মেটা ভার্সিক্যাল থট ( বিবর্তনীয় ভুল )


                                              বিবর্তনীয় ভুল 


                             

  




পর্ব-১


 আমি একবার ক্যাফেটারিয়ায় একদল বন্ধুকে নিয়ে আপসাইড ডাউন মুভিটি দেখছিলাম।মুভিটির প্রথমদিকে দেখা যায়, একজন ব্যাক্তি এক খন্ড রুটিকে শূন্যে ছুড়ে দিচ্ছে, এবং সেটি  শূন্যেই স্থির হয়ে আছে।আমার বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ এটাকে একটি ম্যাজিক বলে ব্যাখ্যা করলো, আবার অনেকের মতে এটি একটি  স্প্রিচুয়াল শক্তি,কেউ কেউ বলছে এটা সফটওয়্যারের কারসাজী, কারো কাছে মুভিটি অতি-প্রাচীন এবং অনেকের ধারণা এটি সম্ভবত প্যারানরমালতারা কেউই জানতোনা মুভিটির প্রকৃত থিমস কী?এবং ঠিক কোন থিমসটি অনুসরণ করে এই মুভির ম্যাকানিজম প্রস্তুত করা হয়েছে, তাই রুটিটির শূন্যে ঝুলে থাকার ঘটনাটি সম্পর্কে তাদের অনেকগুলি অবাস্তব ধারণা তৈরি হয়েছেকিছুক্ষণ পর যখন তারা দেখলো একটি বিশাল বিল্ডিং এর  সিলিঙ এবং ফ্লোরে একইসাথে শত শত মানুষ হাঁটাহাঁটি করছে এবং বিভিন্ন সারিতে একসাথে অফিস করছে তখন তারা আরো অধিক বিষ্মিত হয়ে উঠে।মাকড়সার মতো এরা কিভাবে কক্ষের আপসাইডে চেয়ার পেতে অফিস করতে পারে যাদের খুলি ফ্লোরের দিকে ঝুলন্ত?[ভাইস ভার্সা]। তাদের নিকট সম্পূর্ণ অন্যকিছু মনে হতে থাকে যতক্ষণ না তারা বুঝতে পারে এখানে জগত একটি নয়, জগত আসলে দুটি কিন্তু দুটি জগতের ম্যাকানিজম সম্পূর্ণ আলাদা।মূলত ঐ মুভিটিতে সক্রিয় ছিলো ডাবল গ্রেভিটি।

সে জগতটির ম্যাকানিজম এমন ছিলো যে সেখানে আপ এবং ডাউন উভয় দিকেই  গ্রেভিটি কাজ করতো, যতক্ষণ না তারা মুভিটির থিমস বুঝেনি ততক্ষণ সম্পূর্ণ মুভিটিই ছিলো তাদের নিকট বিক্ষিপ্ত কিছু সিকোয়েন্স যে সিকোয়েন্সগুলি থেকে তারা যুক্তিসংঘতভাবে কোনো মিনিংই বের করতে পারছিলোনা।কেনো আমরা ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি?কেনো ধর্মগুলি বিকশিত হলো?কেনো মানুষের মাঝে নৈতিকতাবোধ কাজ করে? এ প্রশ্নগুলির যুক্তিসংঘত কোনো রিজোন্যান্স আমাদের পক্ষে কখনোই আবিষ্কার করা সম্ভব নয় যদি না আমরা আপ সাইড ডাউন মুভিটির মতোই মহাবিশ্বের এভুলিউশনাল থিমস না বুঝি।আমাদের কাছে

মনে হতে পারে ঈশ্বর একটি সুপারন্যাচরাল বাস্তবতা!আমাদের নিকট মনে হতে পারে নৈতিকতা ধর্মের সাথেই সংশ্লিষ্ঠ, মনে হতে পারে আমরা সবাই একটি ইন্টেলেকচুয়াল এক্সিসটেন্সেরই সিগনেচার!এ অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে এভুলিউশনাল মিসফায়ারিং ধর্মীয় ভাইরাসগুলি সৃষ্টি করে।আমরা প্রায়শ দেখি মথেরা মোমবাতির আগুনে ঝাপ দিয়ে সুইসাইড করে, ভালোভাবে দেখলে মনে হয়না যে এটি একটি দুর্ঘটনা, মনে হয় যেনো এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত সুইসাইড?কিন্তু কেনো?কেনো অজস্র প্রাণ আগুনে ঝাপ দিয়ে সুইসাইড করবে?

কেনো তাদের জেনেটিক্যাল কোড কোনো সুপার ইন্টিলিজেন্ট এমনভাবে এনকোডিং করেছে যা সম্পূর্ণ অকারণে তাদের আগুনের শিখায় নিজেকে আত্মহুতি দিতে বাধ্য করছে?কী ব্যাখ্যা হতে পারে এ দৃশ্যমান অকারণ মৃত্যুর?যে

পতঙ্গরা কোটি কোটি বছর অপচয় করে ছায়াপথের গ্রহ নক্ষত্রগুলির মতো বিবর্তিত হয়েছে, কেনো সম্পূর্ণ অকারণে তারা জলাঞ্জলি দিচ্ছে তাদের জীবন?

যদি আমরা এভুলিউশনাল থিমস না বুঝি তবে আমাদের নিকট আপ সাইড ডাউন মুভির সেই সিকোয়েন্সগুলির মতোই এটিকে মনে হতে পারে আধ্যান্তিক কোনো ঘটনা অথবা ঈশ্বরের অস্তিত্বের সুগভীর কোনো সম্ভাবনা বা আমাদের ধর্মীয়  বিশ্বাসের পরীক্ষা ইত্যাদি!জন্মান্তরবাদীরা এটিকে ব্যাখ্যা করতে পারেন পূর্ব পাপের রিমান্ড অথবা অন্যকিছু কিন্তু সবকিছু তাৎক্ষণিক অনর্থক প্রমাণিত হবে যদি আমরা জানি এ অযোক্তিক মৃত্যুর যোক্তিক এবং বৈজ্ঞানিক ববর্তনীয় ব্যাখ্যা!



