সাইকোকেনেসিস, লিখেছেন- রিসাস, পার্ট-৩২
সাইকোকেনেসিস পিকে হলো এমন একটি প্যারাসাইকোলজিক্যাল টার্ম যেখানে বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে সাইকোলজিক্যাল বিলিফ অথবা কালেক্টিভ কনসাসনেসের মাধ্যমে ফিজিক্যাল বাস্তবতায় প্রভাব সৃষ্টি করা যায়।দ্যা মেট্রিক্স মুভির মতোই যেখানে আমরা দেখি একটি ছোট্ট শিশু তার কনসান্ট্রেশনের মাধ্যমে ইস্পাতের চামুচকে বক্র করে দিয়েছিলো।কিছুকিছু বিজ্ঞানী মনে করেন, আমাদের মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রিক্যাল কারেন্ট একইসাথে ম্যাগনেটিজম ক্রিয়েট করে, কারণ ইলেক্ট্রিসিটি এবং ম্যাগনেটিজম একে অপরের সাথে রিলেটেড।আমাদের মস্তিষ্কের প্রত্যেকটি চিন্তাই এক একটি ইলেক্ট্রিক্যাল কারেন্ট যা থেকে তৈরি হয় ম্যাগনেটিক পোল।এ ম্যাগনেটিক পোল যদি যথেষ্ঠ শক্তিশালী হয় তবে আপনি ফিজিক্যাল জগতের যেকোনো ম্যাটারকেই কন্ট্রোল করতে পারবেন, শুধুমাত্র চামুচ বাঁকানো নয়, এমনকি পানিকে বাষ্পে রুপান্তরিত করতে পারবেন।কিন্তু আমাদের চিন্তাগুলি বিক্ষিপ্ত, তাই থট ইলেক্ট্রিক্যাল কারেন্ট থেকে যে ম্যাগনেটিক পোল গুলি তৈরি হয় সেগুলির মধ্যে কোনো ইউনিটি থাকেনা, সেজন্যে এগুলি তাদের এনার্জি হারিয়ে ফেলে যা দিয়ে আমরা এক্সট্রালনাল ওয়াল্ডের কোনো ম্যাটারকে খুব একটা প্রভাবিত করতে পারিনা।মেট্রিক্স মুভিতে আমরা দেখেছি শিশুটি চামুচটির দিকে গভীরভাবে কনসান্ট্রেট হয়েছিলো, যেজন্যে তার মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রিক্যাল কারেন্ট প্রবাহিত হয়েছিলো একটি সুনির্দিষ্ট নিউরাল পথে, এবং ম্যাগনেটিক পোল গুলোও ছিলো ওয়েল ওর্গানাইজড, যেজন্যে শিশুটি এক দৃষ্টিতেই চামুচ বাকিয়ে ছিলো।
যদি অনেকগুলি
মস্তিষ্ক কালেক্টেভলি একটি পয়েন্টে নিজেদের ব্রেনকে সেন্ট্রালাইজ করে তবে সম্ভবত
আমরা অনেক শক্তিশালী একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করতে পারবো যা পরিবর্তন করে দিতে
পারে সোলার সিষ্টেমের কোনো একটি গ্রহের কক্ষপথকেও!
