই কল্পনা, আপনারই হলোগ্রাম?
অসম্ভব!
এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোমের নাম শুনেছেন?
না!
ওহ! এটি এমন একটি মানসিক ব্যাধী বা সাই-সিন্ড্রোম যেখানে আক্রান্তের একটি হাত অথবা শরীরের অন্য
কোনো অঙ্গ তার মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকেনা।বিশেষ করে এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোম আক্রান্ত
রোগীর  হাত বা হাতের তালু নিজের ইচ্ছায় নিজেই চলে, ঠিক যেন হাতটির আলাদা একটি মন আছে, এবং সেটি নিজেই চিন্তা করছে!মাঝেমাঝে হাতটি প্রচন্ডশক্তিতে রোগীর নিজের গলাটিপে ধরে অথবা অন্যকারো শ্বাসরোধ করে হত্যা করতে চায়।রোগীর মস্তিষ্ক কোনভাবেই সেই হাতটিকে কন্ট্রোল করতে পারেনা, যেনো হাতটি তার নয় অন্য কারো, অথবা হাতটিকে কোন এলিয়েন পরিচালনা করছে এবং সে এটি তার নিজের উদ্দেশ্যে পূরণের জন্যে ব্যাবহার করছে।রোগীর শরীরে একসাথে দুটি মন কাজ করে।একটি মন তার সমস্ত শরীরের সাথে রিলেটেড আর অন্যটি হ্যান্ড মাইন্ড যা তার ইচ্ছায় পরিচালিত নয়।সাধারণ এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোম সাই-ফাই তথা ফিকশনাল  মুভি গুলিতেই দেখা যায় । ক্রেট জফেল্ড-জ্যাকোব ডিজিজ এবং আলজেইমার ডিজেজ আক্রান্তদের মস্তিষ্ক সার্জারী করার করার পর যদি দুটি হেমিস্ফিয়ার আলাদা হয়ে যায় তবে সাধারণত এলিয়েন হ্যান্ড
সিন্ড্রোম দেখা দেয়। 

কিন্তু এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোমের সাথে আমার বোনের ধর্ষণের সম্পর্ক কী?
সম্পর্ক আছে!

বলো।
না আমি বলতে পারবোনা! এটা আমার পক্ষে বলা অসম্ভব!
জিতুর কন্ঠস্বর গম্ভীর হয়ে গেলো!
তোমাকে আমি বলতে বলেছি, আমার বোনের ধর্ষণের ঘটনা কী মিথ্যা?
না সত্য!
কিন্তু আপনি বলেছিলেন, আপনার বোন নিজের শরীরের নিজে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, কারণ তার নিজের হাতের
উপর নিজের কোনো কন্ট্রোল ছিলোনা, যদি কন্ট্রোল থাকতো তবে সে কখনোই নিজের শরীরে নিজে আগুন
লাগাতো না!
তো?তুমি বলছো যে এটি এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোম?তার মস্তিষ্কের দুটি হেমিস্পিয়ার আলাদা হয়ে যাওয়াটাই
তার ধর্ষণের কারণ!
আকষ্মিক জিতু প্রমিতে কনভার্ট হয়ে যেতে থাকে।
কোভিট-১৯!
ইয়েস স্যার!
ওর ব্রেন ফ্রিকোয়েন্সি চেঞ্জ করো!
স্যার!
জিতু!
বলো!
তোমার বোনের মস্তিষ্কের দুটি হেমিস্ফিয়ার আলাদা হয়ে যাওয়ার পর, তোমার বোন তার একটি হাতের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে!তারপর, একটি হাত নিজের ইচ্ছায় নিজেই পরিচালিত হয়, যাকে সে অদৃশ্য বা অশুভ আত্মা মনে করতো, এবং সেই হাত বারবার তার যৌনিকে স্পর্শ করতে চাইতো!তোমার বোন শত চেষ্টা করেও সেই হাতটিকে কন্ট্রোল করতে পারতোনা, আর ঐ হাতটি একটি স্বতন্ত্র পুরুষের মতো তার জামাকাপড় ছিড়ে ফেলতো এবং যৌনিতে ফিঙ্গারিং করতো! সে তীব্র যৌন সুখ অনুভব করতো! যেহেতু তার ঐ হাতটির উপর তার মস্তিষ্কের কোন নিয়ন্ত্রণ ছিলোনা, সেই হাতটি ক্রমশ পেশাধার ধর্ষক হয়ে উঠে। তোমার বোনকে ঐ এলিয়েন হ্যান্ড লাগাতার ধর্ষণ করতো যা একটা সময় তার মস্তিষ্কে প্রবল আতঙ্ক তৈরি করে! তুমি চুপ করো, তোমার কোন কথাই আমি বিশ্বাস করছিনা, তোমার কেনো মনে হচ্ছে সে নিজের শরীরে নিজে
আগুন লাগিয়ে দিলো?
আপনার বোনের শুধুমাত্র এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোমই নয়, তার এলিয়েন পুসি সিন্ড্রোম ছিলো, তার যোনি তার মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিলোনা। আর এটা তার জন্যে বিশাল ভয়ানক ছিলো!