animated pic evolution gif | WiffleGif





রাতের গ্রহে কৃত্রিম আলোর উপস্থিতি খুবই সাম্প্রতিক।কৃত্রিম আলো জন্মের পূর্বে মথেরা রাতের পৃথিবীতে পথ চলতো চাঁদ এবং তারকাদের আলোকে অনুসরণ করে।নক্ষত্ররা পতঙ্গদের অপটিক্যাল ইনফিনিটিতে বাস করে তাই সেখান থেকে আসা আলোক রশ্নিগুলি হয় সমান্তরাল।এই সমান্তরাল আলোক রশ্নিগুলিই মথদের পথ চলার কম্পাস বা দিক নির্দেশনা হিসেবে কোটি কোটি বছর ধরে কাজ করে আসছে।মথদের এমনভাবে কম্পাসকে অনুসরণ করতে হতো যেনো আলোক রশ্নি তাদের চোখে ৩০ ডিগ্রি কোণেই আঘাত করে। কিন্তু  আলোক উৎস যদি দৃষ্টিসীমার অসীমে না হয় তবে আলোক রশ্নি আর সমান্তরাল থাকেনা, তারা স্পোকের মতো চারদিকে ছড়িয়ে থাকে, এবং যদি ৩০ ডিগ্রি এঙ্গেল মথদের মস্তিষ্কে ফিক্স করে রাখা হয় তবে তারা সেই চক্রাকার বৃত্তে কক্ষপথের ইলেক্ট্রনের মতোই ঘুরতে থাকে।যাদের দেখলে মনে হয় নিরবে,নিবৃতে হাজার হাজার মথ সুইসাইড করছে এবং আমরা প্রশ্ন করি কেনো তারা সুইসাইড করেছে?যদিও আমাদের প্রশ্ন  করা উচিত ছিলো কেনো এভুলিউশন তাদের এমন একটি স্নায়ুতন্ত্রের জন্ম দিয়েছে যে জন্যে তারা শুধুমাত্র ৩০ ডিগ্রি এঙ্গেলে দেখতেই অভ্যস্ত?আমরা মথদের এই এভুলিউশনাল মিসফায়ারিং কে সুইসাইড বলে ব্যাখ্যা করি কারণ আমরা তাদের সাধারণ চোখেই দেখি।এমনকি সম্ভবত যদি মথরাও কখনো মিররে তাদের এ মৃত্যু প্রকৃয়াকে পর্যবেক্ষণ করে তাদের কাছে সবকিছু দুঃস্বপ্ন মনে হতে পারে, প্রশ্ন আসতে পারে, কেনো আমরা অযথা সুইসাইড করছি!কিন্তু স্বপ্নের মতোই তারা তাদের ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করলেও সেই অনিবার্য মৃত্যু ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেনা।সাধারণত লুসিড ড্রিমে আমরা আমাদের ইচ্ছাশক্তিকে ব্যাবহার করতে পারি।কিন্তু এমনকিছু স্বপ্ন আছে যেখানে আমরা আমাদের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে আসন্ন কোনো দূর্ঘটনাকে অতিক্রম করতে পারিনা, ঠিক একইভাবে মথরাও নিজেদের ইচ্ছাশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেনা কারণ তাদের চোখ ৩০ ডিগ্রি এঙ্গেলে ফিক্স

যা তাদের আলোর সেই সর্পিলাকার বাহু থেকে বের হওয়ার সুযোগ দেবেনা!





ধর্মগুলির উৎপত্তি ঘটেছে সম্ভবত সম্পূর্ণ অন্যকোনো কারণে যাকে আমরা এখন ধর্মীয় আচরণের মাধ্যমে প্রকাশ করছি।হতে পারে এটি একটি এভুলিউশনাল মিসফায়ারিং।যারা প্যান্টাগন টাওয়ারে বিমান হামলা করেছিলো অথবা বুকে বোমা বেঁধে বিমান সহ ঢুকে পড়েছিলো টুইনটাওয়ারে তাদের নিকট মনে হয়েছিলো তারা টুইনটাওয়ারে নয় তারা হাইপারড্রাইভ দিচ্ছে সোজাসোজি স্বর্গরাজ্যে,অযুত নিযুত অপ্সরীদের মাঝে!আমরা ধর্মের জন্যে অজস্র প্রাণকে জলাঞ্জলি হতে দেখি, ধর্মের জন্যে প্রাণ দেয়া এবং প্রাণ নেয়ার নেশায় সমস্ত পৃথিবী উন্মাদ!কিন্ত কেনো, কম্পাসের দিক-নির্দেশনা, মথদের মতো , এসব হোস্টকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে ?কেনো তারা এখান থেকে কোনোকিছুতেই বের হতে পারছেনা? যদি মথদের মতো তাদের সামনে একটি মিরর রাখা হতো তারা দেখতো, এবং বাস্তবে তারা তা সচেতনভাবেই জানতো যে মাত্র কিছুক্ষণ পর তাদের সাথে কী ঘটতে যাচ্ছে কিন্তু তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করেনি, নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, কারণ আপেক্ষিক দৃষ্টিতে এটিকে সুইসাইড মনে হলেও এটি সুইসাইড নয়, এটি একটি মিসফায়ারিং!ভয়ানক পোগ্রাম!





হেনসন রোবটিক্সের তৈরি, একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্ট যদি তার পোগ্রামারের কমান্ড অনুসরণ না করে,সেই কমান্ডটিকে এনালাইসিস করে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় অপচয় করে তবে কী ঘটতে পারে তার সাথে?মনে করুন, একটি কক্ষে দশ মিনিট পরই তেজস্ক্রীয়  বোমা বিস্ফোরিত হবে, রোবটটিকে সেই কক্ষটি থেকে সরে যাওয়ার জন্যে নির্দেশ পাঠানো হলো, কিন্তু সে এ নির্দেশটিকে জাস্টিফাই করতে করতেই  বোমাটি বিস্ফোরিত  হয়ে হলো, এবং রোবটটি  ধবংস হয়ে গেলো!এমন একটি সচেতন রোবট কী আসলেই উপকারী?এভুলিউশন শিশুদের ব্রেনকে এতটাই উচ্চতর ক্ষমতা দিয়ে তৈরি করে যেনো তারা শক্তিশালী কম্পিউটারের মতো তার এনভায়রণমেন্টকে কপি করতে পারে, কোনোপ্রকার জাস্টিফিকেশন ব্যাতীতই।যেমন-শিশুটির পোগ্রামার পিতা শিশুটিকে কমান্ড করলো আগুনে হাত রেখোনা।শিশুটির জন্যে এটাই ভালো হবে যে পিতার কমান্ডকে টেস্ট না করে সরাসরি বিশ্বাস করে নেয়া।আর এভাবেই বিবর্তন একটি শিশুকে হাইলি কনসান্ট্রেট করে তোলে পরিবেশের প্রতি।কিন্তু কখনো কখনো পোগ্রামার এমনকিছু পোগ্রাম করে যা ভাইরাল কিন্তু ব্রেনটি সেটি কপি করে নেয়।