যাইহোক,
প্যারাসাইকোলজিতে এই পেনমেননটিকে বলা হয় সাইকোকেনেসিস বা পিকে, নিউম্যান নামক একজন
সাইকোকেনেটিক ক্ষমতা সম্পূর্ণ ব্যাক্তি যার পায়ের ক্ষত থেকে রক্ত প্রবাহিত হতো
‘’ল’’ অব গ্রেভিটিকে উপেক্ষা করে শরীরের উপরের দিকে ঠিক যেমনি
যিশুখ্রিষ্ঠের।ফিজিক্সের জানা কোনো সুত্র দিয়ে এ ঘটনাটির ব্যাখ্যা করা অসম্ভব।হতে
পারে প্রত্যেকটি মানুষ সাব-কনসাসলি
সাইকোকেনেটিক ক্ষমতা
রাখে, এটি তাদের অবচেতন মনেরই শক্তি, মিরাকল সম্পর্কে তাদের বিশ্বাস এবং ভালোবাসার
প্রতিফলন।আমি আদো জানিনা এ ঘটনাগুলি কতটুকু বাস্তবতা দাবী করে!কিন্তু মানব সভ্যতার
সমস্ত ইতিহাস জুড়ে মিরাকলের এমন অজস্র দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়।মিরাকলের প্রতি
বিশ্বাসের পেছনে হয়তোবা বিবর্তনীয় কোনো উপযোগ থাকতে পারে কিন্তু আমি এখন যেহেতু
ফিজিক্সের দৃষ্টিকোণ থেকে আপাত অবিশ্বাস্য সাইকোকেনেটিক ক্ষমতাকে ব্যাখ্যা করার
প্রয়াস করছি সেহেতু আমি তথাকথিত বিজ্ঞানীদের মিরাকল সম্পর্কিত সায়েন্টিফিক
ব্যাখ্যাগুলি উপস্থাপন করবো যদিও এগুলি কতটুকু বৈজ্ঞানিক তা বিজ্ঞ পাঠকরাই বিবেচনা
করবেন।এ গ্রন্থের কোনো মতামতই আমার ব্যাক্তিগত নয়, যদিও কিছুকিছু ক্ষেত্রে এর
ব্যাতিক্রম রয়েছে, রয়েছে একজন তুচ্ছ লেখক হিসেবে কিছু নিজস্বতা!
বিজ্ঞানী ডেভিড বোম ,
বিখ্যাত ম্যাথমেটিশিয়ান , যিনি পাইলট ওয়েভ থিওরি উদ্ভাবনের পর রহস্যজনক ভাবে একজন
রহস্যমানবে রুপান্তরিত হন, তিনিও একপ্রকার
ঈশ্বরের কনসেপ্ট প্রতিষ্ঠা করেন যে ঈশ্বরের ধারণার সাথে আদি যোগীদের একটি সমতা
রয়েছে, ভারতীয় উপমহাদেশের স্প্রিচুয়াল চেতনার সাথে এ বিখ্যাত বিজ্ঞানীর রয়েছে গভীর
এক মনস্তাত্বিক সংযোগ, যদিও একই ব্যাপারটি
বিজ্ঞানী এডুয়িন
শ্রডিঙ্গারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।শ্রডিঙ্গার নিজেই লিখেছেন, কোয়ান্টাম ফিজিক্সের
অনেক ধাঁধাঁ কাটিয়ে উঠতে উপনিষদ তাকে সহযোগীতা করেছিলো।যাইহোক, আমরা ভারতীয়দের
দার্শনিক মনে হয়তোবা অন্য কখনো প্রবেশ করবো, এখন আমরা আমাদের মূল উদ্দেশ্যে ফিরে
যাবো।বোম মনে করেন, যদি আমরা মহাবিশ্বকে একটি হলোমুভমেন্ট হিসেবে
বিবেচনা করি তবে আমরা সাইকোকেনেসিস বা পিকে কনটেক্সটিকে ব্যাখ্যা করতে
পারবো!!কল্পনা করুন, আপনি একটি নিস্তব্দ রাত্রিতে জঙ্গলের পথ ধরে অগ্রসর হচ্ছেন,
আকষ্মিক আপনার সামনে একটি অন্ধকার ছায়া এসে উপস্থিত হলো, চাঁদের আলোয়, আপনার নিকট
সেই ছায়াটিকে একজন গুপ্তঘাতক মনে হলো।এটি আপনার মস্তিষ্কে একটি বিশেষ রেঞ্জের
ইমাজিনাল এক্টিভিটিজ জন্ম দেবে, যেমনঃ আপনি দোড়াতে থাকবেন, প্রচন্ড প্রেসার অনুভব করবেন এবং ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠবেন।এই ইমাজিনাল একটিভিটিজ
