টাইম প্যারাডক্স এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বের অসম্ভাব্যতা!, লিখেছেন-রিসাস, পার্ট- ২১


What Is the Grandfather Paradox? | Space

            





আমি যদি টাইম ট্রাভেল করে অতীতে চলে যেতে পারতাম তবে সম্ভবত আমি আরো একটি আমাকে আবিষ্কার করতাম যার আমার মতোই মন,প্রাণ এবং আত্মা আছে।এভাবে আমি যদি অনন্ত কোটিবার টাইম ট্রাভেল করি তবে আমি অনন্ত কোটি মন,প্রাণ ও আত্মাকে আবিষ্কার করবো।সময় আর আলোক তরঙ্গের মাঝেই জগতের সকল রহস্য! মন,প্রাণ আর আত্মা এখানে প্রশ্নবিদ্ব।স্প্রিচুয়ালিটি এখানে হাস্যকর।আমি যদি টাইম ট্রাভেল করে বিলিয়ন বিলিয়ন বার বিলিয়ন বিলিয়ন আমাকে অতীত আর ভবিষ্যতের ওয়েভ ফাংশনে আবিষ্কার করি তবে আমি আবিষ্কার করি বিলিয়ন বিলিয়ন ইউনিভার্স।আইনস্টাইন আমাকে যা গিপ্ট করেছে তা স্বর্গ থেকেও উন্নততর , ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করার চাইতেও অত্যাধিক বিষ্ময়ের।



____রিসাস







Time Travel Simulation Resolves “Grandfather Paradox” - Scientific ... 



আলোর গতির চাইতে দ্রুত গতিতে মহাবিশ্বের একটি প্লেস থেকে অন্য আর একটি প্লেসে কোনো ম্যাটার বা ইনফরমেশন ট্রাভেল করতে পারবেনা কারণ আলোর গতি ধ্রুব।আর তাই তুমি যখন "ল" অব ফিজিক্সকে লঙ্গন করে আলোর গতির চাইতে দ্রুত গতিতে মহাবিশ্বের একটি প্লেস থেকে অন্য আর একটি প্লেসে ট্রাভেল করতে চাইবে তখন বিশ্বপ্রকৃতি তোমাকে হয়তো একমাত্রিক সময়ের মাত্রায় বিলিয়ন বছর অতীতের কোনো একটি মহাজাগতিক ত্রিমাত্রিক বাস্তবতায় সেন্ড করে দেবে অথবা মিলিয়ন মিলিয়ন বছর সময় ফিউচারে কিন্তু তবুও আলোর গতির চেয়ে অধিক গতিতে পদার্থ বিদ্যার সুত্র তোমাকে পথ চলতে দেবেনা।আলোর গতি বিশ্বপ্রকৃতির একটি শাশ্বত "মান" আর পদার্থ বিদ্যার সুত্র গুলি তোমাকে গাণিতিক ভাবেই এমন একটি রেস্ট্রিকশনে রেখেছে যেনো তুমি এই মানকে অতিক্রম করতে না পারো যখন তুমি স্পেসশীপে হাইপারড্রাইভ করে আলোর গতির চেয়ে দ্রুত গতিতে পথ চলতে যাবে তখন থিওরি অব রিলেটিভিটি অনুসারেই ভার্স ন্যাচরাল "ল" তোমাকে একটি ম্যাথমেটিক্যাল ধাক্কা দেবে যে ধাক্কায় তুমি হয়তো সময়ের অতীতে অথবা সময়ের ভবিষ্যতে চলে যাবে কিন্তু আলোর গতিকে ক্রস করতে পারবেনা!থিওরিটিক্যালি টাইম ট্রাভেল সম্ভব, আলোর গতিতে পথ চলতে থাকা প্রতিটি স্পেশশিপই ট্রাইম ট্রাভেলের অভিজ্ঞতা লাভ করবে কারণ এটাই ন্যাচারাল "ল" কিন্তু পদার্থবিদ্যার সুত্র অনুমোদিত সময় ভ্রমণ নিজেই কিছু প্যারাডক্সিক্যাল সিচুয়েশন তৈরি করে যা টাইম ট্রাভেলকে করে তোলে আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব।একদিক থেকে আলোর গতির অবিনশ্বর মান সময় ভ্রমণকে সম্ভবপর করে তুলছে কিন্ত আবার নীতিগত অনেক কারণেই পদার্থ বিজ্ঞান টাইম ট্রাভেলকে করে তুলছে অসম্ভব।নিন্মে সময় ভ্রমণের সীমাবদ্ধতা গুলি তুলে ধরা হলো-