আমরা সবাই নিস্তব্দ!
আপনার বোনের যৌনি নিজের ইচ্ছায় নিজেই কাজ করতো, মনে হতো যেনো এটিকে ভিন্ন কোন ডায়মেনশন থেকে কন্ট্রোল করা হচ্ছে, তাকে জোরপূর্বক কেউ র‍্যাব করছে, তার কাছে ব্যাপারটি এমনই মনে হয়েছিলো! আপনাদের মস্তিষ্ক মহাকাশে ভ্রমণ করে , সময় ভ্রমণের জন্যে টাইম মেশিন আবিষ্কার করার চেষ্টা করে কিন্তু নারীর যোনি থেকে বের হতে পারেনা!
রিসাস কী বলবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলোনা কিন্তু এভাবে সে সমস্যাটিকে সামাধানবিহীন অবস্থায় রেখে যেতেও পারেনা!
তোমার এ উদ্ভট চিন্তাগুলির জন্যে আমি তোমার কী অবস্থা করতে পারি তুমি অনুভব করতে পারছো? তোমার
কী মনে হয় সে ইচ্ছা করেই পুরুষের কন্ঠে কথা বলেছিলো?এটা তার অভিনয়?এটাকেও কী এলিয়েন ভয়েস
সিন্ড্রোম বলবেন?
না!অভিনয় নয়।
তবে?
যখন সে ক্রমাগত সেক্সুয়াল নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছিলো এবং তার কোনো ব্যাখ্যা খুজে পাচ্ছিলোনা তখন তার মধ্যে প্রচন্ড মানসিক যন্ত্রণা তৈরি হয়, এ মানসিক যন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি পেতে তার মস্তিষ্কে ডি-
এসোসিয়েটিভ ক্যারেক্টারিস্টিক ডিজ-অর্ডার দেখা দেয়। সে একটি চরিত্রের ভেতর সমস্ত মানসিক
যন্ত্রণাকে অবধারণ করতে পারছিলোনা!তাই শতাধিক চরিত্রের মধ্যে সে তার যন্ত্রণাকে বিভক্ত করে দেয়।
তারমধ্যে কিছু চরিত্র নারীর এবং কিছু চরিত্র পুরুষের।আপনার বোন যখন পুরুষের কন্ঠে কথা বলছিলো তখন তার মস্তিষ্কের ওয়েভ প্যাটার্ন সম্পূর্ণ অন্যরকম ছিলো, তার হার্ট এক্সাইটেশন এবং ব্লাড সার্কুলেশনের রিপোর্ট আছে আমাদের নিকট।
ব্বাহ!দারুণ!খুব সুন্দর একটি কনসেপ্ট সৃষ্টি করে ফেলেছো।বাস্তবতার সাথে সম্পর্কহীন কনসেপ্টের জন্যেই
কী তুমি বিখ্যাত হয়েছো?কতদূর যেতে চাও, নোবেল প্রাইজ পর্যন্ত?
নাহ, আমি যে মহাবিশ্বে আছি সেটাই আমার জন্যে নোবেল প্রাইজ।
আপনার বোনের নাম কী ছিলো?
যেহেতু তুমি তার সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছো, যেহেতু তার মনস্তত্ব তার চেয়ে তুমিই বেশি জানো, তবে তুমিই
খুঁজে বের করো!

৪ পর্ব..

রিসাস বুঝতে পারলো যে জিতুর এ নির্জন ঘরটি নিতান্ত সাধারণ নয়।এ ঘরটি হিউম্যান সাইকোলজির উপর গভীর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।সেদিন কেনো আকষ্মিক জিতু তার শরীর জড়িয়ে ধরেছিলো তার সেই আকষ্মিক চুম্বনের কারণ কী?আর কেনোই বা তার মস্তিষ্কে টানেল ইফেক্ট তৈরি হয়েছিলো আর জিতুই বা সেটা কীভাবে বুঝতে পেরেছিলো তা এখনো রিসাসকে বিষ্মিত করে।জিতুর কক্ষে বিভিন্ন পরিত্যাক্ত পশুর  কঙ্কাল এবং ফসিল দেখে রিসাসের সর্বপ্রথম মনে পড়েছিলো ডায়োজিন সিন্ড্রোমের কথা। এ মানসিক ডিজ- অর্ডারটির নাম রাখা হয়েছে গ্রীক দার্শনিক ডায়োজিনের নামে।ডায়োজিন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা রাস্তা অথবা অন্যদের ঘরবাড়ী থেকে বিক্ষিপ্ত জিনিস পত্র খুজতে পছন্দ করে।যেমন- বিভিন্ন রকমের বোতল,জামাকাপড়, পরিত্যাক্ত যন্ত্রপাতি,জুতা এবং বই-খাতা ইত্যাদি।তারা কিছুতেই নিজেদের মস্তিষ্কের ইচ্ছাকে কন্ট্রোল করতে পারেনা।এদের লজ্জাবোধ নষ্ট হয়ে যায়।বিষ্ময়করভাবে এ ঘরটি একজন ডায়োজিন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত রোগীর উপস্থিতিকে নির্দেশ করছে কিন্তু এই মানসিক রোগী কে?আবার তার দেয়ালে অজস্র হাতের চাপ থেকে রিসাস রীতিমত বিষ্মিত হয়েছিলো যদিও সে তার বিষ্ময়বোধটুকু চাপিয়ে রেখেছে।কেনো দেয়ালে এত শত হাতের চাপ, তাও রক্তের!একই হাতের চাপকে দেয়ালে কেনো এত হাজার বার রিপিট করা হলো, এ কপিপেস্টেশন কী আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে?রিসাস এ প্রশ্নের উত্তর জানার জন্যে আমাকে জিতুর
কক্ষে পাঠায় এবং আমি প্রচন্ড আতঙ্ক আর অসহায়ত্ব নিয়ে তার ঘর তল্লাসী করি, অনেক খোঁজ করার পর জিতুর ঘরে একটি ডায়রি পাওয়া গেলো, সেখানে একটি সাধারণ যোগ অংক লিখা আছে, ২+২=৫।এ অংকটি সমস্ত ডায়রিতে রিপিট করা হয়েছে।দুই দুইয়ে কিভাবে পাঁচ হয় সেটা আমার জানা নেই, হয়তোবা কোভিড জানে।কিন্তু আপাতত আমি রিসাসের সংশয়ের সাপেক্ষে একটি প্রমাণ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি। রিসাস বলল, আমার সন্দেহই সঠিক।প্রিজম রিসাসের দিকে বিষ্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, বুঝিনি রিসাস!তোমার সন্দেহের ধরণ?আসলে আমার সন্দেহ ছিলো কোয়ারেন্টিন নামক এ স্থানটিতে কেউ একজন Obsessive Compulsive Disorder আক্রান্ত। ওসিডিকে বিভিন্নভাবে ক্যারাক্টারাইজড করা যায়, বিশেষ করে এ ধরণের মানসিক রোগীরা প্রচন্ড আতঙ্ক অনুভব করে, দুশ্চিন্তা করে এবং সবসময় দুশ্চিন্তা করে।এরা একটি কাজকে বারবার রিপিট করতে থাকে।যেমন তুমি যদি তাদেরকে একটি শব্দ লিখতে দাও তবে তারা সেটিকেই সারাদিন কপিপেস্ট করতে থাকবে।বিজ্ঞানীরা এখনো ওসিডির সঠিক কারণ নির্ণয়
করতে পারেন নি, তবে তারা মনে করেন মস্তিষ্কের কিছু ক্যামিকাল এর জন্যে দায়ী।আমি বিষ্ময়ের সুরে
প্রশ্ন করলাম,কোয়ারেন্টিন পাহাড়টাই কী সাইকো?কী হচ্ছে এখানে সব?এখনো কোনোকিছুই হয়নি
অজ্ঞাত।হবে।সে জন্যে প্রস্তুত হও।রিসাসের কথা শুনে আমার রক্ত আতঙ্কে শীতল হয়ে
গেলো!আমাদের একবার বৃদ্ধের সাথে কথা বলা উচিত।আমি,প্রিজম এবং সাইকিয়াট্রিস্ট
কোয়ারেন্টিন থেকে বেরিয়ে আসি এবং আশ্চার্য হয়ে দেখি পাহাড়ের ধারে প্রায় ডজন খানেক কুচকুচে
কালো শিশু ২+২=৫ এ অংকটিকে মাটিতে অবিরাম লিখে যাচ্ছে!এরা কী সবাই অবসেসিভ কমপুলসিভ
ডিজ-অর্ডারে আক্রান্ত?প্রিজম প্রশ্ন করে! এ এমকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা, অনেক খোঁজাখুঁজির
পর একটি লোককে গরুর শিং পরিধান করা অবস্থায় ঘাস খেতে দেখা যায়, সে দাত দিয়ে চিপিয়ে চিপিয়ে
ঘাস খাচ্ছে!রিসাস এগিয়ে যাচ্ছে, আমরাও তার পিছু পিছু একটি সমতল মাঠে এসে দাঁড়াই।আপনি
এখানে?
হ্যা!হাম্বা...
আপনি গরুর মতো ঘাস খাচ্ছেন কেনো?
হাম্বা...
কথা বলুন...
হাম্বা হাম্বা করছেন কেনো, আপনি আবু মোমিন না?