যেমন-ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্যে গরু কুরবানী করতে হবে।রিচার্ড ডকিন্সের মতে, এটি গরু আর সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়।অসংখ্য পোগ্রামের সাথে এমনকিছু ভুল পোগ্রাম শিশুটির ব্রেনে ইনপুট করা হয় যার কোনো যৌক্তিকতাই নেই।আর এভাবেই এভুলিউশনাল মিসফায়ারিং ধর্মের উদ্ভব ঘটায় যা মানব সভ্যতার জন্যে কোনোভাবেই উপকারী নয়!আমরা পরে আরো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করবো এসব মিসফায়ারিং এর বৈজ্ঞানিক বিবর্তনীয় গুরুত্ব কিন্তু তার আগে আমরা প্রবেশ করছি জীববিজ্ঞানের প্যারাসাইট সংক্রান্ত রোমান্সকর এক বাস্তবতায়ঃ



টক্সিপ্লাজমা প্যারাসাইট যখন ইঁদুরের মস্তিষ্কে ইনফেক্ট হয় তখন সিলেক্টিভলি বিড়ালের ফেরোমেন অনুভব করার বায়োলজিক্যাল ক্ষমতা তার সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে যায়।সাধারণত ইঁদুর ফেরোমেনের মাধ্যমেই বিড়ালের উপস্থিতি অনুভব করে এবং আত্মরক্ষামূলক প্রদক্ষেপ গ্রহণ করে।টক্সিপ্লাজমা ইঁদুরের মস্তিষ্কে সংক্রমিত হওয়ার পর তার সামনে যদি অত্যন্ত ভয়ানকভাবে তার মৃত্যুদূত বিড়াল এসে দাঁড়িয়েও থাকে আর মাত্র কিছুক্ষণ পর তার সাথে কী ভয়াভহ বাস্তবতা মঞ্চায়িত হতে যাচ্ছে তা সে বুঝে উঠার সময়ই পায়না!বিড়াল যখন তাকে খেয়ে ফেলে তখন টক্সিপ্লাজমা প্যারাসাইট বিড়ালের শরীরে বংশবিস্তার করে এবং তার বিষ্ঠার মাধ্যমে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে!



একজন হিন্দুর শরীরে যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড কাজ করে একজন খ্রিষ্ঠানের শরীরেও একই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড কাজ করে।থার্মো ডায়নামিক্সের সেকেন্ড ‘’ল’’ হিন্দু,মুসলিম,বোদ্ধ অথবা খ্রিষ্ঠান সকল ধর্মের মানুষের দেহে সময়ের সাথে এন্ট্রপি বাড়িয়ে তোলে, এবং সবাই একদিন তাপীয় ভারসাম্যের চুড়ান্তে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে!প্রতিটি মানুষই ডি এন এ থেকে পিটাসে রুপান্তরিত হয় এবং পিটাস থেকে পরিপূর্ণ এক মানব শিশুতে।ফিজিক্সের সুত্র গুলি হিন্দু,মুসলিম,বোদ্ধ অথবা খ্রিষ্ঠানকে পৃথক করে চেনেনা!নিউটনের মোশনের থার্ড ‘’ল’’ একজন নাস্তিকের সাথে যেমন বিহেভ করবে একজন আস্তিকের সাথেও ঠিক একই!



তাহলে কেনো পৃথিবীর প্রতিটি ধর্মের মানুষ প্রত্যাশা করে, সবাই তাদের ধর্মকে গ্রহণ করুক, তাদের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করুক?যদি এখন এ মুহূর্তে এক মেগাসেকেন্ডের জন্যে পৃথিবীর সকল মানুষ মুসলিম হয়ে যায় তবে মহাবিশ্বের ফিজিক্স কী চেঞ্জ হবে?কোয়ান্টাম টানেলিং অথবা কোয়ান্টাম আনচারটেনটিটির সুত্র কী অন্যরকম ভাবে কাজ করবে?আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি কী ভিন্ন কোনো বাস্তবতা প্রদর্শন করবে?মানুষ কী অমরত্বের স্বাদ পাবে?অথবা পৃথিবীর সব মানুষ যদি খ্রিষ্ঠান হয়ে যায়?মানুষের ক্ষুদা পরিবর্তন হবে?মানুষের

জীবনে শূন্যতার উপদ্রব কী ডেস্ট্রোয় হয়ে যাবে?



কী হবে যদি পৃথিবীর সকল মানুষ আগামীকাল বোদ্ধ হয়ে যায়?থমসন কনস্ট্যান্ট অথবা রাইভার্গ কনস্ট্যান্ট কী অন্যকোনো ডায়মেনশনে কাজ করবে?বোলজম্যান কনস্ট্যান্ট কী চেঞ্জ হয়ে যাবে?প্রায় ৩৭ টি কনস্ট্যান্ট ইউনিভার্সাল ওয়েভ ফাংশন কলাফস করে আমাদের জন্যে যে মহাবিশ্বকে রিজোন্যাট করেছে সেটি কী সমস্ত মানব সভ্যতার জন্যেই নয়?



না! ফিজিক্সের রেটিনায় হিন্দু,মুসলিম,বোদ্ধ বা খ্রিষ্ঠান নেই!তার চোখে ‘’শূন্যতা’’।



অথচ টক্সিপ্লাজমা আক্রান্ত ইঁদুরদের মতো যারা সকল ঘ্রাণ ফিল করতে পারলেও বিড়ালের ফেরোমেন ফিল করতে পারেনা; ঠিক তেমনি ধর্মীয় প্যারাসাইট আক্রান্ত ব্যাক্তিগুলি শুধুমাত্র তাদের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বই দেখে, তারা দেখেনা তাদের প্রত্যেকে হিউ-এভারেটের ইউনিভার্সাল ওয়েভ ফাংশন কলাফস করে মেটা ইউনিভার্স থেকে একটি সুনির্দিষ্ট ইউনিভার্সেই রিজোন্যাট হয়ে আছে, যেখানে তাদের প্রত্যেকের জন্যে ‘’ল’’ অব ফিজিক্স অভিন্ন।তারা এ উল্লেখযোগ্য ফেরোমেনটা ফিল করতে পারেনা, তারা ফিল করতে পারেনা তাদের প্রত্যেকের মাঝে বিদ্যমান প্রাকৃতিক ইউনিটি।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট থেকে যদি আমরা ভাবি তবে এ ভয়াভহ বিড়ালকে আমরা খুব সহযে সনাক্ত করতে পারি।আমাদের দেশের ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলির মধ্যবর্তী বিভাজনকে কেন্দ্র করে একটি বিরাট কেটস পলিটিক্যাল গেমস খেলছে কিন্তু তারা কোনোকিছুতেই এই গেমসটিকে ফিল করতে পারছেনা, তারা উপলব্দি করতে পারছেনা ইনভেডার অব বডি স্নেচার মুভির মতোই তাদের মস্তিষ্কের নিউরো-লজিক্যাল ফাংশন এখন একটি এলিয়েনের অধিকারে , যেই দুষ্ট এলিয়েন তাদের অজান্তেই তাদের চিন্তার গতিবিধি পরিচালনা করছে!যদি এদেশের মানুষগুলি তাদের মধ্যকার মিথ্যা ব্যাবচ্ছেদগুলি সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতো তবে সম্ভবত এ বিশাল কেটসকে অতিক্রম করে তারা অনেক দূরে সরে যেতে পারতো!কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে তারা তা পারছেনা!