হিটলার প্যারাডক্সঃ মনে করুন, আপনি আলোর গতিকে ক্রস করে মহাবিশ্বের একটি স্থান থেকে অন্য কোনো স্থানে ভ্রমণ করতে গিয়ে একটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক্যাল শকের স্বীকার হলেন যা আপনাকে অতীতে নিয়ে গেলো অথবা টাইম মেশিন আবিষ্কার করে আপনি পৃথিবীর অতীতে চলে গেলেন।সেই সময়টি ছিলো ১৮৮৯ সালের ২০ এ এপ্রিল যেদিন হিটলার জন্মগ্রহণ করেছিলো পৃথিবীতে আর আপনি ঠিক সেদিনই বেবি হিটলারকে খুন করলেন বা মহাকালের সময়ের তালিকা থেকে তাকে ডিলিট করে দিলেন।এখন প্রশ্ন হলো অস্তিত্বহীন কোনো হিটলারের পক্ষে কি কখনো বড় হওয়া সম্ভব?যার কোনো এক্সিস্ট নেই সে কিভাবে ইহুদী নিধন করেছিলেন?একটি অস্তিত্বহীন ভ্যাকুয়ামের নাম কিভাবে ইতিহাসে লিখা হলো?আর যার ইতিহাসে কোনো ফসিলই নেই তাকে আপনি কোথায় খুজে পেলেন?যদি হিটলার অস্তিত্বের নিউজ আপনার ব্রেনে এম্পটি থাকে তবে সেই এম্পটিনেসকে আপনি অতীতে গিয়ে কিভাবে খুন করলেন?যার অস্তিত্ব নেই তাকে কি খুন করা যায়?আবার আপনি যে ভবিষ্যত থেকে হিটলারের তথ্য জানার পর টাইম ট্রাভেল করে অতীতে গিয়েছিলেন এবং হিটলারকে খুন করেছিলেন সেই ভবিষ্যতেই কিন্তু এখন আর হিটলার নেই আর যে ভবিষ্যতে হিটলার নেই সে ভবিষ্যতে আপনি তার তথ্য পেতে পারেন না কারণ সেখানে আপনিও অস্তিত্বহীন!

এখন প্রশ্ন হলো হিটলারকে আসলে কে হত্যা করেছিলো?আপনি নাকি আপনার শূন্যতা বা সম্ভাবনা?



বুটস্ট্রেপ প্যারাডক্সঃ মনে করুন, আপনি টাইম ট্রাভেল করে আজ থেকে "২০০" বছর অতীতে চলে গেলেন কিন্তু এবার শূন্য হাতে নয় স্বয়ং আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি নিয়ে।এবং পাঁচ বছর বয়সী আইনস্টাইন যে থিওরি অব রিলেটিভিটি সম্পর্কে কোনো তথ্যই জানেন না তাকেই আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি শুনালেন এবং পরে আইনস্টাইন বড় হয়ে সেই থিওরিটি হুবহু কপি করলো!এখন প্রশ্ন হলো থিওরি অব রিলেটিভিটির প্রকৃত আবিষ্কারক কে?আইনস্টাইন নাকি  আইনস্টাইন?তার মানে আপনি যে ভবিষ্য থেকে থিওরি অব রিলেটিভিটি নিয়ে অতীতে গিয়েছিলেন সে ভবিষ্যতে এখন থিওরি অব রিলেটিভিটির প্রকৃত আবিষ্কারক আইনস্টাইন নয় আর যে ইতিহাসে রিলেটিভিটির প্রকৃত আবিষ্কারক আইনস্টাইন নয় সে ভবিষ্য থেকে আপনি অতীতে যান নি।তাহলে এখন প্রশ্ন হলো- আইনস্টাইনের কাছে প্রকৃতপক্ষে কে গিয়েছিলো?আপনি?নাকি আপনার শূন্যতা বা পটেনশিয়ালটি?