না!আমি গরু, হাম্বা...
আপনি আমাদেরকে জিতুর মানসিক সাইকোলজির উপর গবেষণা করার জন্যে নিয়ে এসেছেন কিন্তু
আপনি নিজেও তো মানসিকভাবে সুস্থ্য নন!
হাম্বা!
আমি অবশেষে হাল ছেড়ে দিলাম!
এ লোকটাকে যাই বলি সে শুধু হাম্বা হাম্বা করছে!
রিসাস বলল, প্রিজম প্রহরীদের বলো, এ লোকটাকে যত দ্রুত সম্ভব বাসায় লকডাউন করতে, যে
কোনো সময় সে ধার্মিকদের খপ্পড়ে পড়তে পারে, আর একবার যদি সে ধার্মিকদের খপ্পড়ে পড়ে তবে
আর রক্ষা নেই!
কিন্তু কোথায় প্রহরী?তারাও ঘাস খাচ্ছে?
এই বিরাট বিরাট পাহাড় ঘেরা সমতল ভূমিটুকুকেই দ্যা প্লেস অব কোয়ারেন্টাইন বলা হয়, বাদিম
বেবেঙ্কোর উপন্যাসে রিসাস যেমনটি পড়েছিলেন, উপন্যাস কীভাবে বাস্তবতা লাভ করে, তাহলে
উপন্যাস প্যারালাল ইউনিভার্সের কথা বলে?
প্রিজম প্রশ্ন করলো, রিসাস এসবের কারণ কী?
রিসাস নিশুপ হয়ে আছে, কোয়ারেন্টাইনে আসার পর রিসাসের ব্রেন চ্যানেলই পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে,
এনভায়রণমেন্ট এবং ইনফরমেশনই মানুষের সাইকোলজি তৈরি করে, এটা রিসাস খুব ভালোভাবে অনুভব
করতে পারছে!তার মস্তিষ্কের ভেতর একটি অস্বাভাবিক চিন্তাশক্তি প্রবেশ করার চেষ্টা করছে
এবং পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে!
রিসাস আমাকে প্রশ্ন করলো, প্যারিস সিন্ড্রোমের নাম শুনেছো?
না স্যার।
আপনি বলুন।
এ আজব মানসিক ভারসাম্যহীনতাটি প্যারিস ভ্রমণ করার সময় সৃষ্টি হয় যা একজন  ব্যাক্তিকে প্যারিস
ভ্রমণের সময় একেবারেই দুর্দমনীয় করে তোলে।মজার ব্যাপার হলো, এ মানসিক সমস্যাটি বিশেষ করে জাপানি ভ্রমণকারীদের মধ্যেই বেশি পরিলক্ষিত হয়। জাপানি ট্রাভেলারসদের মধ্যে এটি একেবারেই কমন।কমপক্ষে ছয় মিলিয়ন জাপানি প্রতি বছর প্যারিস ভ্রমণ করে এবং কয়েক ডজন কেস পাওয়া যায় যেখানে মানসিক রোগীরা উত্তেজনা,ডি-পারসোনালাইজেশন, ডি-রিয়েলাইজেশন, হেলোচিনেশন এবং তীব্র ডিলুশনের  অভিজ্ঞতা অনুভব করে যা দ্বারা প্যারিস সিন্ড্রোমকে ক্যারেক্টারাইজড করা হয়।অধিকাংশ লোক যারা প্যারিস সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয় তাদের মস্তিষ্কে অতীতের কোন মানসিক সমস্যার রেকর্ড নেই।অনেক গবেষক এই নিউরোলজিক্যাল ট্রিগারের কারণ হিসেবে language barrier, physical and mental exhaustion কে দায়বদ্ধ করেন।আবার অনেক গবেষক মনে করেন, প্যারিসের রিয়েলিটির সাথে আইডিয়ালাইজড ভার্সনকে কম্পেয়ার করতে গিয়েও এ ধরণের সিন্ড্রোম দেখা দেয়।
‘’স্যার আপনি কী বলছেন, কোয়ারেন্টাইন পাহাড় আমাদের মস্তিষ্কের নিউরোলজিক্যাল ফাংশনকে ফোর্স
করছে, আমরাও হেলোচুনেশনে আছি?’’
হ্যা...
মানে?