                                





                             ঈশ্বরের নাস্তিকতা 







মহাত্ম্যা গান্ধী বলেছিলেন, ‘’ঈশ্বর ইউনিভার্স এবং আমাদের সৃষ্টি করেছেন কিন্তু তার কোনো সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর নেই, আর যার কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই তিনি তার অস্তিত্বের জেনেসিস হিসেবে কোনো ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবেন না, অতএব ঈশ্বর একজন নাস্তিক ,আর যদি মহাবিশ্বের ঈশ্বর নাস্তিকই হয়, তবে অবশ্যই তার অসীমত্বের অন্তঃর্ভূক্ত প্রতিটি অস্তিত্বকে ঈশ্বরের নাস্তিকত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা উচিত।‘’ প্রাকৃতিক ভাবে প্রতিটি মানুষের মাঝে এ নাস্তিকতা বিদ্যমান আছে।গতকিছুদিন পূর্বে একজন শিশু আমাকে বলেছিলো, ঈশ্বর শুধু একজন এবং ঈশ্বর যদি কয়েকজন হতো তবে তারা ফিজিক্সের সুত্রগুলি নিয়ে কোয়ালিশনে যুক্ত হতো।আর এতে করে মহাবিশ্বের অস্তিত্বই হয়ে উঠতো অসম্ভব।আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম- এই কক্ষে আমরা কতজন?সে বলল, হ্যা এটা ঠিক এ কক্ষে আমরা তিনজন কিন্তু আমরা তো ঈশ্বর না!আমি তাকে বললাম, আচ্ছা।বলো তো, তিনজন শিক্ষিত এবং সভ্য মানুষ কী কখনো ঝগড়া করবে?সে বললো, না, সভ্য মানুষরা কখনোই ঝগড়া করবেনা!’’তাহলে এখন বলো, তিনজন ঈশ্বর কী আমাদের সাধারণ শ্রেণীর মানুষেদের মতো নিরক্ষর এবং অশিক্ষিত যে তারা ফিজিক্সের সুত্র নিয়ে একে অপরের সাথে তর্কবিতর্ক করবে? ‘’শিশুটি নিস্তব্দ হয়ে গেলো!এছাড়াও ধার্মিকরা প্রায়ই বলে থাকেন, ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু তাকে কেউ সৃষ্টি করেননি, তার অস্তিত্বের পেছনে কোনো লজিক নেই, কোনো প্রমাণ ব্যাতীতই বিশ্বাস করতে হবে যে ঈশ্বর নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছেন, হ্যা ঠিক আছে, মেনে নিলাম যে ঈশ্বর যুক্তিতর্কের অতীত, তার কোনো ঈশ্বর নেই, তাকে প্রমাণ করা অসম্ভব, তাহলে তোমরাও শুনে নাও, মহাবিশ্ব নিজে নিজেই তৈরি হয়েছে যুক্তির অতীত শূন্যতা থেকে, যদি ঈশ্বরের জন্যে প্রমাণের বাধ্যবাধকতা না থাকে তবে আমার অস্তিত্বের জন্য ঈশ্বর দায়ী নয় এক্ষেত্রেও কোনো প্রমাণের বাধ্যবাধকতা নেই!



ঈশ্বরের অস্তিত্বের সাপেক্ষে একটি বিখ্যাত যুক্তি ছিলো ফ্রেড হোয়েলের ‘’আল্টিমেট বোয়িং ‘’৭৪৭’’।ফ্রেড হোয়েল বলেছিলেন, স্ক্র্যাপ ইয়ার্ড থেকে প্রচন্ড ঘূর্ণিজড়ে আকষ্মিক একটি আস্ত বোয়িং ৭৪৭ হেলিকপ্টার তৈরি হয়ে নিজে নিজেই উড়তে থাকা ঠিক যতটা অসম্ভব ঠিক তেমনি অসম্ভব কোনোপ্রকার ডিজাইনার ব্যাতীত মহাবিশ্ব এবং জীবনের উদ্ভব!আপনার কী মনে হয় স্ক্র্যাপইয়ার্ড থেকে পুরাতন যন্ত্রপাতিগুলি এমনি এমনিই  একে অপরের সাথে ট্যাকনোলজিক্যালি সংযুক্ত হয়ে একটি টাইম মেশিন প্রস্তুত হবে এবং নিজে নিজেই অতীতের মহাবিশ্বে ছুটে চলবে? 

যদি আমরা এমনি এমনি ক্রিয়েটর ব্যাতীত একটি টাইমমেশিন অথবা  বোয়িং ৭৪৭ এর অস্তিত্বকে চিন্তা করতে না পারি তাহলে আটাশ গিগাপার্সেস আয়তনের এই মহাবিশ্ব যেটি মহাকাশে মেটা ইউনিভার্সদের সাথে স্পেস-টাইম ফেব্রিককে  বক্র করে অনন্তের জানলা উন্মোক্ত করে আছে কিভাবে  তার সম্পর্কে ভাবতে পারি  ,এটি  নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে?রিচার্ড ডকিন্স একই প্রশ্ন  করেছিলেন  ঈশ্বরের অস্তিত্বের ক্ষেত্রে!তার মতে যদি আমরা কিছুক্ষণের জন্যে মেনেও নেই যে একজন পরিকল্পকের হস্তক্ষেপ ব্যাতীত মহাবিশ্বের অস্তিত্ব একেবারেই অসম্ভব ঠিক যেমনি অসম্ভব স্ক্যাপইয়ার্ড থেকে একটি বোয়িং ৭৪৭ এর উদ্ভব, তবে  ঈশ্বরের অস্তিত্বের পেছনে কেনো কোনো ডিজাইনার থাকবেনা?পরিকল্পক বা উৎস ব্যাতীত ঈশ্বরের অস্তিত্বও কী আল্টিমেট বোয়িং ৭৪৭ নয় যা চুড়ান্তভাবেই অসম্ভবাতাকে নির্দেশ করে?