Doctor Who: what is the Bootstrap Paradox? | Doctor who, Bootstrap ...

                                            



ফার্মিন প্যারাডক্সঃ এই প্যারাডক্স অনুসারে আপনি যদি টাইম ট্রাভেল করে অতীতে চলে যান তখনও আপনি এমন কোনো স্থানে অংশগ্রহণ করবেন না যে স্থানে আপনার সাথে সংঘর্ষ বা কলাফস হওয়ার সম্ভাবনা আছে।অতএব আপনি অক্টোপাসের মতো ক্যামোফ্লাজ বা ছদ্মবেশ নিয়ে চলবেন যেনো আপনার দ্বারা অতীতের কোনো মুহূর্ত প্রভাবিত না হয়।তার মানে অতীতের কেউ ভবিষ্য থেকে কোনোকিছু নিয়ে এসেছে কি না তা আইডেন্টিটিফাই করতে পারবেনা।আপনার থাকা আর না থাকা দুটোই অতীতের কাছে সমান পসেবিলিস্টিক হয়ে দেখা দেবে বা কাজ করবে  আপনার প্রবাবিলিটি ফাংশন অথবা শূন্যতা!এমন সম্ভবনার কথা কার্ল স্যাগানও বলেছিলেন!তার মানে এখনো আমাদের মধ্যে অনেক টাইম ট্রাভেলার আছে হয়তো তাদের মস্তিষ্ক বিশেষ কোনো উপায়ে তাদের নিকট এই নিউজটি লুকিয়েও রাখতে পারে!

Are We Alone in the Universe? | THE FERMI PARADOX - YouTube





টাইম ট্রাভেলের ক্ষেত্রে যে সকল প্যারাডক্স কাজ করে তার মধ্যে ক্যাজুয়াল লুপ,হিটলার প্যারাডক্স,বুটস্ট্রেপ এবং গ্র্যান্ডফাদার প্যারাডক্স অন্যতম যা থিওরিটিক্যালি সত্য এই ট্রাইম ট্রাভেলের সম্ভাবনাকে ‘’শূন্য’’ করে তুলে।কিন্তু আমরা এখন জানবো  এমন দুটি থিওরি  যার মাধ্যমে টাইম প্যারাডক্স অতিক্রম করে আমরা সময়ের অতীত এবং ভবিষ্যতে ভ্রমণ করতে পারবো।সেই বিখ্যাত থিওরির মধ্যে একটিকে বলা হয় – ‘’সেলফ প্রোটেকশন থিওরি অব নোভিকর’’ আর অন্যটি ‘’প্যারালাল ইউনিভার্স’’