এখানে গার্ডরা ঘাস খায়নি কিন্তু তোমরা গার্ডদের ঘাস খেতে দেখেছো, এটি একটি ইলুশন ছিলো!
কিন্তু আপনি কীভাবে জানলেন?
কারণ আমার সাথে একটি যান্ত্রিক রোবট আছে যার কপোট্রনে হেলোচুনেশন তৈরি হয়না, তুমি যখন কোভিডকে
বলবে, ডানে যাও, সে ডানে না গিয়ে কিছু জটিল ইকুয়েশন কষবে, আর সেটাই তার ডান দিক।
কিন্তু আবু মোমিন লোকটা হাম্বা হাম্বা করছে কেনো?
এটা একেবারেই সহয ব্যাপার অজ্ঞাত!
আমার তো কোনোকিছুই মাথায় আসছেনা, একটা লোক কিভাবে নিজেকে গরু হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে আবার হাম্বা
হাম্বা করে ডাকছে, আমরা উনার ছেলের বয়সী!
ওহো!
হ্যা...
ক্যাপগ্রাস ডিলুশনের নাম শুনেছো?
না!শুনিনি!
‘’ক্যাপগ্রাস ডিলুশন এমন একটি মানসিক ব্যাধী যেখানে একজন সাইকি মনে করে তার চারপাশের সব মানুষগুলিই ছদ্মবেশ ধারণ করেছে।তারা মনে করে তাদের প্রতিবেশি এবং বন্ধুরা তাদের চেহারাকে নকল করে তার চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে।জোসেফ ক্যাপগ্রাসকে পর্যবেক্ষণ করার পর একজন ফ্রেন্স সাইকিয়াট্রিস্ট সর্বপ্রথম এই ডাবল ইলুশন দেখে বিষ্মিত হয়ে উঠেন।তিনি কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না একজন ব্যাক্তির মস্তিষ্ক কিভাবে সবাইকে ডুপ্লিকেট মনে করছে!৭৪ বছর বয়সী ক্যাপগ্রাস একদিন আকষ্মিক মনে করতে শুরু করলো তার স্বামী কোন কারণে ছদ্মবেশেই তার চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে।ক্যাপগ্রাস ডিলুশন তাদের মাঝেই দেখা যায় যারা ট্রামা আক্রান্ত এবং যাদের মস্তিষ্কে ডেমেন্টিয়া, সিজোফ্রেনীয়া অথবা এপিলেফসি ধরা পড়েছে।‘’

আমি আহত হলাম, রিসাস শেষ পর্যন্ত আমাকে মানসিক রোগী প্রমাণ করার চেষ্টা করছে!একজন
সাইকিয়াট্রিস্ট জগতের সর্বত্র মানসিক সমস্যা ছাড়া আর কোনোকিছু দেখেনা?আমার তো মনে হয় আপনি স্বয়ং ঈশ্বরের মস্তিষ্কেও সমস্যা খোঁজার চেষ্টা করবেন!

প্রিজম উচ্চস্বরে হেসে উঠে।আরেহ ব্যাটা!তোমাকে মানসিক রোগী প্রমাণ করবে কেনো, তোমাকে মানসিক রোগের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে!
না!স্যার প্রমাণ করার চেষ্টা করছে আমি ক্যাপগ্রাস ডিলুশনে আক্রান্ত আর সেজন্যে এ এম কে গরুর
ছদ্মবেশে ঘাস খেতে দেখছি!

না না অজ্ঞাত, আমরাও তো দেখেছি!
ঐ দেখ লোকটা জঙ্গলে পালিয়ে যাচ্ছে!
অজব!রিসাস এখনো কী তুমি বলবে এটা আমাদের চোখের ভ্রম?
না প্রিজম, এ এম আসলেই নিজেকে গরু মনে করছে কারণ সে সাইকোলজিক্যালি অসুস্থ্য, এ রোগটির নাম
বোনট্রপি!
মানে কী?
বোনথ্রপি এমন একটি মানসিক গোলযোগ যেখানে একজন রোগী নিজেকে গাভী বা গরু মনে করে এবং সে গরুদের সাথে একসাথে ঘাস খায়, ঘন্টার পর ঘন্টা মাঠে ঘুরে বেড়ায়।তারা কোনোকিছুতেই বুঝতে পারেনা তারা আসলে কী করছে যখন তারা গরুর চরিত্রে অভিনয় করে যা গবেষকদের সিদ্ধান্ত আসতে বাধ্য করেছিলো যে –বোনথ্রপিরা সে সময় স্বপ্নময় অবস্থায় থাকে অথবা কোন না কোনভাবে তাদের মস্তিষ্ক হিপনোটাইজড হয়।কারণ একমাত্র স্বপ্নের মধ্যেই আমরা বাস্তবতাকে ভুলে যাই।মজার ব্যাপার হলো বাইবেলেও এ রোগটির কিছু সিন্ড্রোম লিখা
আছে।
ওহ!তাহলে উনি বোনট্রপিতে আক্রান্ত?
হতে পারে!
বোনট্রপির মতোই এটিও একটি মেন্টাল ডিস-অর্ডার ক্লিনিক্যাল লায়কেনট্রপি যেখানে একজন আক্রান্ত মনে করে তার পশু-পাখিতে মিউটেট হওয়ার ক্ষমতা আছে।বিশেষ করে ভাল্লুকে।ক্লিনিক্যাল লায়কেনট্রপিতে আক্রান্ত হওয়ার পর একজন রোগী বিভিন্ন প্রাণীর চরিত্রে অভিনয় করতে থাকে এবং বনে জঙ্গলে পালিয়ে
যেতে চায়।

প্রিজম বলল, রিসাস আমার প্রচন্ড মাথা ঝিমঝিম করছে!আমি এ প্রাকৃতিক দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে
পারছিনা, আমার ইমোশনাল আউটব্রাস্ট হবে মনে হচ্ছে।

যেমনটি আমারও হয়েছিলো যখন জিতুর সাথে আমার প্রথম দেখা হয়, আমি বিখ্যাত চিত্রকল্প দ্যা লুসিয়ান ফ্রয়েডের দিকে তাকিয়ে ছিলাম এবং আমার মস্তিষ্কে ক্যাটামিনের নেশা কাজ করছিলো আর ঠিক তখনই জিতু আমার শরীরে ঝাপিয়ে পড়ে এবং আমি সেন্সলেস হয়ে যাই আর সাথেসাথে অদৃশ্য কিছু মানুষ এবং ভয়ানক কিছু শব্দ শুনি।আমার শারীরীক চেতনা কাজ করছিলোনা, এবং আমি দেখি আমি একইসাথে জীবিত এবং মৃত।আমার একটি শরীর মহাশূন্যে ভেসে যাচ্ছে আর অন্যটি সোফায় নিথর হয়ে পড়ে আছে!এটা একটি হেলোচিনেশন হবে সম্ভবত, পারকিনসন রোগীদের যেমন হয়ে থাকে কিন্তু ফ্যাক্ট হলো লুসিয়ান ফ্রয়েডের দিকে তাকানোর পর
আমার ভয় লেগেছিলো, মনে হয়েছিলো ছবিটি জীবন্ত, থ্রি-ডায়মেনশনাল স্পেসে হলোগ্রামের মতো প্রবাহিত হচ্ছে।এর নাম স্ট্যান্ডাল সিন্ড্রোম [ Stendahl Syndrome] এটি একটি টেম্পোরাল মেন্টাল ডিস-

