মৃত্যু পরবর্তী জীবন কেনো অসম্ভব? লিখেছেন- রিসাস, পার্ট-১৮
আমাদের মস্তিষ্কের
বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেম মহাবিশ্বকে বৈপরিত্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সিমপ্লিফাই
করে।যা আমরা অতীতের অধ্যায় গুলিতে আলোচনা করেছি।যেমন অতীতের বিপরীতে
ভবিষ্যত,উত্তরের বিপরীতে দক্ষিণ অথবা উপরের বিপরীতে নিচে।নিউরোলজিস্টরা মনে করেন,
একটি মস্তিষ্কের বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেম যদি ডি-একটিভেট হয়ে যায় তবে তার পক্ষে
ফিজিক্যাল মহাবিশ্বের ডিরেকশন নির্ধারণ করা সম্ভব হয়না,একটি রোবটের মস্তিষ্কের
বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেম ডি-একটিভ হয়ে গেলে তার মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রিক্যাল ফিল্ড
জিরো-ওয়ান, অফ-অন ইত্যাদি বাইনারী রিলেশনশিপগুলির মধ্যে কম্পারিজন করতে পারবেনা
এবং সময় এবং দিকের ইনফরমেশন তার মেমরি থেকে হারিয়ে যাবে।একটি শিশু
ডান-বাম,উত্তর-দক্ষিণ অথবা বিফোর এবং আফটারের সাথে কম্পারিজন তৈরি করতে পারেনা,
তার মস্তিষ্কের বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেম বৃহৎ মাত্রায় ডি-একটিভ থাকে।অতীতের বিপরীতে
একটি রোবট ভবিষ্যতকে এ জন্যেই ইমাজিন করতে পারে কারণ তার মস্তিষ্কে একটি বাইনারী
অপারেটিং সিষ্টেম এস্টাবলিসড করা হয়েছে।মৃত্যু যদি একটি মস্তিষ্কের নিউরোলজিক্যাল
ফাংশনকেই ডি-একটিভ করে দেয় অথবা স্বয়ং ব্রেনই যদি তার কার্যকারীতা হারিয়ে ফেলে তবে
সেই মৃত মস্তিষ্কে কোনো বাইনারী
অপারেটিং সিষ্টেম একটিভ থাকার কথা নয়, আর যার মস্তিষ্কের বাইনারী অপারেটিং
সিষ্টেমই ডি-একটিভেটেট তার বিফোর বা আফটারের কোনো ফিলিংস নেই।সে জানতে পারেনা
কোনটি ইহকাল অথবা কোনটি পরকাল!ইহকাল এবং পরকালের মধ্যকার কম্পারিজন একটি জীবিত মস্তিষ্কের বাইনারী
অপারেটিং সিষ্টেমের তৈরি।মৃত্যুর পর মানুষের দেহে প্রাণ থাকেনা, এবং তার
মস্তিষ্কের বাইনারী সফটওয়্যার কার্যকারীতা হারিয়ে ফেলে, তার মস্তিষ্ক অতীত এবং
ভবিষ্যতের বৈপরিত্য তৈরি করতে পারেনা, যার মস্তিষ্কে অতীত এবং ভবিষ্যতের কোনো
তারতম্যই নেই, মৃত্যুর পর তার পক্ষে কিভাবে পরকালে প্রবেশ করা সম্ভব?
পরকালের অস্তিত্ব
বর্তমানে অস্তিত্বশীল একটি মানুষের মস্তিষ্কের বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেমের একটি
টাইম সিমপ্লিফিকেশন, যে রোবটটির মস্তিষ্কের বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেম ডি-একটিভ তার
কোনো অতীত বা ভবিষ্যতের ফিলিংস নেই।বিজ্ঞানীদের মতে- মানুষের মস্তিষ্কের বাইনারী
অপারেটিং সিষ্টেমের একটি বিশেষ অংশ আছে যা প্রাকৃতিকভাবেই ডি-একটিভ।মস্তিষ্কের সেই
অংশটি স্পেস এবং টাইম ডায়মেনশনে রিয়েলিটিকে ‘’লোকেট’’ করতে পারেনা।অনেকটা ব্লারি
প্রবাবিলিস্টিক সিচুয়েশন বা অনির্ণেয় মাত্রার সম্ভাবনাময় অবস্থা।বাইনারী অপারেটিং
সিষ্টেমের এ ডি একটিভ অংশটি এমন একটি রিয়েলিটিকে রিপ্রেজেন্ট করে যে রিয়েলিটি
স্পেস এন্ড টাইম মেট্রিক্সকে অতিক্রম করে আছে,যাকে বাইনারী লজিকগেট এবং
থ্রি-ডায়মেনশনাল ইমাজিনেশন দ্বারা লিমিটেড করা ইম্পসিবল, এতএব সেখানে কাজ করছে
মেটা ডায়মেনশনাল ইউনিভার্স।মস্তিষ্কের বাইনারী অপারেটিং সিষ্টেমের এ অংশে কি ঘটার সম্ভাবনা আছে তা থ্রি ডায়মেনশনাল ‘’ল’’ অব ফিজিক্স দ্বারা এক্সপ্লেইন করা সম্ভব
নয়, বা এটি লজিক্যাল হোলস্কয়ারের অতীত কিছুকে রিপ্রেজেন্ট করছে!বিজ্ঞানী উগনার
বলেছিলেন- মানুষের মস্তিষ্ক পুরোপুরিভাবে ক্লাসিক্যাল ফিজিক্সের ‘’সুত্র’’ মেনে
চলেনা!