রাশিয়ান পদার্থবিদ ইগর ডিমিয়েত্রিভিচ  নোভিকবের আত্মরক্ষার থিওরি আবিষ্কার করেন।এই থিওরি অনুসারে-কোন একজন সময় পরিভ্রমণকারী যদিও ভার্স বা জগতের অতীতে চলে যায় কিন্তু সে কখনোই এমন কোনো ইভেন্টে পার্টিশিপেট করতে পারবেনা যা তার প্রকৃত উপস্থিতিকে প্রভাবিত করে।মনে করূন কেউ একজন অতীতে ভ্রমণ করে ঠিক সে সময়ে চলে গেলো যে সময় সে তার মাতৃগর্ভে একটি ক্ষুদ্র ফিটাসে রুপান্তরিত হয়েছিলো মাত্রআর সেই ফিটাসটিকে সে মেডিক্যালি অপসারণ করলো।অথবা কেউ একজন অতীতে গিয়ে তার গ্রেন্ডফাদারকে জন্মের পরপরই হত্যা করলো।এক্ষেত্রে টাইম ট্রাভেলারের তার নিজের প্রকৃত অস্তিত্বের সম্ভাবনা ‘’শূন্য’’ হয়ে যায়।যদি টাইম ট্রাভেলার নিজেই বর্তমানে অস্তিত্বহীন হয়,যদি সে অতীতে ভ্রমণ করে তার অস্তিত্বের এভুলিশনাল প্রসেসকেই ক্যান্সেল করে দেয় তবে একটি অস্তিত্বহীন সময় পরিভ্রাজকের পক্ষে কখনোই অতীতে ভ্রমণ করে তার নিজের ভ্রণ বা তার দাদাকে হত্যা করা সম্ভব নয়।ম্যাসাচুয়েটস ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এন্ড সেথ লয়েড ও তার গবেষকগণ বলেছেন সেলফ প্রোটেকশন থিওরি অব নোভিকব কখনোই একজন টাইম ট্রাভেলারকে এমন কোনো কাজ করার পারমিশন দেবেনা যা বর্তমান থেকে তার অস্তিত্বকে ডিলিট করে দেবে।যেমন- আপনি যদি অতীতে ভ্রমণ করে সেই সময়ে চলে যান যে সময় আপনার জন্মদাত্রী একজন সুন্দরী তরুণী এবং তার সাথে আপনার প্রণয়ের সম্ভাবনা আছে যা আপনার এভিলিউশনাল প্রসেসকে স্তব্দ করে দেয়ার জন্যে যথেষ্ঠ তবে ভার্স ‘’’’ বা বিশ্বপ্রকৃতি কখনোই তার সাথে আপনাকে মিট করতে দেবেনা বরং তাকে অন্যকোনো স্থানে ট্রান্সফার করে দেয়া হবে তথা প্রকৃতিতে একটি লিমিটিং ফ্যাক্টর কাজ করবে যা কখনোই আপনার অস্তিত্বকে শূন্য করতে দেবেনা।আপনি আপনার গ্রেন্ড ফাদারকে হত্যা করার জন্যে যে স্থানে যাবেন সে স্থানে আপনি তাকে খুঁজে পাবেন না স্বয়ং প্রকৃতিই এখানে লিমিটেড আর তাই আপনার আর আপনার গ্রেন্ডফার সাথে একটি স্থানিক লুকোচুরি সৃষ্টি হবে। আপনি অনন্ত কোটি বছরও যদি আপনার গ্রেন্ডফাকে হত্যা করার জন্যে সময় ফিক্স করেন তবুও আপনি তাকে কোনো স্থানে খুঁজে পাবেন না।তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব ‘’’’ অব ফিজিক্সের কারণ ‘’’’ অব ফিজিক্স যদি তাকে প্রতিরক্ষা না করে তবে সম্ভবত আপনি অতীতে ভ্রমণ করতেই পারতেন না এবং এ সত্যটিও অজানা থেকে যেতো যে ‘’’’ অব ফিজিক্স আপনার অস্তিত্ব বিপন্ন হোক এমন কোন কাজকে সাপোর্ট করতে সম্পূর্ণ অপারগ।ঠিক একইভাবে বুটস্ট্রেপ এবং হিটলার প্যারাডক্সও  ‘’SPTN’’ থিওরি দ্বারা অতিক্রম করা যায়।আপনি যদি হিটলারকে হত্যা করার জন্যে টাইম ট্রাভেল করে অতীতে চলে যান তবে সবকিছু ঠিকঠাকভাবে থাকলেও প্রকৃতি হিটলারকে আপনার ইন্দ্রীয়ের সীমানা থেকে অন্য কোনো স্থানে লুকিয়ে রাখবে।