অর্ডার।দীর্ঘক্ষণ একজায়গায় দাঁড়িয়ে অনেক বেশি পরিমাণের চিত্রকল্প দেখলে এ মানসিক সমস্যাটি দেখা দেয়।অথবা এমন কোন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকলে যেখানকার পরিবেশ চুড়ান্ত মাত্রায় সুন্দর।গবেষকরা বলেন, those who experience this odd, yet scary mental disorder report sudden rapid heartbeat, overwhelming anxiety, confusion, dizziness, and even hallucinations। উনিশ শতকে ফ্রেন্সের একজন রাইটার এ মানসিক সমস্যাটির নামকরণ করেন ফ্লোরেন্স ভ্রমণের সময় যিনি এ অভিজ্ঞতাটি ১৮১৭ সালে অর্জন করেছিলেন।

প্রিজম সেন্সলেস হয়ে গেছে, কোনোকিছুতেই তাকে সচেতন করা সম্ভব হচ্ছেনা, রিসাস জানে এটা খুবই
সংকটজন একটি অবস্থা।এবং এ মুহূর্তে প্রিজমের সাথে কী ঘটছে সেটাও সে জানে।কিছু অদৃশ্য সত্ত্বা আসবেএবং তাকে হত্যা করতে চেষ্টা করবে সে অনেক চিৎকার করবে কিন্তু কেউ শুনবেনা আর প্রিজম আমাদের কাউকেও দেখবেনা কারণ তখন তার চেতনা অন্যকোনো মহাবিশ্বে অস্তিত্বশীল হয়ে উঠে!

৫ পর্ব

জিতু বিভিন্ন কালারের কম্বিনেশনে তৈরি একটি জামা পরিধান করেছে আজ।হয়তোবা কালার থেরাপির একটি ব্যাপার থাকতে পারে এতে।জিতু রিসাসকে উদ্দেশ্য করে বললো, আপনার ভবিষ্যত নিয়ে ভয় নেই?
না নেই।কারণ যা এখনো ঘটেনি তা নিয়ে চিন্তা করার সময় আমার নেই।
জন হুইলারের মতো কথা বললেন!
তাই?ব্বাহ!আপনি জন হুইলারকে চেনেন?
না!
তবে?
আমাকে কোনোকিছু চিনতে হয়না!
ওহ!
জন হুইলারের রেট্রো-কজালিটি সম্পর্কে তোমার আগ্রহের মাত্রাটা আমার পছন্দের!
আচ্ছা!
তিনি কী বলেছে জানো?
বলুন...

তিনি বলেছিলেন, মাইক্রো-কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন তের বিলিয়ন বছর অতীত থেকে সময় ভ্রমণ করে আমাদের কাছে আসেনি বরং আমরা যখন পর্যবেক্ষণ করেছি তখনই মাইক্রো-কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন  তের বিলিয়ন বছর অতীতে বাউন্স করেছে, তার মতে আমি যদি বর্তমানে উপস্থিত না থাকি তবে যেমনিভাবে সাব-এটমিক পার্টিকেলগুলি অস্তিত্বশীল হতে পারেনা ঠিক তেমনিভাবে তের বিলিয়ন বছর অতীতের আলোক তরঙ্গ আমার পর্যবেক্ষণেই অস্তিত্বশীল হয়ে উঠে তার মতে, তের বিলিয়ন বছর অতীতে
বিগব্যাং ঘটানোর জন্যে আমার সাম্প্রতিক উপস্থিতির প্রয়োজন আছে...!
আমি বিষ্মিত হয়ে জিতুর দিকে তাকিয়ে আছি...।এ মেয়েটি খুবই রহস্যজনক...!আমি এর মধ্যে ক্রমশ ডুবে
যাচ্ছি...!
রিসাস!
বলুন...
তোমার কী মনে হয় রেট্রো-কজালিটি থিওরি অনুসারে, বিগব্যাং এমনি এমনি ঘটেছে নাকি সেখানে পর্যবেক্ষণ
প্রেজেন্ট ছিলো?
আমি জানিনা...
তুমি জানোনা?হাহাহ!
জিতু এমনভাবে তাচ্ছিল্য করলো মনে হলো রিসাস বিশাল এক মিথ্যা কথা বলেছে!
শুনো...
বলুন।
তুমি একটু হাসবে?তোমাকে আমি কখনোই অকারণে হাসতে দেখিনি, খুব ইচ্ছে করছে...
আমি অকারণে হাসিনা!
ওহ, তোমার প্রতিটি হাসিও লজিক্যাল?
হ্যা...এবং না।
প্যারাডক্সিক্যাল আচরণ করছো কেনো?
আমার ইচ্ছে!
হাহাহ!এ প্রথম মহাবিজ্ঞানী রিসাসকে শিশুদের মতো আচরণ করতে দেখলাম!
হুম।।
দেখো রিসাস!বিগব্যাং পয়েন্টের দৈর্ঘ,প্রস্থ অথবা উচ্চতা ছিলোনা এবং এটি সময়ের ডিউরেশন শূন্য ছিলো!যা ফোরথ ডায়মেনশনাল মহাবিশ্বে লোকেটই করেনা তা এম্পটি, এখানে কোন ‘’ল’’ অব ফিজিক্স কাজ

করতোনা!অতএব বিগব্যং পয়েন্টের ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের পক্ষে প্রেডিক্ট করাও সম্ভব
নয় তারা শুধু এতটুকুই বলতে পেরেছে, এটি এমন একটি বিন্দু যার অতীতে কোনো গতকাল নেই এবং যার পরে কোনো আগামীকাল আসবেনা, এটি শুধু অসীম মহাবিশ্বকে একসাথে নিয়ে উপস্থিত কিন্তু এ উপস্থিতিক ফোরথ ডায়মেনশন দ্বারা পরিমাপ করা যায়না।আবার জন হুইলারের মতে, একমাত্র পর্যবেক্ষক প্রেজেন্ট বলেই, সাব-এটমিক পার্টিকেলগুলি সুপারপজিশনকে কলাপস করে একটি মহাবিশ্বে রিজোন্যাট হয়!তিনি মনে
করতেন, শুধুমাত্র পর্যবেক্ষকই প্রেজেন্ট আর সবকিছু হয়তোবা পাস্ট অথবা ফিউচার!