আমি এ গ্রন্থে ঈশ্বর এবং ধর্মের শুধু সমালোচনা অথবা অবাস্তবতা নয়, একইসাথে আমি তুলে ধরবো নাস্তিকতার সীমাবদ্ধতা এবং কেনো একজন ঈশ্বরের অস্তিত্ব আসলেই সম্ভব!সে ঈশ্বর কেমন?তার যোক্তিকতা কতটুকু!ধর্ম কী পুরোপুরিই অযোক্তিক!আমি ব্যাক্তিগতভাবে এ গ্রন্থে অজ্ঞাত রাশির মতোই আচরণ করবো, আমি আপাতত হ্যা অথবা না কোনো পক্ষে সমর্থন করবোনা কিন্তু যেহেতু প্রচলিত অর্থে বা জনসাধারণের ভাষায় আমি একজন নাস্তিক সেহেতু নাস্তিকতার প্রতি আমার সহযাত আকর্ষন এবং পক্ষপাত থাকবে, যেহেতু আমরা পর্যাপ্ত দর্শন এবং যুক্তির ভেতর দিয়েই সিদ্ধান্ত উপনিত হতে ভালোবাসি নিতান্ত বিশ্বাসের উপর ভর না করে!





যুক্তি দিয়েই কী সবকিছু পরিমাপ করা সম্ভব?যুক্তির কী সীমারেখা নেই?শব্দের সীমারেখায় কী ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অসম্ভব করা যায়!হ্যা!যুক্তির সীমারেখা আছে!সীমারেখা আছে শব্দের!যুক্তির সীমাবদ্ধতাকে আমরা অস্বীকার করছিনা!শব্দের সীমাবদ্ধতার অনেক উদাহরণ আছে!একবার আমার একজন ইউনিভার্সিটির বন্ধুকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, মৃত্যুর পর কি আমরা থাকবো? তার উত্তর ছিলো, মৃত্যুর পর কিছুই নেই, সবকিছুই ‘’নাথিং’’!তারপর আমি তাকে পালটা প্রশ্ন করি, তুমি যা বলছো তা কতটুকু লজিক্যাল?এটি কী গাণিতিকভাবে তুমি সত্যায়ন করেছো?

সে কড়াভাবে জবাব দিয়েছিল, অবশ্যই লজিক্যাল!...’’ওহ!তার মানে মৃত্যুর পর সবকিছুই ‘’নাথিং’’ এটাও একটি লজিক্যাল ‘’থিংস’’?যাইহোক!এটাই ল্যাঙ্গুয়েস্টিক ডুয়ালিটি।ঈশ্বরকে যদি আপনি হ্যা বলেন তবে একইসময় আপনাকে না  বলার জন্যেও প্রস্তুত থাকতে হবে!অনেকটা টাইম প্যারাডক্সের মতো!এবার আসুন যুক্তির সীমারেখায়একটি স্পেসশিপের পক্ষে কী একইসাথে এবং একইসময় অতীত এবং ভবিষ্যতের দিকে ভ্রমণ করা সম্ভব?যোক্তিকভাবেই একটি বস্তুর পক্ষে একটি নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট একটি লোকেশনেই অবস্থান করা সম্ভব।কিন্তু কিছুকিছু ক্ষেত্র আছে যেখানে, একটি বস্তু একইসাথে দুটি জায়গায় থাকতে পারে যেমন আপনি আপনার কিচেনের ভেতরে একটি পা রাখতে পারেন এবং বাহিরে আর একটি!কিন্তু তার বাহিরে কী আপনার মস্তিষ্ক চিন্তা করতে পারে?আপনি হয়তো একটি নির্দিষ্ট সময় কিচেনের ভেতরে থাকতে পারবেন অথবা কিচেনের বাহিরে পৃথিবীর অন্য কোথাও বা  কিচেনের ভেতরে এবং বাহিরে একসাথে।কিন্তু এ তিনটি অপশনের বাহিরে আপনার পক্ষে কী অন্য কোনোভাবে অস্তিত্বশীল হওয়া সম্ভব অথবা আপনার মস্তিষ্কের যুক্তিতে এ তিনটি অপশন ছাড়া আর কোনো অপশন আপনার জন্যে উন্মুক্ত আছে?না নেই!এখানেই আপনার যুক্তিবিদ্যার সমাপ্তি!বিষ্ময়ের ব্যাপার হলো, যেখানে আপনার যুক্তির সমাপ্তি সেখানেও মাইক্রোস্কোফিক বাস্তবতা কাজ করে, একটি পার্টিকেল কোয়ান্টাম টানেলিং এর ভেতর দিয়ে এ তিনটি অপশনকে অতিক্রম করতে পারে!

তার মানে কী দাঁড়ালো?যুক্তি কখনোই বাস্তবতা নয়, যুক্তি বাস্তবতাকে বুঝা বা ব্যাখ্যা করার একটি ল্যাঙ্গুয়েস্টিক পদ্ধতি।একটি ছোট শিশুকে হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঈশারা করে সর্বপ্রথম দেখাতে হয় যে কোনটি সূর্য, কিন্তু যখন শিশুটি সূর্যকে চিনে যায় তখন তার চোখের সামনে বারবার আঙুল উঠাতে হয়না!ভাষা,সংকেত এবং যুক্তি বাস্তবতাকে রিপ্রেজেন্ট করে কিন্তু এগুলি কখনোই সামগ্রিক বাস্তবতাকে অবধারণ করেনা, বাস্তবতা ভাষা,যুক্তি এবং সংকেতের অনেক উদ্ধে!অনেক মূর্খ আছেন যারা আমার এ বক্তব্যকে বিকৃত করে সমাজে অপপ্রচার করবে যুক্তির কোনো ভিত্তি নেই, অতএব ঈশ্বর যুক্তির অতীত, তিনি মাইক্রোস্কোফিক জগতের মতোই এমন একটি বাস্তবতা যা যুক্তিকে অতিক্রম করে আছে কারণ তার সীমা নেই।আপনার একজন মানুষের জন্যে খারাপ লাগে, কিন্তু আপনি সেই খারাপ লাগাটাকে যুক্তিসংঘতভাবে ব্যাখ্যা করতে পারছেনা ,তার মানে এই নয় যে আপনার খারাপ লাগছেনা!কোনোকিছু যুক্তিসংঘতভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব না হলেই যে অবাস্তব তা একদম কাজের কথা নয়!অনেক সময় আমরা বাস্তবতাকে লজিক্যালি এক্সপ্লেইন করতে পারিনা, কিন্তু তার মানে এই নয় যে বাস্তবতার পেছনে লজিক্যাল কোনো ফাউন্ডেশন নেই।আবার মাইক্রোস্কোফিক ডায়মেনশন হলো এমন একটি বাস্তবতা যেখানে যুক্তিবিদ্যাই কাজ করেনা, লজিক্যাল ফাউন্ডেশনই ভেঙে যায়!লজিক ভেঙে যাওয়ার অর্থ ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়ে যাওয়া নয়, যদিও অনেকে এভাবেই চিন্তা করে। লজিক ভেঙে যাওয়ার অর্থ ভিন্ন মাত্রিক বাস্তবতায় প্রবেশ করা যেখানে আমাদের থ্রিডি মস্তিষ্কের যুক্তিতর্কের অতীত কিছু ঘটনা ঘটছে!এ বিষয়ে আমরা পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে বিস্তারিত আলোচনা করবো।