টাইম প্যারাডক্সকে জয় করার ক্ষেত্রে আরো একটি থিওরি আছে যাকে বলা হয় ‘’প্যারালাল ইউনিভার্স’’ থিওরি।মনে করুণ রিসাস নামক একজন সময় পরিভ্রমণকারী টাইম ট্রাভেল করে অতীতে চলে গেলো এবং সে তার মতো আরো একজন রিসাসকে আবিষ্কার করলো।সেই রিসাসেরও মন আছে ,প্রাণ আছে এবং তার মস্তিষ্কেও সংঘঠিত হয় নিউরোকেমিক্যাল ফ্লাকচুয়েশন।কিন্তু প্রশ্ন হলো-একই মন,একই প্রাণ, একই মস্তিষ্কের দুটি মানুষ কিভাবে একইসময় একই স্থানে একত্রিত হতে পারে?একই মানুষের দুটি ‘’মন’’ কিভাবে সম্ভব? কিভাবে সম্ভব একই মানুষের দুটি প্রাণ।মনে করুণ রিসাস অতীতের ভ্রমণ করে আর একজন রিসাসের মুখোমুখী হলো আর এতে করে পরিবর্তীত হয়ে গেলো তার বর্তমান যেই বর্তমানে রিসাস রিসাসের সাথে দেখা করেনি।আর এই প্রকৃয়া যদি কন্টিনিউয়াসলি চলতে থাকে আমরা অতীত ও ভবিষ্যতে বিলিয়ন বিলিয়ন প্যারালাল ডায়মেনশন খুঁজে পাবো যাদের স্থান ও কালের প্রবাহ আলাদা।টাইম প্যারাডক্স একজন পরিভ্রাজকের নিকট যে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করে সেটাই মেটা মহাবিশ্বের সম্ভাবনা।





কিন্তু এ মেটা মহাবিশ্বের সম্ভাবনার সাথে ঈশ্বরের অনস্তিত্বের সম্পর্ক কী?অপেক্ষা করুন, বলছি, মনে করুন, রিসাস ওয়ার্মহোলের ভেতর দিয়ে হেঁটে এক মিনিট পূর্বের রিসাসের কাছে চলে গেলো এবং তার হাতে একটি ট্যাটু এঁকে দিলো, ট্যাটুটি অংকন করতে তার একমিনিট সময় প্রয়োজন হয়েছিলো।তাহলে একমিনিট পর রিসাসের হাতে ট্যাটুটি থাকার কথা কিন্তু যে রিসাস ওয়ার্মহোলের ভেতর দিয়ে এক মিনিট পূর্বের রিসাসের কাছে গিয়েছিলো তার হাতে কোনো ট্যাটু ছিলোনা।যদি রিসাসের হাতে কোনো ট্যাটুই না থাকে তবে এক মিনিট পূর্বের রিসাসের কাছে কে গিয়েছিলো যে তার হাতে একটি ট্যাটু এঁকে দেয় এবং একমিনিট সময় অপচয় হয়?উত্তর হলো- কেউ যায়নি।কারণ যদি সত্যিকার অর্থেই এক মিনিট পূর্বের রিসাসের কাছে বর্তমান রিসাস যেতো তবে যাওয়ার সময় তার নিজের হাতে অবশ্যই ট্যাটু থাকতো!অতএব বর্তমান থেকে কেউ কখনো অতীত ভ্রমণ করেনা!কিন্তু মিসিও কাকু তার হাইপারস্পেস গ্রন্থে, ওয়ার্ল্ডলাইন থিওরি নামক একটি থিওরি ব্যাখ্যা করেন যেখানে সময় ভ্রমণের সম্ভাব্যতাকে যোক্তিকভাবে উপস্থাপন করা হয়, প্রমাণ করা হয় টাইম ট্রাভেল পসিবল!যদি বর্তমান থেকে কেউই থিওরিটিক্যালি অতীতে প্রবেশ না করে তবে প্রকৃতপক্ষে কে সে যে অতীত ভ্রমণ করে এক মিনিট পূর্বের রিসার হাতে ট্যাটু অংকন করে দিয়েছিলো?



আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটির অনুসারে, আমার তিন মিটার দূরে অবস্থিত একটি বৃক্ষের শাখায় দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দর একটি ড্রাগন ফ্লাইয়ের[ফড়িং]  শরীর থেকে আমার চোখে সূর্যের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ প্রবেশ করতে এক সেকেন্ডের এক মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ সময় খরচ হয়, অতএব ড্রাগন ফ্লাইটি আমার মস্তিষ্কের অনুভূতিতে এক সেকেন্ডের এক মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ সময় অতীতে অবস্থান করছে।সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো প্রবেশ করতে আট মিনিট বিশ সেকেন্ড সময় প্রয়োজন হয়, তার মানে আমি বর্তমানে যে সূর্যটি দেখছি সেটি আসলে আট মিনিট অতীত।মহাকাশের প্রতিটি নক্ষত্র থেকেই আলোক তরঙ্গ আমাদের চোখে প্রবেশ করতে মাল্টি থাউজেন্ড ইয়ার্স সময় প্রয়োজন হচ্ছে, অতএব মহাকাশের প্রতিটি নক্ষত্রই বর্তমানে ইতিহাস, যাদের রিয়েলি এ মুহূর্তে কোনো অস্তিত্বই নেই।এখান থেকে ১৫০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের একটি কোয়েসারের ইনফরমেশন আমাদের পৃথিবীতে প্রবেশ করতে ১৫০ মিলিয়ন বছর সময় লাগে, তার মানে আমরা বর্তমানে যে কোয়েসারকে দেখছি সেটি  আসলে ১৫০ মিলিয়ন বছর অতীতের, আমরা কোয়েসারের বর্তমান ইনফরমেশন জানিনা, তার বর্তমান ইনফরমেশন আমাদের মস্তিষ্কে ‘’জিরো’’? যার অর্থ হলো, বর্তমান থেকে আমরা মহাবিশ্বের কোনো ইনফরমেশনকেই জানতে পারিনা, আমাদের মস্তিষ্কে মহাবিশ্বের বর্তমান ইনফরমেশন ‘’শূন্য’ এবং আমার মস্তিষ্ক আমাকে অনুভব করতেও সময় খরচ করে কারণ আমার আমি আমার মস্তিষ্কের নিউরো-ক্যামিকাল এক্টিভিটিজ যেটি সংঘঠিত হতে সময় প্রয়োজন, আমার আমি বলতে আমি যে ইনফরমেশগুলি জানি সেগুলিও বর্তমান নই,প্রতিটি ইনফরমেশনই অতীত, বর্তমানে আমার অস্তিত্ব ‘’শূন্য’’। অতএব বর্তমান থেকে অথবা একেবারে জিরো থেকে রিসাস নামক কোনো টাইম ট্রাভেলার এক মিনিট অতীতের রিসার হাতে ট্যাটু অংকন করতে পারেনা কারণ বর্তমানে রিসাস নামক কোনো ইনফরমেশন নেই!

হ্যা! আমার তিন মিটার দূরের ড্রাগন ফ্লাইটি বর্তমান নই যাকে আমি বর্তমান মনে করছি। আমি বর্তমানের কোনো ড্রাগন ফ্লাইকে অনুভব করছিনা, মনে করো; আমি অতীতের একটি ড্রাগন ফ্লাইকে অনুভব করছি।কিন্তু তোমরা নিশ্চয়ই এটা জানো যে আমাদের দেহের প্রতিটি অনুপরমাণু একে অপরের চেয়ে সমান দূরত্বে অবস্থান করছেনা, এক একটি পরমাণু এক একটি দূরত্বে অবস্থান করছে, অতএব ড্রাগন ফ্লাইটির দেহের প্রতিটি অংশ থেকে আমার চোখে এক সেকেন্ডের এক মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ সময়ে  যে আলোক তরঙ্গ প্রবেশ করছে সেই আলোক তরঙ্গ গুলি একইসঙ্গে আমার মস্তিষ্কে প্রবেশ করছেনা।এক সেকেন্ডের এক মিলিয়নভাগের এক ভাগ সময়ের ভেতরেও আরো অজস্র সময়ের ভগ্নাংশ পাওয়া যাবে, অগণিত ভগ্নাংশের সময়ের স্থায়িত্বে আলোক তরঙ্গ গুলি আমার চোখে ড্রাগন ফ্লাইটির উপস্থিতির তথ্য নিয়ে আসে।এখন প্রশ্ন হলো ড্রাগন ফ্লাইটি থেকে আমার চোখে আলো প্রবেশ করতে কতক্ষণ সময় প্রয়োজন হচ্ছে?এক সেকেন্ডের এক মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ?নাকি সেই সেকেন্ডের ভেতরেও অনিশ্চয়তা আছে?হ্যা!অনিশ্চয়তা আছে!কারণ সেটিও এবসলিউট টাইমিং নয়।অতএব ড্রাগন ফ্লাইটি আমার চোখের রেটিনায় প্রবেশ করতে কোনো সময়ই খরচ করেনি, অথবা আমার মস্তিষ্কে অতীত থেকে কোনো ড্রাগন ফ্লাই প্রবেশ করেনি, অতীত থেকে বর্তমানে কোনো ইনফরমেশনই আমার মস্তিষ্কে প্রবেশ করেনি কারণ বর্তমানে আমি নিজেই ‘’শূন্য’’, অতএব  ড্রাগন ফ্লাইটি  আমার অনুভূতিক শূন্যতার মধ্যেই ছিলো, আমার মাঝেই ছিলো, শুধু এক সেকেন্ডের এক মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ অতীত আমার নিকট সেটিকে আলাদা করে দেখিয়েছে!আমি মাত্র কয়েক মাইক্রোসেকেন্ডের তারতম্যে ড্রাগন ফ্লাই হয়ে গাছে দাড়িয়ে  ছিলাম!