হুম!তারপর?
আমার প্রশ্ন হলো যদি বিগব্যাং পয়েন্ট একইসাথে এবং একইসময় সুপারপজিশনাল পার্টিকেলের মতোই অসীম
মহাবিশ্বের মাঝে নট-লোকালি প্রেজেন্ট থাকে তবে কেনো বিগব্যাং বিন্দু বিস্ফোরির হয়ে শুধুমাত্র আমাদের
ফোরথ ডায়মেনশনাল ইউনিভার্স তৈরি হলো?
আসলেই তো!কেনো?
কারণ আমি মনে করি বিগব্যাং পয়েন্ট ছিলো একটি সুপারপজিশন যেটি একইসময় এবং একই সাথে মাটি ট্রিলিয়ন ইউনিভার্সে বাউন্স করতো শুধুমাত্র তার মধ্যে পর্যবেক্ষণ বা চেতনা উপস্থিত ছিলো বলেই সেটি তার সুপারপজিশন কলাপস করে একটি মহাবিশ্বে বিস্ফোরিত হয়েছে যে মহাবিশ্বটিতে তুমি এখন আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছো, হয়তো তুমি আসবে বলেই মহাবিশ্বের ফিজিক্স এবং ফান্ডামেন্টাল কনস্ট্যান্টগুলি এমনভাবে ফাইন টিউন করা হয়েছে যেনো এ মহাবিশ্ব তোমার পর্যবেক্ষণে ফোরথ ডায়মেনশনে অস্তিত্বশীল হয়ে উঠে!আমি তোমাকে দেখবো বলেই এ স্পেস-টাইম এক্সপেন্ড হয়েছে!
কি রিসাস?আমি কী তোমার মন পড়তে পারি?
হয়তো...
তোমাকে আজ যথেষ্ঠ শান্ত মনে হচ্ছে, কারণ কী?
কিছু নয়...
তুমি অল্প কথায় উত্তর দিতে পছন্দ করো?
কোন শব্দ ছাড়াই উত্তর দিতে পছন্দ করি...
তুমি কী জানো তুমি আমার মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রিক্যাল পালস?
হ্যা জানি।কারণ মানুষের মস্তিষ্কে স্বপ্নে যে ইলেক্ট্রিক্যাল পালস দ্বারা রেসপন্স করে বাস্তবতার জন্যেও
একই ইলেক্ট্রিক্যাল পালস।তাই স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই!
আপনার বোনের নাম অনু?
হ্যা...তোমাকে প্রথমেই বলেছিলাম?

সেও কী আপনার নিউরাল পালস?
না!!
তাহলে?
চুপ করুন আপনি, একটা কথাও বলবেন না!!

সারভিক্স থেকে ভালবা পর্যন্ত বিস্তত একটি নালীকে যোনি বলে...এ নালী দিয়ে নারী আর পুরুষে পার্থক্য করা হয়!আর যোজক কলার একটি পাতলা ঝিল্লি ছিড়ে গেলে সেটাকে সতিচ্ছেদ বলা হয় যেটি অপারেশনের মাধ্যমে আবার ঠিক করে দেয়া যায়!নারী এখনো তার সতিচ্ছেদ করে বের হয়ে আসতে পারেনি, একটা ঝিল্লি ছিড়ে গেলে একটি মেয়ের সমস্ত জীবনও ছিড়ে যায়!আমি আপনাকে নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে দেখছি।

আচ্ছা... বিরাট নারীবাদী!

হ্যা... নারীবাদ হলো পুরুষের আত্মশুদ্ধির একটি উচ্চতর প্রকৃয়া।যিনি নারীবাদ সমর্থন এবং চর্চা করেন তিনি নিজের ভেতর জেনেটিকালি বিদ্যমান পুরুষতন্ত্রের সমালোচনা করেন।তিনি এমন একজন পুরুষ যিনি নিজের জেনেটিক্যাল সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন এবং তীব্রভাবে আত্ম-সমালোচনামুখর।যিনি নিজের বিবর্তনীয় প্রকৃয়ার মধ্যে সচেতনভাবে হস্তক্ষেপ করে নিজের জেনেটিক্যাল এডিশনে নিজেই অংশগ্রহণ করেন।নারীবাদী হতে হলে ফিজিক্সের সুত্রের মতো নিষ্কাম এবং নিরপেক্ষ হতে হয়।

তাই আমি সীমিত আকারে নারীবাদ চর্চা করি। কিন্তু একজন মানুষ হিসেবে নিজেকে নারীবাদী বলে প্রচার করতে লজ্জাবোধ করি কারণ একজন নির্লজ্জের পক্ষে কখনো সত্য এবং নিরপেক্ষতার মধ্যে জীবন যাপন্ন করা
সম্ভব নয়।

‘’ওহ, তুমি তো দেখছি মহাপুরুষ!’’
যাইহোক,আমি আপনার রহস্য আবিষ্কার করেছি জিতু...
কী সেটা?
বললে, আপনি অসম্মানিত হবেন!
না, হবোনা।
আপনি নিজেই অনু...
হোয়াটস?
হ্যা হ্যা, আপনি নিজেই অনু...

আপনি নিজেই নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু ভাগ্যের ব্যাপার হলো সেটা আপনার শরীরের কিছু
অংশকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে!
না, তুমি আমার শরীরে কোনো আগুনের পোড়া দাগ দেখাতে পারবেনা!
কিন্তু আপনি তো এখন জিতু, এ মুহূর্তে আপনার শরীরে আগুনের পোড়া দাগ নেই!
তুমি কী বলছো, আমি আমার জেনেটিক্যাল এক্সপ্রেসন পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখি...
হ্যা, রাখেন।
তুমি কী বলছো আমার এলিয়েন হ্যান্ড এন্ড পুসি সিন্ড্রোম?আমি নিজের যোনিকে সংবরণ করতে পারিনা?আমি নিজের সাথে নিজেই সেক্স করি?নিজেকে নিজে ধর্ষণ করি?আমি নিজেকে নিজে প্র্যাগন্যান্ট করি?
না, আপনি সেটা করেন না!
তাহলে কে করে?
প্রমি!
প্রমি কে?
আপনি।।
মানে!!
আপনার আসল নাম প্রমি, জিতু আপনার রিয়েল ক্যারেক্টার নয়, আপনি মাল্টিপল ক্যারেক্টারিস্টিক ডিজ অর্ডারে আক্রান্ত।আপনি যখন প্রমির চরিত্রে থাকেন তখন আপনি আপনার অর্গানের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না, আপনি সবাইকে তখন সোনা,জাদু,লক্ষি ইত্যাদি ডাকেন এবং আমাকেও ডেকেছেন এবং আপনি আমার সাথে জোরপূর্বক সেক্স করেছেন!আপনার হাতের অমানবিক শক্তিকে আমি অতিক্রম করতে পারিনি, একটা পর্যায়ে আমি চেতনা হারিয়ে ফেলি এবং কিছু উদ্ভট পরাবাস্তব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই, কারণ আপনি আমাকে ক্যাটামিন দিয়েছিলেন।শুধু তাই নয়, আপনি অজস্র মেয়ের সাথে সমকামীতা করেছেন কারণ আপনার উপর আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, আপনি নিজ হাতে আপনার মাকে হত্যা করেছেন এবং অজাচার করেছেন নিজের ফ্যামলি মেম্বারদের সাথে কিন্তু যখন আপনি অনু চরিত্রে সুইপ করেন তখন আপনার এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোমই শুধু অবশিষ্ট থাকে, এবং আপনি অনেক শান্ত, শিষ্ট, কোমল আর ভদ্র হয়ে উঠেন, আপনার মধ্যে
অনুশোচনাবোধ কাজ করে আর আপনার এলিয়েন হ্যান্ডটি আপনার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয়।

