ন্যাচরাল সিলেকশন কিভাবে নৈতিকতা এবং ঈশ্বরের উদ্ভব ঘটিয়েছে?, লিখেছেন-রিসাস, পার্ট-২৫


Can Evolution Explain Morality?: Religion, science and the desire ...                                    

ক্ষুদা, ভয় এবং যৌন তাড়না সবকিছুকে প্রাকৃতিক বিবর্তন খুব ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে।প্রকৃতির সর্বত্র টিকে থাকার সংগ্রাম।প্রতিটি জিনই সেলফিস, তারা প্রকৃতিতে নিজেদের ডি এন এ কেই কপিপেস্ট করছে, প্রতিটি জিন তার নিজস্ব ইনফরমেশনকেই প্রকৃতিতে টিকিয়ে রাখার যুদ্ধ করছে।হ্যা!আমরা মেনে নিলাম ভালোবাসা ঐশ্বরিক বা স্বর্গীয় কিছু নয়, এটি আমাদের মস্তিষ্কের একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া যাকে উদ্দিপিত করে কিছু রাসায়নিক পদার্থ।ভালোবাসা হলো বংশবিস্তারের একটি ম্যাকানিজম যা আসলে পরোক্ষভাবে নিজেদের জিনকে ক্লোন করারই একটি ব্লাইন্ড ট্যাকনোলজি।কিন্তু সহানুভূতির ব্যাখ্যা কী হবে?কেনো আমরা মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল? কেনো একজন অসহায় উলঙ্গ কঙ্কালসার বৃদ্ধকে দেখে আমরা ব্যাথিত হয়ে উঠি?কেনো তার জন্য আমাদের মনে সহানুভূতির জন্ম হয়? যাকে কখনো দেখিনি, যার সাথে জীবনে কখনো কোনদিন দেখা হয়নি,  কেনো তার জন্য আমরা ব্যাথিত হয়ে উঠি? যখন কোনো একটি দেশের মানুষ বন্যা অথবা ভুমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন কেনো আমরা সেখানে ছুটে যাই, এমনকি নিজেদের জীবন ও সম্পত্তিকেও কখনো কখনো জলাঞ্জলি দিয়ে দেই? এদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কেনো ত্রিশ লক্ষ মানুষ তাদের জীবন ডেডিকেট করেছিলো।যদি এভুলিউশন সেলফিস হয়, যদি শুধু প্রজাতি সংরক্ষণটাই তার উদ্দেশ্য হয় যদি প্রতিটি জিনকোডের মাঝে নিজেকে ক্লোনিং করার ম্যাকানিজমটাই সক্রিয় থাকে তবে কেনো তারা পরের জন্য, পরের স্বার্থে নিজের জেনেটিক্যাল কোডটাকেই ডেস্ট্রোয় করে দেয়?অতএব বিবর্তন সবকিছু এক্সপ্লেইন করতে পারেনা, আমরা এভুলিউশনের মাধ্যমে সহানুভূতির কোনো ব্যাখ্যা পাইনা।অ্যালটুইজম বা পরার্থবাদীতা সম্ভবত এমন কোনো ঈশ্বরের ইঙ্গিত দেয় যিনি মহাবিশ্বের সকল কিছুর মাঝে উপস্থিত আছেন, আর অ্যালটুইস্টিক মাইন্ড সেই ইউনিটিরই একটি প্রকাশ, দ্যা সেন্স অব কসমিক্যাল ইউনিটি বা কসমিক্যাল ইন্টার-কানেক্টিভিটি!