আমরা যা কিছুই অনুভব করছি সবকিছুই অতীতের, কোনোকিছুই বর্তমানে নেই, বর্তমান আমাদের অনুভূতির অতীত, বিয়োন্ড দ্যা ফিলিংস, আর সম্ভবত বর্তমান আমাদের অনুভূতির অতীত হওয়ার কারণেই আমরা বর্তমানকে সবসময় কয়েক মাইক্রোসেকেন্ড অথবা কয়েক মিলিয়ন লাইট ইয়ার্স অতীত থেকে অনুভব করি!





কিন্তু প্রশ্ন হলো, তাহলে একমিনিট পূর্বের রিসার কাছে বর্তমান থেকে কে ওয়ার্মহোলের ভেতর দিয়ে দেখা করতে গিয়েছিলো যদি বর্তমানে কোনো ইনফরমেশনেরই অস্তিত্ব না থাকে?যদি ড্রাগন ফ্লাইয়ের ইনফরমেশন আমার কাছে নাই আসে, যদি আমি নিজেই ড্রাগন ফ্লাই হয়ে থাকি যে তার নিজেকে অতীত থেকে অবজার্ভ করছে?কখন একই সত্তার পক্ষে একইসাথে এবং একইসময় একাধিক লোকেশনে প্রেজেন্ট থাকা সম্ভব?অথবা একাধিক সময়ে?এর একমাত্র উত্তর হতে পারে, যদি ঐ ব্যাক্তিটি একটি কোয়ান্টাম সুপার পজিশনাল পার্টিকেলের মতোই একই সময় এবং একইসাথে মাল্টিপল ডায়মেনশনে বাউন্স করতে পারে বা যদি তার সুনির্দিষ্ট বর্তমান শূন্য হয়! যদি একেবারে শূন্য বা সম্ভাবনা থেকে একজন টাইম ট্রাভেলার মাল্টিপল সময়ে ভ্রমণ করতে পারে তবে টাইম ট্রাভেলারের সৃষ্টি হয় একেবারে শূন্য থেকে, মহাবিশ্বের ক্রিয়েশনে কোনো ঈশ্বরের ভূমিকা নেই!


Super Mario Galaxy: Ghostly Galaxy - Beware of Bouldergeist on ...


 তথ্যসুত্র- মেটা ভার্সিক থট, ভার্চুয়াল ব্যাংস্পেস 


part-5
part-6
part-7
part-8
part-4

Comments

Popular posts from this blog

হিগস ফিল্ড ফিবোনিশি,গোল্ডেন রেশিও সাপেক্ষে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনার একটি পরিসংখ্যান!, লিখেছেন- রিসাস, পার্ট-১০

I am Planck