মাইক্রোস্কোফিক পার্টিকেলগুলি কিভাবে লজিক ভেঙে ফেলে তার কিছু উদাহরণ দেয়া  যায়।আপনাকে যদি দুটি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে একইসাথে একইসময় পথ চলতে বলা হয় আপনি কী পারবেন?লজিক্যালি কী এটি সম্ভব?কিন্তু মাইক্রোস্কোফিক জগতে একটি পার্টিকেল একসাথে দুটি ছিদ্র দিয়ে ভ্রমণ করতে পারে, এবং নিজের সাথে নিজে ইন্টারফেয়ারেন্স প্যাটার্ন তৈরি করে,  যেনো এটি কোনো পার্টিকেলই নয় এটি পটেনশিয়াল ওয়েভ!

আবার লাইট বাউন্সিং মিররের মাধ্যমে একটি বিশেষায়িত প্রকৃয়ায় বিজ্ঞানীরা ডাবল স্লিট এক্সপেরিমেন্ট পরিচালনা করে দেখেছিলেন, যখন তারা পার্টিকেলদের গতিপথ নির্ধারণ করে ফেলেছিলো তখন পার্টিকেলগুলি কোনো ছিদ্রের ভেতর দিয়েই ভ্রমণ করেনি, না বাম ছিদ্র পথে অথবা ডান ছিদ্র পথে, অথবা একাধিক ছিদ্র পথে কিন্তু তারা ডিটেক্টরে হিট করেছিলোইন্টারনেট,  যেমন একটি মেসেজ সেন্ড করার জন্যে একজায়গা থেকে অন্য আর একটি জায়গায় জায়গায় যেতে হয়না ঠিক তেমনি ডাবল স্লিট এক্সপেরিমেন্টে পার্টিকেলগুলি এক জায়গা থেকে অন্য আর একটি জায়গায় যেতে কোনো পথ গ্রহণ করেনা, মনে হয় যেনো পার্টিকেলগুলি সর্বত্রই বিদ্যমান।কিন্তু কোনো মানুষের পক্ষে কী কখনোই সম্ভব রকেট,স্পেসশিপ অথবা ওয়ার্মহোল কোনোকিছু ব্যাবহার না করেই আলফা

সেন্টরি চলে যাওয়া?স্পেসশীপে উঠার পূর্বেই মহাবিশ্বের অন্য কোনো গ্যালাক্সিতে পৌঁছে যাওয়া?আপনি কোনো গেট দিয়ে প্রবেশ না করেই কী পার্লামেন্টের অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন?আমাদের মস্তিষ্কের বাইনারী অপারেটিং কোনো পথে পথ না চলেই গন্তব্যে পৌছানোর  পদ্ধতিকে লজিক্যালি এক্সপ্লেইন করতে পারবেনা!কারণ আমাদের মস্তিষ্কের বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেম বৈপরিত্যের ভিত্তিতে বিশ্বের মডেল প্রস্তুত করে, ডানের বিপরীতে বাম,বামের বিপরীতে ডানআমরা ডান দিকে তাকালে বাম দিক অন্ধকার হয়ে যায়, আমরা উপরের দিকে তাকালে নিচের দিক দেখিনা,আমরা যখন অতীত নিয়ে চিন্তা করি ঠিক সেই মুহূর্তে ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করতে পারিনা, আমাদেরকে যুক্তিসংঘত ভাবেই যেকোনো একটি দিককে নির্বাচন করতে হয়।কিন্তু ডাবল স্লিট এক্সপেরিমেন্টে দেখা গেছে, পার্টিকেলগুলি আমাদের মস্তিষ্কের যুক্তির ফ্রেমওয়ার্কে কাজ করছেনা! তারা বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেম লঙ্গন করছে!আপনি ডান অথবা বাম কোনোদিকে না তাকিয়েই কী কোনোকিছু দেখতে পারবেন?না সম্ভব নয়!একেবারেই অসম্ভব!ঠিক যেমনি অসম্ভব স্ক্রেপয়ার্ড থেকে এমনি এমনি কোনো ডিজাইনার ছাড়াই একটি বোয়িং ৭৪৭ তৈরি হয়ে যাওয়া!

আপনি কোনো প্রজাপতিই দেখেননি অথচ আপনি বলে ফেললেন যে আপনি ডান দিকে একটি প্রজাপতি দেখেছেন এবং অন্য একজন পরীক্ষা করে দেখলো ঘটনা সত্য ঠিক তেমনি পার্টিকেলগুলি ডাবল স্লিট এক্সপেরিমেন্টে কোনো ছিদ্রপথ দিয়ে প্রবেশ না করেই ডিটেক্টরে হিট করে  এবং প্রমাণ করে তারা যতই অসম্ভব হোক, যতই প্যারানরমাল হোক, যতই অযোক্তিক হোক  ডিটেক্টরে তাদের যোক্তিক উপস্থিতি একেবারেই সত্য!একটি পার্টিকেল কোনোদিকে না তাকিয়েও এমনভাবে সকল দিক সম্পর্কে বিবৃত্তি প্রদান করতে শুরু করলো যেনো সে সকল দিকে একেবারে বাস্তবেই তাকিয়ে আছে!মাইক্রোস্কোফিক ডায়মেনশনকে আমরা লজিক্যালি এনালাইসিস করতে পারিনা কিন্তু তবুও আমরা ডিটেক্টরে তাদের উপস্থিতিকে যোক্তিকভাবেই অস্বীকার করতে পারিনা।ঠিক তেমনি ঈশ্বর ব্যাতীত আমরা মহাবিশ্বকে হয়তোবা লজিক্যালি ব্যাখ্যা করতে পারিনা কিন্তু ঈশ্বর ছাড়াই যে আমরা মহাবিশ্বে আছি,আমরা আমাদের সেই ম্যাজিক্যাল উপস্থিতিকে ডিটেক্টর স্কিনের ইন্টারফেয়ারেন্স প্যাটার্নের মতোই লজিক্যালি অস্বীকার করতে পারিনা!