আমরা এখন জানবো, অ্যালটুইস্টিক মাইন্ডের ডারউইনীয় ব্যাখ্যা। একটু খেয়াল করলেই আমরা বুঝতে পারবো যে,  জিন গুলি সাধারণত অন্য জিন থেকে নিজেকে শ্রেষ্ঠতর করে তোলে নিজেদের জিন বহনকারী অর্গানিজমদের স্বার্থপর করে তোলার মাধ্যমে।এক একটি পরিস্থিতিতে  এ ম্যাকানিজমটি এক একভাবে কাজ করে।তথা জেনেটিক্যাল দিক থেকে যে সকল অর্গানিজমের সাথে তাদের সিমিলারিটি আছে সে সকল অর্গানিজম যাতে নিজেদের ইনফরমেশনে প্রকৃতিতে বিপুলভাবে ক্লোন করতে পারে, সে ক্রমধারাকে অব্যাহত রাখার জন্যেই তারা নিস্বাঃর্থভাবে একটি নির্দিষ্ট জেনেটিক্যাল সম্প্রদায়ের জন্য লড়াই করে যায়, তাদের সেলফিশনেসই তাদের নিজস্ব জেনেটিক্যাল সম্প্রদায়ের ইনফরমেশন পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখার জন্য সহানুভূতি,দয়া, মায়া, ভালোবাসা এবং ত্যাগের চুড়ান্ত দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করে!মৌমাছি,পিপড়া, ওয়াম্প,টারমাইট এবং কিছু মেরুদন্ডী প্রাণী যেমন-মীরকাটস এবং অ্যাকর্ণ উডপোকারা এমন একটি সমাজের বিবর্তন ঘটিয়েছে যেখানে বড় ভাই এবং বোনেরা ছোটদের স্নেহ করে এবং তাদের ভরণ-পোশনের দায়িত্ব পালন করে!ডি হ্যামিলটন দেখিয়েছেন, প্রাণীদের মধ্যে প্রবণতা রয়েছে

তাদের জিনগত কীনদের দেখাশুনা করা, বিপদ থেকে প্রতিরক্ষা করা এবং সম্পদ ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা।স্পষ্টত এটি লক্ষনীয় তাদের মাঝে,  যারা জিনগতভাবে একই কপি বহন করে!





বিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স, তার গ্রাউন্ড ব্রেকিং বুক  গড ডিলুশনে লিখেছিলেন, প্রকৃতিতে পরার্থবাদীতার আরো একটি মাত্রা আছে আর সেটিকে বলা হয় রেসিপ্রকাল অ্যালটুইজম।এর মিনিং অনেকটা নিউটনের তৃতীয় সুত্রের মতো, টু এব্রি একশন দেয়ার ইজ ইকুয়াল এন্ড অপজিট রি-একশন।তুমি আমাকে

ফ্রি-ল্যান্সিং এর কাজ শিখিয়ে দাও আমি তোমার অফিসের ডাটা এন্ট্রির করে দেবো। জীববিজ্ঞানী রবার্ট ট্রিভার্স সর্বপ্রথম এ ধারণাটি উপস্থাপন করেন।এ তত্বটিকে প্রকাশ করা হয় গেম থিওরির গাণিতিক ভাষায়, যেখানে দেখানো হয়েছে,

শুধু মাত্র একই ইনফরমেশন বহনকারী কীনদেরকে নয়, রেসিপ্রকাল , সম্পূর্ণ ভিন্ন জেনেটিক্যাল কোডের অর্গানিজমের সাথেও সহযোগীতার সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে, যাকে জীববিজ্ঞানে সিমবায়োসিস বা মিথজীবিতা বলা হয়একই নিয়ম মানুষের পারস্পরিক লেনদেন এবং ব্যাবসা বাণিজ্যের প্রসারের জন্যেও প্রযোজ্য;

মৌমাছির প্রয়োজন মধু আর ফুলের প্রয়োজন পরাগায়ন, ফুল যেহেতু মৌমাছির মতো উড়তে পারেনা তাই সে নেকটার দিয়ে মৌমাছির অর্থমূল্য পরিশোধ করে, চাহিদার অসাম্য থেকেই বাণিজ্যের চুক্তি রচনা হয়।হানিগাইড নামক পাখি মোছাক খুঁজে বের করতে পারে কারণ মৌছাক কোথায় সেটা তারা জানে , আবার হানি ব্যাজার মৌছাক ভাঙতে পারে কিন্তু পাখিদের মতো তাদের ডানা নেই যে তারা মৌছাক খুঁজে বের করতে পারে।হানি গাইডাররা রাটেলদের মধুর উৎসের দিকে নিয়ে যায় [ কখনো কখনো মানুষকেও]  উড়ার একটি প্রলুব্দকর কৌশল ব্যাবহার করে, এই কৌশলটি তারা শুধুমাত্র এ বিশেষ ক্ষেত্রটিতেই ব্যাবহার করে থাকে।উভয়পক্ষই এই আদান প্রদানের মাধ্যমে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়।ষাড়,অক্সপেকার, লাল টিউব্যুলার ফুল, হামিংবার্ড, গ্রুপার এবং ক্লিনার ওয়ারাসেস, গরু এবং তাদের পেটের অনুজীবরা পারস্পরিক পরহিতকারী অথবা পরার্থবাদী সম্পর্ক কাজ করে কারণ তাদের নিজেদের প্রয়োজন এবং এককভাবে সেই প্রয়োজন মেটানোর ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা এবং ক্ষমতায় অসামঞ্জস্যতা কাজ করে!এ কারণে এ সম্পর্কটি শক্তিশালী হয় সেসকল প্রজাতির মাঝে যাদের উভয়ের প্রয়োজনীয়তা পূরণের ক্ষেত্রে দক্ষতা এবং ক্ষমতার অসমতা অনেক বেশি!ভ্যাম্পায়ার ব্যাটরা শিখে নেয় তাদের গ্রুফের সদস্যদের মধ্যে কার উপর অত্যধিক নির্ভর করা যায়,