শুধুমাত্র আপনাকে মেন্টালি বিপর্যস্ত করে তুলবে তা নয়, এটি একইসাথে আপনার
বায়োলজিক্যাল প্রসেসের সাথে বিজড়িত, যেমনঃ আপনার নার্ভাস সিষ্টেম এক্সাইটেড হয়ে
উঠবে, দ্রুত হৃদস্পন্দন ক্রিয়া চলতে থাকবে, মাসল টেনশন বেড়ে যাবে, এড্রেনালিন এবং
অন্যান্য হরমোন রিলিজ হতে থাকবে, এভাবে এই অদৃশ্য ছায়ার তথ্যটি আপনার বায়োলজিক্যাল
প্রসেসে ম্যাটারিয়ালাইজ হতে থাকবে।কিন্তু আপনি যদি এই ছায়াটিকে শুধুমাত্র একটি
ছায়া হিসেবেই গ্রহণ করতেন তবে এক সেট ভিন্ন মেন্টাল এবং বায়োলজিক্যাল রেসপন্স তৈরি
হতো কারণ আমরা একটি ইনফরমেশনকে বায়লোজিক্যাল এবং মেন্টাল উভয় অবস্থান থেকেই রেসপন্স
করি।বোম বলেন, তাহলে লক্ষ্য করুন, কনসাসনেসই শুধুমাত্র মিনিং ভিত্তিক রেসপন্স
করেনা আমাদের বায়োলজিক্যাল প্রসেসও মিনিং ভিত্তিক রেসপন্স করে।
একটি মিনিং একইসাথে
ফিজিক্যাল এবং মেন্টাল উভয় রিয়েলিটির সাথে বিজড়িত।এভাবে মিনিং একটি ব্রিজ তৈরি করে
রিয়েলিটির উভয় প্রান্তে।যে ইনফরমেশনটি আমরা আমাদের চিন্তার মধ্যে পরিবহন করি
সেটিকে আমরা আমাদের সাইকোলজিক্যাল রিয়েলিটি মনে করি কিন্তু আমাদের
নিউরোসাইকোলজিক্যাল ক্যামিকেল এবং নিউরাল এক্টিভিটিজ যা আমাদের সাক্ষ্য দিচ্ছে এই
মিনিং’ টি বাস্তবায়িত হচ্ছে ম্যাটারিয়াল ওয়ার্ল্ডে।আমরা ফিজিক্যাল রিয়েলিটিতে
অবজেক্টিভলি একটিভ ‘’মিনিং’’ এর দৃষ্টান্ত পেয়ে থাকি কম্পিউটার চিপের ফাংশনিং এর
সময়, কম্পিউটার চিপ যা ইনফরমেশন কনটেইন করে, এবং ইনফরমেশনের ‘’মিনিং’’ অনুযায়ী
একটি নির্দিষ্ট সেন্স জাগ্রত হয় কী পরিমাণে কম্পিউটারে ইলেক্ট্রিক্যাল কারেন্ট
প্রবাহিত হবে!
ফিজিক্সের প্রচলিত
দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী কোয়ান্টাম ওয়েভ ম্যাকানিক্যালি কাজ করে একটি পার্টিকেল হিসেবে
এর মুভমেন্টকে এমনভাবে কন্ট্রোল করার ভেতর দিয়ে ঠিক যেমনি সমূদ্রের তরঙ্গ একটি
পিংপং বলকে তার সারপেসে ভাসাতে থাকে!কিন্তু বুম মনে করেন না এ দৃষ্টিকোণ দিয়ে এটি
ব্যাখ্যা করা যাবে।তার মতে পার্টিকেল এবং ওয়েভের সম্পর্ক এমন যেনো একজন অটোম্যাটিক
পাইলট রাডার ওয়েভ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।কোয়ান্টাম ওয়েভ একটি কণাকে এরচেয়ে বেশি
পুস করেনা ঠিক যতটুকু একটি রাডার ওয়েভ শিপকে পুস করে।বরং এটি ইলেক্ট্রনকে ইনফরমেশন
প্রদান করে যা ইলেক্ট্রন তার রনকৌশল
হিসেবে ব্যাবহার করে।ইলেক্ট্রনে ইনফরমেশনের যে সক্রিয়তা তা আমাদের বলে শুধুমাত্র
আমাদের কনসাসনেস নয়, ম্যাটারের সকল চরিত্রও মিনিং ভিত্তিক কাজ করে যা আমাদের
সাইকোকেনেসিসকে ব্যাখ্যা করার সক্ষমতা প্রদান করে।সাইকোকেনেসিস তখনই জাগ্রত হবে যখন
দুই বা ততোধিক ব্যাক্তি
সাইকোলজিক্যালি একটি