আমরা জানি যেকোনো
আধুনিক কম্পিউটারের মতো মানুষের মস্তিষ্কের নিউরন সেল হয়তোবা অফ বিটে থাকে অথবা অন
বিটে, হয়তোবা সে জিরো তে থাকে অথবা ওয়ানে কিন্তু একইসাথে এবং একইসময় দুটি বিটে
নয়।একইসাথে এবং একইসময় কোনো বস্তুর পক্ষেই অতীত এবং ভবিষ্যতে একসাথে থাকা সম্ভব নয়
অথবা থাকা সম্ভব নয় ভিন্ন দুটি লোকেশনে অথবা প্যারালাল মহাবিশ্বে।ক্লাসিক্যাল
ফিজিক্স অনুসারে, কোনো পার্টিকেলই একই সময়ে গ্যালাক্সির দুটি গ্রহে একসাথে ভ্রমণ
করতে পারেনা।কিন্তু ডাবল স্লিট এক্সপেরিমেন্টের প্রমাণিত হয় একটি পার্টিকেল একই
সময় এবং একই সাথে দুটি স্লিটের ভেতর দিয়ে ভ্রমণ করতে পারে, বা সম্ভাব্য সকল পথেই
একটি পার্টিকেলের পক্ষে ট্রাভেল করা সম্ভব।ডাবল স্লিট এক্সপেরিমেন্ট
অনুসারে একটি পার্টিকেল একইসাথে এবং একইসময় ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন জগতের ভেতর দিয়ে
একইসময় বাউন্স করে।কোয়ান্টাম ফিজিক্সে, এই ঘটনাটিকে বলা হয় সুপারপজিশন।আমাদের
মস্তিষ্কের প্রচলিত যুক্তি এবং ইমাজিনেশন অনুসারে সুপারপজিশনে একটি পার্টিকেল
একসাথে সম্ভাব্য সকল পথেই রেসিং করতে পারবে , থিওরিটিক্যালি মেটা ইউনিভার্সে
কিন্তু এমন কোনো পথে নয় যে পথে রেসিং করার কোনো উপায় বা সম্ভাবনাই নেই বা সম্ভাবনা
এবসলিউটলি ‘’জিরো’’।
এখন মনে করুন আপনি
একটি ইলেক্ট্রনকে একটি স্পোটে তৈরি করলেন এবং সেটিকে সুট করলেন এবং ইলেক্ট্রনটি
ডিটেক্টর স্কিনে হিট করলো।এটাকে বলা হয় রুট A।এবং সেই পথ
বরাবর আপনি একটি সিরিজ অব মিরর রাখলেন যারা কিছু ইলেক্ট্রনকে বাউন্স করে যেনো তারা
ডিটেক্টরে হিট করতে তুলনামূলক অধিক দূরত্ব বিশিষ্ট্য রুট তৈরি করবে।যেটিকে বলা হয়
রুট B।
বিজ্ঞানীরা একটি
নির্দিষ্ট সময় একটি ইলেক্ট্রনকেই ফায়ার করে সেটি স্লিটের কোন পথ দিয়ে ভ্রমণ করে তা
পরিমাপ করার জন্যে।এ এক্সপেরিমেন্টে কি ঘটেছিলো তা বুঝানোর জন্যে ক্ষুদ্র একটা
উদাহরণ দেই।মনে করুন, ১. আপনার কিচেনে
একটি অথবা তার অধিক বেড়াল আছে, ২. অথবা কোনো বেড়াল নেই, ৩. অথবা বেড়ালের
অর্ধেক আছে [যদি বেড়ালটির শরীরের একটি অংশ দরজার বাহিরে এবং অন্য অংশটি কিচেনের
ভেতরে হয়।] এছাড়া কিচেনে অন্য কোনোভাবে বেড়ালের অস্তিত্বের আর কোনো সম্ভাবনাই
নেই।আমাদের মস্তিষ্কের যুক্তিতে অন্তত আর কোনো সম্ভাবনার অস্তিত্ব কাজ করছেনা!