কারা তাদের সাথে প্রতারণা করবে আর কারা ঋণ শোধ করবে, প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে যারা দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে উদাসীন এবং যারা সুবিধা গ্রহণ করে কিন্তু কাউকে সুবিধা দেয়না তাদের সাথে তারা সম্পর্ক রাখেনা বরং অন্য কারো সাথে সম্পর্ক উন্নত করে, প্রকৃতিতে প্রতারকদের জন্য শাস্তির ব্যাবস্থা রাখা আছে, যেনো তারা একে অপরের বিশ্বস্ত হয়ে উঠে এবং নিজেদের প্রজন্মকে বিস্তার করতে পারে!



পারস্পরিক আদান প্রদানের এ বিশ্বে ডারউইনের অ্যালটুইজম নির্ভর করছে দুটি শক্তিশালী স্তম্বের উপর।একটি জেনেটিক্যাল অ্যালটুইজম এবং অন্যটি রেসিপ্রকাল এলটুইজম।এ দুটি স্তম্ভের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে, বিশেষ করে মানুষের সমাজে যেখানে শব্দের মাধ্যমে মানুষ তথ্য আদান প্রদান করে, যেখানে আছে গল্পগুজবের বিস্তার, যেখানে পারস্পরিক কথোকপথন ব্যাপক সেখানে সুনাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।মানব সমাজে এমন মানুষ আছে যারা তাদের মহান হৃদয়ের জন্যে বিখ্যাত, আবার এমন অনেকে আছেন যারা প্রতারণার জন্যে কুখ্যাত, হয়তোবা কারো রয়েছে বিশ্বাসযোগ্যতার জন্যে সুখ্যাতি।মনে করুন, ইউনিভার্সিটি এডমিশন নেয়ার পরপরই আপনি জানতে পারলেন একজন লেকচারার আছেন, যিনি যথেষ্ঠ স্মার্ট, শিক্ষার্থীদের প্রতি সহনশীল এবং তিনি তাদের অন্তরকে পড়তে পারেন এবং নিরপেক্ষভাবে সবকিছু জানা এবং বুঝার চেষ্টা করেন , আপনি আরো জানতে পারলেন যে তিনি ছাত্রদের মনের একজন ভালো সফটওয়ার ইঞ্জিনার, তার ক্লাসে আপনি শুধু এটেন্ড করবেন আর কিছুই করতে হবেনা আপনাকে, আপনার উন্নতি এমনি এমনিই হবে বা সাব-কনসাসলি আপনি আপডেট হতে থাকবেন।আবার অন্যদিকে আরো অনেক শিক্ষক আছেন যারা প্রচন্ড ইন্টেলেকচুয়াল এবং খুব যত্নের সাথে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন কিন্তু তারপরেও পারস্পরিক আদান-প্রদান একে অন্যের সাথে অব্যাহত থাকলেও সুখ্যাতির জন্যে সেই বিশেষ শিক্ষকটি শিক্ষার্থীর কাছে একটি বিবর্তনীয় উপযোগ পাবে!শুধু রেসিপ্রকাল বা পারস্পরিক আদান প্রদানের দায়বদ্ধতা নয়, অনেক ক্ষেত্রে সুখ্যাতি কোনো একটি প্রজাতিকে টিকে থাকার ক্ষেত্রে একটি বড় মাপের সম্ভাবনা প্রস্তুত করে দেয়!ম্যাট রিডলি তার ‘’অরিজিন অব ভার্চু’’ নামক গ্রন্থটিতে ডারউইনীয় নৈতিকতার চমৎকার ব্যাখ্যা ছাড়াও, আলোচনা করেছেন, সুনাম এবং দূর্ণামের বিষয়টি;



