ভবিষ্যৎ মহাবিশ্ব কার; ভাইরাস অথবা মানুষের? লিখেছেন- রিসাস, পার্ট-১৪
ঈশ্বরের অস্তিত্বের অসম্ভাব্যতার একটি এলিয়্যানেটিক
থিওরি!
আর এই অজানাকে কিছু কিছু পিপীলিকা ‘’ঈশ্বর’’ নামকরণ
করলো।কালো পিঁপড়াদের মধ্যে তখনও সংখ্যালগিষ্ট একটা অংশ ছিলো যারা নিজেদের কোনোরকমে
যায় যায় অবস্থায়
টিকিয়ে রেখেছিলো।কিন্তু বিশ বছর পর আবার জঙ্গলে একটি
মহাপ্লাবন দেখা দেয়, মৃত্যুর
বন্যা উঠে সেই জঙ্গলটিতে।আকষ্মিক গাছের রঙ কালো হয়ে যায় এবং শিকারিদের চোখে সাদা পিঁপড়েগুলি আবার সুস্পষ্ট হয়ে উঠে।সাদা
পিপড়েগুলি শুধু এতটুকুই বুঝেছে যে মহাবিশ্বের একটা গাণিতিক কনস্ট্যান্ট চেঞ্জ হয়ে
গেছে।কিন্তু কালো পিপড়াগুলি এটাকে ঈশ্বরের অভিশাপ
বলে আখ্যায়িত করেছিলো।বন্ধুগণ! এভুলিউশন এভাবেই কাজ করে!আর
ধর্ম এবং ঈশ্বর এভাবেই সৃষ্টি হয়।
আপনাদের মধ্যে অনেকের ধারণা এলিয়েনদের অস্তিত্ব আছে এবং
তারা আমাদের চেয়ে অনেক বিলিয়ন গুন ইন্টেলেকচুয়াল এবং ইচ্ছে করলেই তারা আমাদের মানব
সভ্যতাকে ধবংস করে দেবে।কিন্তু ডারউইনের বিবর্তনীয় সুত্র অনুসারে এটি কখনোই সম্ভব নয়, এলিয়েনরা
আমাদের কখনোই সরাসরি আক্রমণ করবেন না!রিসাস ভার্চুর বিবর্তনীয় নীতি অনুসারে, একটি সভ্যতা
যদি ইন্টেলেকচুয়ালি অনেক শক্তিশালী হয় তবে তারা কখনোই মহাবিশ্বের অন্য কোনো গ্রহের
প্রাণীজগতের উপর হামলা করবেনা।কারণ যখনই কোনো একটি ভাইরাস অথবা ব্যাক্টেরিয়া আমাদের
আক্রমণ করে তখন আমরা তার অস্তিত্বকে মাইক্রোস্কোপিক্যালি জেনে যাই এবং প্রতিষেধক
আবিষ্কার করি।একটি মশাকে আমরা কখনোই জানার চেষ্টা করিনা যদি না সেই মশাটি আমাদের
শরীরে আক্রমণ করে।যখনই নতুন কোনো ভাইরাস আমাদের দেহে জন্ম হয় তখনই সে ভাইরাসটি
আমাদের গবেষণার অংশ হয়ে যায় তাকে বিজ্ঞানীদের ল্যাবরেটরিতে প্রবেশ করতে হয়। আমরা
কন্ট্রোল করতে পারি বা না পারি তাকে নিয়ে আমাদের ব্রেন রিসার্চ করতে থাকে,তাকে ক্রমস জা্নতে থাকে, বুঝতে
থাকে, তাদের চিন্তার নতুন একটি ডায়মেনশন খুলে যায়।ঠিক
এ জন্যেই কোনো ইন্টেলেকচুয়ালিটি কখনোই প্রত্যাশা করবেনা তারা মানব সভ্যতাকে আক্রমণ
করুক।কারণ তারা আমাদের আক্রমণ করার মানেই হলো তাদের অস্তিত্ব আমাদের মহামান্য
বিজ্ঞানীদের মস্তিষ্কে প্রকাশিত হয়ে যাওয়া,
আমাদের গবেষণার অংশ হয়ে যাওয়া,আর
যখন কোন একটি ইন্টেলেকচুয়ালিটির সুত্র মানুষ জেনে যাবে তখন তারা সুপার কম্পিউটার
এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ব্যাবহার করে তাদেরকে আরো বিস্তারিতভাবে জেনে ফেলবে।
আর কোনো ইন্টেলেকচুয়ালিটি এত বড় মাপের ভুল প্রদক্ষেপ কখনোই
গ্রহণ করবেনা।আপনি বলতে পারেন,
তাদের নিকট তো আমরা ভাইরাস অথবা ব্যাক্টেরিয়া থেকেও তুচ্ছ আমাদেরকে প্রতিষেধক
টিকা দিয়েও তো হত্যা করা সম্ভব যেমনটা আমরা করে থাকি,মশা,মাছি আর
ব্যাক্টেরিয়ার সাথে।কিন্তু আপনারা এটাও জানেন ক্যান্সার কোষ অথবা করোনা নিজেই একটা
ভাইরাস।এত ক্ষুদ্র একটা ভাইরাস যদি আপনার দেহে ক্যান্সার তৈরি করে তবে আমাদের মতো
এত ক্ষুদ্র মানব সভ্যতা যে সেই সকল
ইন্টেলেকচুয়ালিটির দেহ বা মনের ক্যান্সার কোষে পরিণত হবেনা তার নিশ্চয়তা কি?আমরা কি এখনো
মশা কে পুরোপুরিভাবে নির্মুল করতে পেরেছি?আমরা
এত ইন্টেলেকচুয়াল!বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে আমরা এতটাই উন্নত!তার তুলনায় ঐ ডেঙ্গু মশা
তো কিছুই না!করোনা তো কিছুই না! তার মানে উন্নত প্রযুক্তি আর উন্নত বুদ্ধিমত্তা
দিয়েও একটি সভ্যতাকে পুরোপুরিভাবে ধবংস করে দেয়া সম্ভব নয়!একটা এক্সাম্পল দেই!আমরা
জানি প্রতি বছর মানুষের শরীরে একই এন্টি ভাইরাস কাজ করেনা,ঠিক যেমনি
ভাবে একটি কম্পিউটারে!কারণ ডারউইনের
এভুলিউশনাল থিওরি অনুসারে,
প্রকৃতিতে একটি লিমিটিং ফ্যাক্টর আছে।প্রকৃতিতে প্রতি বছর একই এন্টি-ভাইরাস
কাজ করেনা কারণ আমরা যখন এন্টি-ভাইরাস দ্বারা ভাইরাসদেরকে আক্রমণ করি,
তখন প্রকারন্তরে ভাইরাসদের মস্তিষ্কে এন্টি-ভাইরাসের
বায়ো-কেমিক্যাল জানা হয়ে যায়,এটি তাদের
দেহ এবং জেনেটিক্যাল কোডের গবেষণার বিষয়বস্তু হয়ে যায় এবং এদের মধ্যে কারো কারো জেনেটিক্যাল মাইন্ড সেই
ভাইরাসটির বিপক্ষে বায়োকেমিক্যালি জেনেটিক্যাল প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলে, আর তখন
কোনোভাবেই প্রাচীন এন্টি-ভাইরাস দিয়ে সেই ভাইরাসটিকে কন্ট্রোল করা সম্ভব
হবেনা।যেমন-আধুনিক ডেঙ্গুমশাদের বিপক্ষে কোনো প্রতিষেধক নেই। কারণ মশার কয়েল এবং
অন্যান্য রাসয়নিক পদার্থের সাথে নিজেদের এডজাস্ট করে এই ক্ষুদ্র মশা গুলি এখন মানব
সভ্যতার ধবংসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে!ঠিক যেমনি করোনা!হায়ার ইন্টেলেকচুয়ালিটি তাদের
কোনোকিছুই করতে পারছেনা!হয়তো একটা সময় তারা সক্ষম হয়ে উঠবে!