আমরা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে তখনই সমর্থন করতাম যখন আমরা দেখতাম যে আমাদের দেহের পার্টিকেলগুলি একটি নির্দিষ্ট সময় শুধু একটি লোকেশনেই সীমাবদ্ধ থাকে, কিন্তু ডাবল স্লিট এক্সপেরিমেন্ট থেকে প্রমাণিত হয়েছে আমাদের দেহের পার্টিকেলগুলি একইসাথে ওয়েভ এবং পার্টিকেল, তারা একইসাথে এবং একইসময় মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত থাকতে পারে, তাদের মাঝে যুক্তিতর্কের অতীত একটি সম্পর্ক বিদ্যমান, অতএব ঈশ্বরের মতোই আমরা আমাদের কাছে নিজেরাই যুক্তির অতীত অসাম্ভ্যতার মধ্যে বাস করি, আমরা কোনো হায়ার ডায়মেনশনাল  বাস্তবতার সাথেই সম্পৃক্ত।মহাবিশ্ব সত্যিকার অর্থেই আল্টিমেট বোয়িং ৭৪৭!



যাইহোক, কোয়ান্টাম ফিজিক্সের উইগনার ফ্রেন্ডস থিওরি বিশ্লেষণের ভেতর দিয়ে আমরা ঈশ্বরের অস্তিত্বের অসম্ভাব্যতার একটি চিত্র অংকন করবো কিন্তু তার আগে কিছুক্ষণের জন্যে আমরা আবার অবিশ্বাসের ফিলসফি আলোচনা করবো।এমন একটি গ্যালাক্টিক সোসাইটির কথা চিন্তা করুন যারা কোনোপ্রকার সন্দেহ ছাড়া সবকিছু বিশ্বাস করে নেয়।তাদের মনে কোনো অবিশ্বাস নেই, কখনো এক মাইক্রোসেকেন্ডের জন্যেও তারা তাদের মনে কোনোপ্রকার অবিশ্বাসকে স্থান দেয়নি, কী হবে সে গ্যালাক্টিক সম্প্রদায়টির সাথে?অন্যকোনো গ্রহ থেকে যদি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটি  আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্ট সেন্ড করা হয় তাদের কাছে এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্টটি যদি প্রতারণামূলকভাবে তাদের বলে আর মাত্র তিনদিনের মাঝেই তাদের গ্রহটি ধবংস হয়ে যাবে তবে অবশ্যই এ মিথ্যা তথ্যটি সেই সম্প্রদায়টি বিশ্বাস করে নেবে কারণ এদের মস্তিষ্কের কজাল অপারেটিং সিষ্টেম যুক্তিসংগতভাবে কোনো একটি তথ্যকে বিশ্লেষণ করে তার সত্য মিথ্যা নির্ণয় করতে পোগ্রামড নয়, সরল বিশ্বাসই এদের নীতি।এবং এ সরল বিশ্বাসী সম্প্রদায়টিকে যদি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্ট প্লানেটারি সুইসাইড করতে পরামর্শ দেয় তথা একযোগে সবাইকে যদি সহয উপায়ে মৃত্যুবরণ করার মেডিক্যাল পরামর্শ প্রদান করে তবে নিশ্চই তারা কোনোপ্রকার শব্দ ছাড়াই রোবটটির প্রস্তাব গ্রহণ করে নেবে!আর এতে করে খুব সহযেই একটি সম্প্রদায় গ্যালাক্সি থেকে চিরতরে নিশিহ্ন হয়ে যেতে পারে!এজন্যে বিবর্তন মানুষের মস্তিষ্কে বিশ্বাসের বিপরীতে অবিশ্বাসকেও সংরক্ষণ করেছে, কারণ মানুষের মস্তিষ্কের সফটওয়ারগুলি পুরোপুরিভাবে এবসলিউট বাস্তবতাকে ক্যালকুলেট করতে পারেনা আর তাই সুনিশ্চিত করে মহাবিশ্ব এবং জীবনকে এবসলিউট যথার্থতার সাথে তারা  পরিমাপ করতে  পারেবেনা, যার জন্যে মানুষের জীবনে অনিশ্চয়তার উপদ্রব থেকেই যাবে, আর অনিশ্চিত একটি জীবনকে সুনিশ্চিত কোনো তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বাস করলে মানব সভ্যতার ধবংস অনিবার্য।ঠিক একই এনালোজিটি সত্য এবং মিথ্যার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।সত্য এবং মিথ্যা দুটোই ইনফরমেশন।কোনোকিছু থ্রিডি রিয়েলিটিতে যখন সময়ের স্থায়িত্বে বাস্তবতা অর্জন করে তখন আমরা সেই ঘটনাকে সত্য বলি, আর মিথ্যা হলো সে সকল ইনফরমেশন যা থ্রিডিস্পেসে ঘটেনি কিন্তু সম্ভাবনা থেকে আনুমানিক

ভাবে বাস্তব বলে ধরে নেয়া হয়েছে।মনে করুন, একটি গ্যালাক্সিতে এমন একটি সম্প্রদায় আছে যার নাম সত্যবাদী সম্প্রদায়।তাদের মনে মিথ্যার কোনো অস্তিত্বই নেই।তারা মিথ্যা কী সেটা জানেই না। এমন এক সোসাইটিতে কোনো একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্ট যদি মানুষের ভূগোল ধারণ করে প্রবেশ করে এবং বলে, আমি ঈশ্বরের গ্যালাক্টিক দূত।এবং  আমার মস্তিষ্কে ঈশ্বর ইলেক্ট্রিক্যাল সিগনাল সেন্ড করে, তোমরা শুনে রাখো যে, ঈশ্বর এক আর আমিই তার প্রেরিত সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি!তবে সেই সত্যবাদী সম্প্রদায় এই জলজ্যন্ত মিথ্যাকে খুব সহযেই সত্য বলে গ্রহণ করে নেবে, এবং সাইকোলজিক্যালি  সেই মিথ্যাবাদী আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্টটির ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক চিন্তার দাসে রুপান্তরিত হবে!এতে করে সেই সম্প্রদায়ের নিকট থেকে আপনি মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আদায় করে নিতে পারবেন কারণ আপনি যাই বলুন না কেনো তারা সেটাকে অস্বীকার করবেনা!অতএব অসীম সত্যবাদী একটি সমাজব্যাবস্থ্যা মানসিকভাবে অসুস্থ্য এবং ঠিক একইভাবে প্রতিটি সম্প্রদায়ের আলাদা আলাদা প্রতিটি ঈশ্বর এবং ফিলসফির



প্রতি অসীম বিশ্বাসও অসুস্থ্যতা!