রেপুটেশন বা খ্যাতির বিষয়টি শুধুমাত্র মানব সভ্যতার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়, ক্ষুদ্র ক্লিনার ফিশ যারা বড় মাছদের দাঁত পরিস্কার করে দেয় এবং সেই আবর্জনাগুলিই তাদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে যা তাদের মধ্যে একটি মিথজীবী সম্পর্ক তৈরি করে।কিন্তু এই মিথজীবী সম্পর্ক বড় মাছেরা তাদের সাথেই ডেভেলপ করতে আগ্রহী যারা মনোযোগের সাথে কাজ করে এবং কর্মের সময় কোনোপ্রকার অবহেলা করেনা, কর্মের প্রতারণার অভিযোগে যারা একবার অভিযুক্ত হয়েছে তাদের সাথে রেসিপ্রকাল সম্পর্ক তৈরি হয়না, যার কারণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সুখ্যতি একটি ফ্যাক্টর।অতএব যদি ক্লিনার ফিশগুলি সমাজে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে চায় তবে অবশ্যই তাদের নিজেদের মাঝে নৈতিক গুণাবলি তথা দায়িত্ব এবং কর্তব্যবোধের প্রতি সচেতনতা উন্নত করতে হবে যার অনপুস্থিতে তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়ে যাবে!একজন ব্যাক্তি যিনি মহানুভতা এবং দয়াশীলতার জন্যে বিখ্যাত তিনি অবশ্যই সমাজের মানুষের নিকট সুখ্যাতি অর্জন করবে যা তাকে সমাজে গ্রহণযোগ্য করে তুলবে, যে গ্রহণযোগ্যতা তার প্রজন্মকে শত শত বছর ধরে প্রকৃতিতে অব্যাহত রাখবে!আর তাই অবশ্যই ক্লিন ফিশদের মতো মানুষও নিজেদেরকে সমাজে  নিস্বাঃর্থপর, দায়িত্ব এবং কর্তব্যের প্রতি সচেতন একজন ব্যাক্তি হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করবে কারণ যদি তারা বিশ্বাস হারায় তবে এতে করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অতএব টিকে থাকার স্বার্থপর প্রবণতাই একজন সাধারণ মানুষকে মহানুভব করে তুলতে পারে, মাদার তেরাসা অথবা মার্টিন লুথার কিং।এভাবে পৃথিবীতে যারা মহামানব অথবা মহাপুরুষ বলে পরিচিত হয়েছেন, প্রত্যেকে সমাজের মানুষের মনস্তত্বের সাথে নিজেদের চিন্তাচেতনাকে রিজোন্যাট করেছেন, যেনো মানুষ তাদের প্রতি বিশ্বস্ত হয়ে উঠতে পারে, আর যখন কোনো একজন ব্যাক্তি সোশ্যাল মাইন্ডের সাথে এটিউন হয়ে উঠেছেন, ব্লাইন্ড এভুলিউশন যাকে সময়ের সাথে টিউনিং এ আসতে ফোর্স করেছে, তিনি এবং তার আদর্শই এখনো পৃথিবীতে সারভাইভ করছে!  