জিতু চুপ করে থাকে!সে কোনো প্রতুত্তর করছেনা, কারণ একমাত্র জিতু চরিত্রটিই অত্যন্ত প্রখর এবং তীব্র
বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন।আপনার কয়েকটি পুরুষ চরিত্র আছে যাদের নাম প্রিজম,অজ্ঞাত এবং রিসাস বা আমরা!!
তাই...প্রমাণ?

কারণ আপনি কোয়ারেন্টিন পাহাড়ে প্রবেশ করার পর থেকে বলছেন, আমি আপনার মস্তিষ্কের নিউরাল
পালস।আমার প্রথমে মনে হয়েছিলো আপনি কালার ব্লাইন্ড কারণ আপনি যখন অনু চরিত্র চর্চা করেন তখন আপনার ঘরের কোথাও লাল বা সবুজ জামা রাখা হতোনা কিন্তু পরে মনে হয়েছিলো আপনার মস্তিষ্কের প্রাইমারী ভিজুয়াল এরিয়া ডেমেজ হয়ে গিয়েছে কারণ আপনি বারবার বলছিলেন, আমরা আপনার মস্তিষ্কের পালস, তার মানে আপনি আমাদের সাব-কনসাসলি বা এবস্ট্রাক্টলি ফিল করতে পারেন বাস্তবে দেখেন না, আপনার কাছে আমাদেরকে সাব-কনসাস ফিলিংস মনে হয়!কিন্তু আমি আকষ্মিক বুঝলাম আপনার প্রমি চরিত্রের ভিজুয়াল কর্টেক্সে সমস্যা থাকলেও জিতু চরিত্রের ভিজুয়াল কর্টেক্সে কোনো সমস্যা নেই কিন্তু
আপনি তবুও আমাদেরকে আপনার মস্তিষ্কের পালস মনে করেন!
এর কারণ কী জানেন?

বলো...
এর কারণ হলো আমরা আপনার তিনটি আলাদা আলাদা সাব-কনসাস ক্যারেক্টার, যেগুলি আপনার মধ্যেবিভিন্ন সময় সুইচ অন হয়, কিন্তু আমরা আসার পর থেকে আপনি ইলুশনের মধ্যে পড়ে গেছেন, আপনার মনে হচ্ছিলো যে আপনি জিতু থেকে রিসাস চরিত্রে কনভার্টেট হয়েছেন কিন্তু আমি যে বাস্তব রিসাস সেটা আপনার ব্রেন বুঝতে পারেনি বা আপনাকে আপনার মস্তিষ্কে প্রতারিত করেছে।আমরা কোয়ারেন্টিনে বাস্তবে প্রবেশ
করার পর থেকে আপনি আমাদেরকে নিজের ভেতরের প্রিজম,অজ্ঞাত এবং রিসাস মনে করা শুরু করে দিয়েছেন!

আমার আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্ট, কোভিড-১৯ পর্যন্ত আপনার দ্বারা প্রতারিত হয়েছিলো, সে আপনাকে
ভয় পেতো কারণ আপনার মস্তিষ্কে সে আমার নিজের চরিত্রের প্রতিফলন দেখতে পেতো!

আমরা সবাই রিসাসের বুদ্ধিমত্তার তীব্রতা দেখে বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে আছি... আকষ্মিক জিতুর চরিত্র অনুতে
কনভার্ট হলো, রিসাস কোভিডকে ডাকার পূর্বেই তার মধ্যে এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোম দেখা দিলো এবং চোখের
মধ্যে ধারালো একটি কাচের টুকতো ঢুকিয়ে দিলো!সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছে, কোভিড তার ব্রেন
ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করতে পারছেনা।কিন্তু আকষ্মিক একটি দূর্লভ চরিত্র সক্রিয় হয়ে উঠলো তার
মধ্যে।প্রিজমের চেতনা এখনো ফিরেনি সে এসবের কোনোকিছুই দেখছেনা, বৃদ্ধ লোকটি জঙ্গল থেকে আর ফিরে
আসেনি, কোয়ারেন্টিন পাহাড়ের এ নির্জন ক্যাম্পাসটিতে এখন শুধু আমি আর রিসাস।প্রমি রিসাসের সাথে
শারীরীক সঙ্গমে লিপ্ত, কিন্তু কিছুক্ষণ আগে যে সে একটি চোখ উপড়ে ফেলেছিলো তা সম্পূর্ণ মুছে গেছে।সে
সম্পূর্ণ সুস্থ্য।কোভিড বলেছিলো, একমাত্র কোয়ান্টাম হলোগ্রাম দ্বারাই এই ঘটনাটিকে এক্সপ্লেইন করা
যায়।রিসাস কোনো রকমে প্রমির শক্তিশালী এলিয়েন হ্যান্ড থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো এবং কোভিডকে
নির্দেশ করলো তার ব্রেন ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করে দিতে, আকষ্মিক প্রমি কন্ঠে প্রিজমের স্বর শোনা
যায়।আমি আমার সমস্ত শরীর কেটে ফেলবো!কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবো!রিসাস ভূত দেখার মতো চমকে
উঠে, প্রিজমের চরিত্রটি কোভিডের সুইচ অফ করে দেয়!যেনো তার মস্তিষ্কের ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন
করতে না পারে, একটি ধারালো চুরি দিয়ে প্রিজম তার দুটো পা কেটে কয়েক টুকরো করে ফেলে!এবং হামাগুড়ি
দিয়ে সে পা গুলিকে ফ্রিজের মধ্যে রেখে আসে, সমস্ত কক্ষ রক্তে রঞ্জিত হয়ে গেছে, সম্ভবত মেয়েটি আর

বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারবেনা, সে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে, চোখে আনন্দের অশ্রু!!আমি চিৎকার করে
বললাম, আমাদের সাথে এসব কী হচ্ছে?এ স্বপ্নটি কখন ভাঙবে?আমরা কখন বাস্তব জগতে ফিরে যাবো,
স্যার!!