বলা হয়ে থাকে, স্বর্গ অখন্ড এবং নিরবিচ্ছিন্ন এক সুখের স্থান সেখানে কোনো দুখ্য নেই।যদি পৃথিবীতে এমন একটি স্বর্গ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রস্তুত করে পরীক্ষা করে দেখা সম্ভব হয় যে, স্বর্গ আসলে কতটা কার্যকরী তাহলে সম্ভবত ঈশ্বর অসন্তুষ্ঠ হবেন না!এমন একটি শহরের কথা ইমাজিন করুন যে শহরের প্রতিটি মানুষকে কেমিক্যাল রি-একশনের মাধ্যমে সুখে রাখা হয়, নাইট্রাস অক্সাইড দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে দেয়া হয়।হলোগ্রাফিক এয়ারফোন দিয়ে নারীদের মস্তিষ্কে  ভার্চুয়াল সেক্স ফিলিংস ক্রিয়েট করা হয় এবং অবিচ্ছিন্নভাবে।কল্পনা করুন, স্বর্গের এমন একজন মৃত্যুহীন নারীকে যার মস্তিষ্কের নিউরোলজিক্যাল ফাংশন এমনভাবে এস্টাবলিসড করা হয়েছে যে সে সবসময় সেক্সের চুড়ান্ত মাত্রা অনুভব করে।শত শত বছর ধরে একজন নারী অবিচ্ছিন্নভাবে শীৎকার করে যাচ্ছে –ফাক মি!তার পিতাকে তার সামনে কেটে টুকরো টুকরো করে দেয়া হলো কিন্তু তার কন্ঠস্বর থেকে নিঃসৃত হচ্ছে- ফাক মি!সে ড্রিংক্স করতে করতে শীৎকার করে, সে শাওয়ার নিতে গিয়েও শীৎকার করে!একজন অসীম সুখী মানুষ কী আসলেই সুস্থ্য?প্রশ্ন থেকে যায়!





একটি সম্প্রদায়ের মানুষ যদি কোনোপ্রকার সন্দেহ ছাড়াই যেকোনো ইনফরমেশনকে বিশ্বাস বা অবিশ্বাস করে তবে সে সমাজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।মনে করুন,একজন পাইলটের বা  স্পেসারের মস্তিষ্কে সন্দেহ কাজ করেনা, তার মস্তিষ্কের কজাল অপারেটিং সিষ্টেম ডি-একটিভেট হয়ে গেছে!পৃথিবী থেকে তাকে বারবার তার নভোযানের ডিরেকশন চেঞ্জ করার জন্যে সিগনাল প্রেরণ করা হচ্ছে কিন্তু সে ডিরেকশন চেঞ্জ করছেনা কারণ তার বিশ্বাস তার নভোযান সঠিক ডিরেকশনেই আছে, আর এ সন্দেহহীনতার কারণেই নভোযানটি ক্রাশ হতে পারে।ঠিক একইভাবে যদি বহুবছর ধরে কোনো নভোযানে পৃথিবী থেকে  সিগনাল না আসার পরেও  তারা সন্দেহাতীতভাবে  এটাকে স্বাভাবিক অবস্থায় মেনে নেয় তবে তারা কখনোই বুঝতে পারবেনা তারা এমন কোনো আন্তঃনাক্ষত্রিক শূন্যস্থানে হারিয়ে গেছে যেখান থেকে হয়তোবা কখনোই তাদের পক্ষে আর পৃথিবীতে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়!



বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস এ শব্দ দুটি আপেক্ষিক বাস্তবতার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।আজ থেকে পনের বিলিয়ন বছর পূর্বে মহাবিশ্বের স্পেস-টাইম বিগব্যাং পয়েন্টে ছিলো কিন্তু এখন নেই।ছিলো এবং নেই এর মাঝখানে কাজ করছে সময়, পনের বিলিয়ন বছর সময়।থাকা এবং না থাকাকে তৈরি করতে স্পেস এন্ড টাইমের প্রয়োজন হয়।আমি এখন পৃথিবীতে আছি কিন্তু মহাবিশ্বের অন্য কোনো গ্রহ নক্ষত্রে নেই।এখানে স্থান বা স্পেসই আমার থাকা এবং না থাকাকে ডিফাইন করছে।

জায়গাই বলে দিচ্ছে আমি কোন জায়গায় আছি আর কোনো জায়গায় নেই।ঠিক একইভাবে একটা সময় আমি ডি এন এ ছিলাম কিন্তু এখন আমি মানুষ,  পঁচিশ বছর বয়সী একজন তরুণ।পঁচিশ বছর পূর্বে আমি ডি এন এ ছিলাম কিন্তু পঁচিশ বছর পর আমি আর শুধুই ক্ষুদ্র একটি ডি এন এ হয়ে নেই। এখানে ‘’থাকা’’ আর ‘’না থাকার’’ ক্রিয়েটর টাইম।সময় নিজেই বলে দিচ্ছে আমি কোন সময় কোন অবস্থায় ‘’আছি’’ এবং কখন কোন অবস্থায় ‘’নেই।মহাবিশ্বের বিবর্তনীয় প্রকৃয়ার এক একটি অবস্থাকে ডিফাইন করার জন্যেই মূলত সময় ‘’থাকা’’ এবং ‘’না থাকা’’ নামক আপেক্ষিক অবস্থাগুলি তৈরি করছে।আমি বিশ্বাস করিনা যে এখন আমি শুধুই একটি পিটাস।হ্যা!আমি একসময় পিটাস ছিলাম কিন্তু এখন তো নেই! ধার্মিকরা বলে ঈশ্বর আছেন এবং তার অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে নিতে হয়ঈশ্বর যদি স্পেস-টাইম ফ্রেমওয়ার্কের অতীত হয় তবে তার উপর থাকা বা না থাকার শর্ত আরোপ করা যায়না আর যে বিবর্তনের

নির্দিষ্ট সিকোয়েন্সগুলির মাঝে সীমাবদ্ধ নয় তার প্রতি বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস দুটোই ভিত্তিহীন।

                                           

 লিখেছেন- রিসাস                            

 (তথ্যসুত্র- গুগল এনসাইক্লোপিডিয়া, গড ডিলুশন, কোয়ান্টাম গড[ জন লুকি] , ব্লাইন্ড ওয়াচমেকার, হাউ দ্যা বাইন্ড ওয়ার্ক, বায়োলজি অব বিলিফ,গড ভাইরাস, ভাইরাস অব দ্যা মাইন্ড,বিশ্বাসের ভাইরাস) 






Comments

Popular posts from this blog

হিগস ফিল্ড ফিবোনিশি,গোল্ডেন রেশিও সাপেক্ষে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনার একটি পরিসংখ্যান!, লিখেছেন- রিসাস, পার্ট-১০

I am Planck

টাইম প্যারাডক্স এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বের অসম্ভাব্যতা!, লিখেছেন-রিসাস, পার্ট- ২১