‘’মিনিং’’ এ ফোকাস করে এবং তাদের এই মেন্টাল হারমোনি ম্যাটারিয়াল ওয়াল্ডে প্রবাহিত
হয়।কিন্তু এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ যে বোম সাইকোকেনেসিসকে কোনো কজাল ইফেক্ট মনে
করেনা যা ফিজিক্সের জানা সুত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব, এটি একপ্রকার নন-লোকাল
রিজোন্যান্স অব মিনিং বা ইন্টারেকশন,
কোয়ান্টাম এন্ট্যেংগেলমেন্টে যা দুটি ফোটনকে সেইম এঙ্গেল অব পোলারাইজেশনে
এটিউন করে।পরিশেষে, একটি কথা বলে রাখা উচিত , বোম ট্যাকনিকাল কারণে পুরোপুরিভাবে
একমত নয় যে কোয়ান্টাম নট-লোকালিটি পিকে অথবা ট্যালিপেথিকে অনুমোদন দেয়, তিনি মনে
করেন সুপার নট-লোকালিটি দিয়ে এগুলি ব্যাখ্যা করা সম্ভব!যাইহোক, আমরা আগেই আলোচনা
করেছি বোমের সফটওয়্যার ওয়েভ থিওরি কমপ্লিট নয়, কোপেগ হ্যাগেনের অবজারভার বেসিস
ইন্টারপ্রিটেশনের সাথে রয়েছে এর দৃশ্যমান তারতম্য কিন্তু তবুও প্যারাসাইকোলজিক্যাল
ক্ষেত্রটিকে তিনি সফটওয়্যার ওয়েভ থিওরি দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন যা মোটামুটি
অর্থপূর্ণই মনে হচ্ছে।চিন্তা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে
হয়তোবা এই
প্যারাসাইকোলজিক্যাল এক্সপ্লেইনেশনগুলি আপনাদের সহযোগীতা করবে !
পিকে এবং কনসাসনেস
সহয কথায় পিকে হলো
দূরবর্তী কোনো ঘটনাকে প্রভাবিত করার মনস্তাত্বিক ক্ষমতা।বিজ্ঞানী জুয়ান এবং ডুন
মনে করেন, যেহেতু আমাদের জানা ফিজিক্সের সকল প্রকৃয়াতেই ওয়েভ এন্ড পার্টিকেল
ডুয়ালিটি কাজ করে তবে আমাদের পক্ষে এটা অনুমান করা অযৌক্তিক নয় যে আমাদের কনসাসনেসেও
একই ওয়েভ এন্ড পার্টিকেল ডুয়ালিটি রয়েছে।কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সে একটি কণা একইসাথে
ওয়েভ এবং পার্টিকেল দুটি অবস্থায় থাকতে পারে কিন্তু যখন পর্যবেক্ষক পর্যবেক্ষণ করে
তখন এটি তার কণাবাদী প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে বা এ নন-লোকাল ওয়েভকে কণিকায় লোকালাইজড মনে হবে ঠিক
একইভাবে আমাদের কনসাসনেস যখন পার্টিকেল লাইক ঠিক তখনই এটি আমাদের নিউরাল একটিভিটিজ
হিসেবে কাজ করে কিন্তু ইউনিভার্সাল ওয়েভ
ফাংশনের দৃষ্টিকোণ থেকে, যেহেতু কনসাসনেস একইসাথে
ওয়েভ,অতএব এটি মেটা ইউনিভার্সেও Roaming
করে, মনে হবে যেনো মেটা ইউনিভার্সই কনসাসনেসের লোকেশন বা
ব্রেন!যাইহোক, জুয়ান এবং ডুন মনে করেন পিকে আমাদের কনসাসনেসেরই রিমোট
ইনফ্লুয়েন্স!তারা মনে করেন, পিকে ফিজিক্যাল এবং মেন্টাল রিয়েলিটির মাঝে ইনফরমেশন
এক্সচেঞ্জের সাথে বিজড়িত, মেন্টাল এবং ম্যাটারিয়াল রিয়েলিটির এক অবিচ্ছিন্ন
প্রবাহ, এবং পিকে হলো মেন্টাল এবং ফিজিক্যাল রিয়েলিটির ইন্টারসেকশন বা
রিজোন্যান্স!
Comments
Post a Comment