৬ ষ্ট পর্ব...


সবচেয়ে বেশি অস্বস্তি অনুভব করেছিলাম তখন যখন জিতু তার নিজের রুপে ফিরে এসেছে কিন্তু তার হাত পা
পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসেনি।ক্ষত,বিক্ষত শরীর নিয়ে সে রিসাসকে বলছিলো, সোনারে! আমি তোমার আবিসা,
তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি।আবিসা রিসাসের প্রেমিকা।আকষ্মিক জিতুর মৃত্যুতে রিসাস মনস্তাত্বিকভাবে
বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে।বাস্তব আবিসার সাথে দেখা হওয়ার পরেও সে তাকে চিনতে পারছিলোনা তার মনে গেঁথে
ছিলো হাত,পা,চোখহীন একজন রক্তাত্ব সুন্দরী নারী বিকৃত দেহ অথচ অন্তহীন আকুলতা, কত গভীরতা ছিলো
সেই ডাকে, জিতুর মস্তিষ্কের একটি ফ্রিকোয়েন্সি রিসাসের সমস্ত জীবন এলোমেলো করে দিলো!আমরা আজো
জানিনা, কেনো সেদিন জিতু এমন আনপ্রেডিক্টেড আচরণ করেছিলো, কেনো সে নিজেকে কেটে টুকরো টুকরো
করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলো আর আমরা এটাও জানিনা কেনো রিসাস সম্পূর্ণ অজানা কারণে সবার চোখের
আড়ালে আশ্রয় নিলো!রিসাসের মহাজাগতিক কক্ষটিতে আমি আর প্রিজম দাঁড়িয়ে আছি।টেলস্কোপটি ধুলি
ধুসরিত,প্রিজম উদাস চোখে মকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।রিসাসের ডায়রিটি টেবিলের উপরই শুয়ে আছে, আমি
উদ্দেশ্যহীনভাবে কয়েকটি পাতা উল্টাই, তারপর আকষ্মিক দেখি..

‘’ এ ভয়ানক রোগটির নাম এপটোমনোপিলা! এটি এমন একটি নিউরোলজিক্যাল ডিজিজ যেখানে আক্রান্ত নিজের
শরীরের সুস্থ্য অংশগুলি কেটে ফেলে দেয়ার জন্যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা অনুভব করে।মস্তিষ্কের রাইট
প্যারিটরিয়াল লোব ডেমেজ হয়ে গেলে সাধারণ এ ধরণের মেন্টাল ডিজ-অর্ডার দেখা দেয়।গবেষণায় দেখা গেছে
অপারেশনের মাধ্যমে এদের শরীর থেকে দুটি সুস্থ্য পা সম্পূর্ণভাবে  বিচ্ছিন্ন করে ফেলার পরও তারা আনন্দ
অনুভব করছে।এতটুকু পড়ার পর আমি বিষ্ময়ের ভাষা হারিয়ে ফেলি!
তার মানে জিতুর একটি চরিত্র ছিলো আবিসা, যে এপোটেমনোপিলাতে আক্রান্ত ছিলো।আকষ্মিক
আমার মনে হতে থাকে আমি এ ডায়রিটি আরো আগে কখনো পড়েছি অথবা এই মাত্র পড়ছি। কিন্তু
আমি ঠিক কখন এটি পড়েছি তা আমার জানা নেই।আকষ্মিক ডায়রির নিচের অংশে একটি সেন্টেন্সে
চোখ পড়ে, ‘’ আপনি যা পড়ছেন তা আগেও পড়েছেন?’’
অদ্ভুত!রিসাস কিভাবে জানতো, আমি ডায়রিটা পড়ার সময় এমন একটি প্যারাডক্সের মুখোমুখী
হবো?পরের পৃষ্ঠায় বড় বড় অক্ষরে লিখা ছিলো, অজ্ঞাত! কখনো কী আপনার মনে হয়েছে আপনি যে
স্থানটিতে দাঁড়িয়ে আছেন সেটি আসল স্থান নয়?অথবা আপনি সারাজীবন যে ঘরটিতে বসবাস করেছেন
সেই ঘরটিকেই কী কখনো আপনার নিকট ডুপ্লিকেট মনে হয়েছে?হ্যা!এমনই একটি ডিলুশন সৃষ্টি হয়
রি-ডুপ্লিকেট এমনেসিয়া আক্রান্ত মানসিক রোগীদের মস্তিষ্কে!ক্যাপগ্রাস ডিলুশনে আক্রান্ত
রোগীরা তাদের চারপাশের মানুষগুলিকে ডুপ্লিকেট মনে করে কিন্তু রি-ডুপ্লিকেট এমনেসিয়ায়
আক্রান্ত সাইকির মস্তিষ্কে লোকেশনগুলিকে ডুপ্লিকেট মনে হয়।সে লোকেশন সম্পর্কে সবসময়

সংশয়ে থাকে, তার পরিচিত স্থানগুলিই তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে!এ ধরণের এমনেসিয়া বিভিন্নভাবেই
তৈরি হতে পারে।কখনো কখনো তার কাছে মনে হতে পারে একটি লোকেশন একসাথে দুটো স্থানে
উপস্থিত।সে পৃথক করতে পারেনা, যে সে এই লোকেশনটিতে আগে কখনো এসেছে নাকি এখনই দাঁড়িয়ে
আছে!১৯০৩ সালে সর্বপ্রথম নিউরোলজিস্ট আর্নল্ড পিক রি-ডুপ্লিকেট এমনেসিয়া টার্মটি
ব্যাবহার করেন আলজেমিয়াকে ব্যাখ্যা করার জন্যে।বর্তমানে এ মানসিক সমস্যাটি টিউমারের
রোগী,ডিমেন্টিয়া, ব্রেন ইনিজুরি এবং অন্যান্য সাইকিয়াট্রিক ডিস-অর্ডার আক্রান্ত রোগীদের মাঝে
দেখা যায়!’’
রিসাস কোথায় তা আমরা আজো জানিনা তবে মাঝেমাঝে কোয়ান্টাম সুইসাইড তত্বের কথা মনে পড়ে,
তারা কী আসলেই মাল্টি ভার্সে আছে?





















 

Comments

Popular posts from this blog

হিগস ফিল্ড ফিবোনিশি,গোল্ডেন রেশিও সাপেক্ষে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনার একটি পরিসংখ্যান!, লিখেছেন- রিসাস, পার্ট-১০

I am Planck

টাইম প্যারাডক্স এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বের অসম্ভাব্যতা!, লিখেছেন-রিসাস, পার্ট- ২১