অসম্ভাব্যতার সুত্র
অনুসারে হয়তোবা মানুষের মস্তিষ্ক সকলপ্রকার বোধগম্য সম্ভাবনাকে অতিক্রম করে
মৃত্যুর পরেও যুক্তিতর্কের অতীত, এবং অকল্পনীয় কোনো সুপারপজিশনাল সিচুয়েশনে ভিন্ন
কোনো জগতের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে কিন্তু সেটিকে পরকাল বলাটা কতটা যুক্তিসংগত
হবে অন্তত তা আমার জানা নেই।এবং কোয়ান্টাম ফিজিক্সের এ থিওরি গুলি এখনো কমপ্লিট
নয়।অসম্পূর্ণতার উপর ভিত্তি করে আমরা চিন্তার ম্যাকানিজম তৈরি করতে পারি কিন্ত তা
হয়তো প্রকৃত বাস্তবতাকে স্পর্শ করবেনা।কিন্তু রিচার্ড ডকিন্সের ভাষায়- আমাদের মানব
সভ্যতার বিবর্তন ঘটেছে মিডল ক্লাসের একটি থ্রি-ডায়মেনশনাল মহাবিশ্বে মুভ করার
জন্যে, কোয়ান্টাম ফিজিক্সের অতি-পরমাণবিকস্তরে হিউম্যান ইনটুইশন কাজ করেনা ঠিক
একইভাবে বৃহৎ মহাবিশ্বের সর্বোচ্চ সীমায়ও হিউম্যান ইনট্যুইশন কাজ করেনা।আমাদের
মস্তিষ্কের সেই অতি-পরমাণবিক সীমার নাম প্লাঙ্ক লিমিট।আমরা এখনো মৃত্যু পরবর্তী
জীবনের অস্তিত্ব, চেতনা ভিত্তিক মহাবিশ্বের মডেল স্বয়ং সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করতে
পারিনি যদিও রোজার পেনরোজের মতো কিছু বিজ্ঞানী মানব চেতনার উপর বিশদভাবে কাজ
করছেন।কিন্তু আমাদের নাস্তিক্যবাদী মস্তিষ্কে সংশয় থেকে যাবে।কারণ আমরা সম্ভাবনাকে
অস্বীকার করিনা!মৃত্যু পরবর্তী জীবনের অস্তিত্ব যদি থেকেও থাকে তবে তা সাম্প্রতিক
উপস্থিত একজন পর্যবেক্ষকের পর্যবেক্ষণের উপরই নির্ভরশীল।পর্যবেক্ষকের ইন্টারেকশনকে
অস্বীকার করে সময়ের এলগোরিদম প্রস্তুত করা যায়না।পর্যবেক্ষক যখন পর্যবেক্ষণ করে
ঠিক তখনই একটি পার্টিকেল তার সুপারপজিশনাল মেটা ভার্সিক পসিবিলিটিকে কলাপস করে
পর্যবেক্ষকের মস্তিষ্কে রিজোন্যাট হয়।এবং তা অবশ্যই স্পিড অব লাইট থেকে দ্রুত
গতিতে নয়।সূর্য থেকে আমাদের চোখের রেটিনায় আলো আসতে আট মিনিট আঠার সেকেন্ড সময়
প্রয়োজন হয় তার মানে আমরা পর্যবেক্ষণ করার পর পরই রেট্রো-কজালিটি অনুসারে সূর্য আট
মিনিট আঠার সেকেন্ড অতীতে অস্তিত্বশীল হয়ে উঠে।মেটা ভার্সিক ওয়েভ ফাংশন থেকে একটি
পার্টিকেল পর্যবেক্ষকের পর্যবেক্ষণে যখন একটি মহাবিশ্বের রিজোন্যেট হয় তখনো সে সাথেই সা্থেই একটি অতীত কাল তৈরি করে।পর্যবেক্ষকের মস্তিষ্ক
যে মহাবিশ্বেই রিজোন্যেট হোক সে মহাবিশ্বটি পর্যবেক্ষকের চেতনার অতীত।তার
মানে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিটেশন যা পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিকেই
পার্টিকেলদের ওয়েভ ফাংশন কলাফসের কারণ হিসেবে দেখে থাকে; আমরা কোপেনহেগেন
ইন্টারপ্রিটেশন থেকে দেখতে পারি পর্যবেক্ষকের চেতনাই অসীম মেটা বিশ্বে বর্তমান! যার
চোখে পাস্ট এবং ফিউচার কোনকিছুরই অস্তিত্ব নেই, অতএব অস্তিত্ব নেই মৃত্যু পরবর্তী
কোন জীবনের।
তথ্যসুত্র- কোয়ান্টাম গড, বায়োলজি অব বিলিফ, ভার্চুয়াল ব্যাংস্পেস, মেটা ভার্সিক থট
যতই পড়ি, ততই আরও মুগ্ধ হই, বিস্মিত হই। লিখনি চলুকএইভাবে। এই রকম তথ্য রিড করতে করতেই একদিন আমার মত মুর্খ, অজ্ঞানী এবং জীবন ও জগৎ এর সত্য উপলব্ধি সম্পর্কে উদাসীন ব্যক্তিগন সত্যের সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করতে অথবা নিজ অবয়বে সত্য কে আলিঙ্গন করতে সাহস পাবে।
ReplyDeleteভক্তি জানাই আপনার নিরপেক্ষ অন্তর, দৃষ্টিভঙ্গি, উপলব্ধি ও গবেষণার ।। 😍😍😍😍