নরওয়ের অর্থনীতিবিদ থরস্টেইন ব্যাভলেন এবং খানিকটা ভিন্নভাবে ইসরায়েলীর প্রাণীবিজ্ঞানী  অমোৎজাহাবী আর একটি চমৎকার ধারণা এর সাথে যুক্ত করেছিলেন।পরহিতকর কাজ অথবা অপরের কল্যাণে কোনো কিছু দান করা হতে পারে সমাজে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্যে একটি বিজ্ঞাপন।নৃতত্ত্বে যাকে বলা হয় পটল্যাচ ইফেক্ট।উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসী নানান গোত্রের গোত্র প্রধানরা দ্বন্ধরত অবস্থায়, নিজেদের মাঝে দ্বন্ধে অবতীর্ণ হয় এতটা উদারতার সাথে বিরাট ভোজসভা আয়জনের মাধ্যমে যা তাদের অস্তিত্বকে ধবংস করে দেয়ার জন্যে যথেষ্ঠ, এবং অনেক ক্ষেত্রে পালটা আক্রমণ হিসেবে বিপরীত পক্ষ থেকে ভোজসভা আয়জন করা হয়, এটি ঠিক ততদিন পর্যন্ত চলতে থাকে যতদিন না দুই উদারপন্থী পক্ষের একটি পক্ষ সম্পূর্ণভাবে সর্বশান্ত হয়ে যায়।জাহাভীর গবেষণার বিষয়বস্তু ছিলো অ্যারাবিয়ান ব্যাবলার যারা সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করে এবং পারস্পরিক সহযোগীতা এবং সমবায়ের মাধ্যমে প্রজনন, বংশবিস্তার এবং প্রজন্ম লালন পালন করে।অন্য অনেক ছোট পাখির মতো ব্যাবলরাও শিকারী পাখির উপস্থিতি চিৎকার করে অন্যদের সতর্ক করে দেয়, যাতে তারা পালাতে সক্ষম হয়ে উঠে, এমনকি তারা অপর সঙ্গীদের খাবার সংগ্রহ করে দেয়, এ পাখিদের মধ্যে অন্যদের দেখেশুনা,  নিরাপত্তা, বংশরক্ষার জন্যে নিস্বারঃর্থভাবে কাজ করে যেতে দেখা যায়, এক কথায় এরা সেবাধর্মী পাখি।কিন্তু প্রশ্ন হলো কেনো তারা এ কাজটি করছে, এখানেও কী রেসিপ্রকাল ‘’ল’ কাজ করছে?অথবা জেনেটিক্যাল কীনদের প্রতি সহমর্মীতা?এক্ষেত্রে জাহাভীর ব্যাখ্যাটি ছিলো সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত তার মতে, তারা সেবাধর্মের মাধ্যমে মূলত সমাজে তাদের অধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করে অথবা সোশ্যাল লিডার হতে চায়।কারণ জাহাভি দেখেছিলেন, যখন দলের সাধারণ কোনো পাখি নেতৃত্বস্থানীয় কোনো পাখিকে খাবার পরিবেশন করতে আসেন তারা সেটাকে অত্যন্ত হিংস্রতার সাথে প্রত্যাখ্যান করেন, ব্যাবলদের মধ্যে সক্রিয়ভাবে প্রতিযোগীতা তৈরি হয় কে ভয়ানক বাজপাখির হাত থেকে দলকে সুরক্ষা করার জন্যে গাছের চূড়ায় স্পর্শকাতর পাহারাদারের দায়ত্বটি পালন করবে!নিজেকে মহান এবং কল্যাণকর একজন সমাজ সেবক প্রমাণ করার জন্যে অনেক সময় তারা নিজেদের জীবন পর্যন্ত হুমকির মুখে ফেলে দেয়।জাহাভীর মতে তারা আসলে প্রমাণ করার চেষ্টা করে , দেখো, আমি তোমাদের চেয়ে কতটা শ্রেষ্ঠ, আমি তোমাদের আহার দিতে পারি, তোমাদের সুরক্ষা করতে পারি, আমি একমাত্র যে তোমদের মাঝে শ্রেষ্ঠতর!আর এতে করে সে প্রজননঙ্গীকে আকর্ষণ করতে পারে, শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের ব্যায়বহুল প্রদর্শনীর মাধ্যমে!





তার মানে এখন আমাদের দয়াশীলতা, দানশীলতা এবং নৈতিকতা ব্যাখ্যায় অত্যন্ত  জোরালো চারটি ডারউনীয় কারণ আছে যার মাধ্যমে আমরা পরার্থবাদীতা বা এলটুইস্টিক মাইন্ডকে এক্সপ্লেইন করতে পারি।একটি হলো জেনেটিক্যাল সিমিলারিটি, দ্বিতীয়টি রেসিপ্রোকাল বা কোনোকিছুর বিনিময়ে অন্যকিছু গ্রহণ করা।তৃতীয়টি হলো, সুনাম অর্জন করে বিশেষ ডারউইনীয় সুবিধা এবং জাহাবীর ধারণা যদি সঠিক হয় তবে, অনুকরণযোগ্য  নয় এমন খাটি বিজ্ঞাপন ক্রয় করা।

( তথ্যসুত্র- গড ডিলুশন,ব্লাইন্ড ওয়াচমেকার, বায়োলজি অব বিলিফ, হাও দ্যা মাইন্ড ওয়ার্ক, সেলফিশ জিন )

Comments

Popular posts from this blog

হিগস ফিল্ড ফিবোনিশি,গোল্ডেন রেশিও সাপেক্ষে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনার একটি পরিসংখ্যান!, লিখেছেন- রিসাস, পার্ট-১০

I am Planck

টাইম প্যারাডক্স এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বের অসম্ভাব্যতা!, লিখেছেন-রিসাস, পার্ট- ২১