ঠিক এই কারণেই এলিয়েনরা যদি সত্যিকারে ইন্টেলেকচুয়াল হয়
তারা আমাদের কখনোই আক্রমণ করবেনা।তারা আমাদের দেহ এবং মনের কম্পিউটিং ক্ষমতা থেকে
যথা সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করবে।আর যদি তারা মানব সভ্যতাকে পুরোপুরিভাবে ধবংস
করেও দেয়ার চেষ্টা করে তবুও ডারউইনের সুত্র অনুসারে কিছুকিছু মানুষ ডেঙ্গু,প্লেগ
অথবা করোনা ভাইরাসের মতো সুপারন্যাচারাল শক্তিতে রুপান্তরিত হবে, সেই আপাত
সুপারন্যাচরাল শক্তিকে তাদের পক্ষে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবেনা, কারণ এরা
কোনো প্রতিষেধক তৈরি করার সময় দেবেনা!তাই অবশ্যই কোনো হায়ার ইন্টিলিজেন্ট এটা
প্রত্যাশা করবেনা আমরা তাকে কোনো না কোনো ভাবে জেনে যাই,জঙ্গলের সেই
পিঁপড়ের মতো কখনো যদি মানব সভ্যতার একটি অংশ বিলুপ্ত হয়ে যায়, তখন মানব
সভ্যতা সেটাকে মহাবিশ্বের একটি কনস্ট্যান্টের পরিবর্তন মনে করবে,তারা মনে
করবে যে কম্পিউটারের মতোই তাদের দেহে একটি ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে।কিন্তু তারা
পোগ্রাম গুলির অস্বাভাবিক আচরণের সত্যিকার রিজন জানতে পারবেনা।যদি কখনো মানব
সভ্যতা পুরোপুরিভাবে এটাকে ভাইরাসের সংক্রমণ মনে করতে থাকে, তবে তাদের
মনে এলিয়েনদের নিয়ে কোনো চিন্তাই থাকবেনা।এখন হলো এমন একটি সময় যখন আমরা সবকিছুকে
ন্যাচরাল এবং ফিজিক্সের সাধারণ সুত্র মনে করি।আর মানব সভ্যতার এই বিভ্রম এলিয়েনরা
কখনোই ভাঙার চেষ্টা করবেনা,কারণ
এতে করে তাদের অস্তিত্ব বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।সুপার ইন্টেলেকচুয়াল
কোনো এলিয়েন যদি বিবর্তনীয় নীতি অনুসারেই মানব সভ্যতার নিকট তার নিজের অস্তিত্ব
প্রকাশ না করে তবে ঈশ্বরের পক্ষে কখনোই মহাবিশ্বের প্রধান ইন্টেলেকচুয়ালিটি হওয়া
সম্ভব নয় কারণ সেই হাইপার ইন্টেলেকচুয়াল ঈশ্বর মহাবিশ্বের কারো মস্তিষ্কে নিজের
অস্তিত্বকে প্রকাশ করবেনা, আর যদি সে মানুষের মস্তিষ্কে তার অস্তিত্বের
ইনফরমেশন প্রকাশ করেও দেয় তবে তা তার
ইন্টেলেকচুয়ালিটিকে প্রশ্নবিদ্ব করে বা তাকে প্রকারন্তরে একজন মূর্খ হিসেবেই মানব
সমাজে প্রতিষ্ঠা করে।আর যদি ঈশ্বর প্রকৃতার্থেই ইন্টেলেকচুয়াল হয় তবে ঈশ্বর
সম্পর্কে মানুষের মস্তিষ্কের সকল ধারণাই মিথ্যা।এমনকি মানুষের মস্তিষ্কে ঈশ্বর
নামক অনুভূতিটাও সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা।অতএব ভার্চুর বিবর্তনীয় নীতি অনুসারে- ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই।
তথ্যসুত্র- মেটা ভার্সিক থট( দ্বিতীয় খন্ড)
Comments
Post a Comment